Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভূমিকম্পে ঢাকা শহরের ৬৫ ভাগের বেশি ক্ষতি হবে

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভূমিকম্প, নগরের ঝুঁকি ও পরিণতি বিষয়ক আলোচনায় প্রফেসর এ কে এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা শহরের ৩৫ ভাগ মাটি লাল। ভূমিকম্প হলে এই মাটির ওপর তৈরি ভবনের ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। আর বাকি ৬৫ ভাগ মাটি নরম।
ভূমিকম্প হলে নরম মাটির ওপর কম্পনের স্থায়িত্ব বেশি হবে এবং ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হবে। এছাড়াও ঢাকা শহর বড় ধরনের ভূমিকম্পের কবলে পড়লে ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে যত মানুষ মারা যাবে, তার কয়েক গুণ মারা যাবে আগুনে পুড়ে ও বিদ্যুৎস্পুষ্ট হয়ে। গতকাল (সোমবার) রাজধানীর গুলশানের স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে ‘ভূমিকম্প মোকাবিলা : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ সব কথা বলেছেন। এই কর্মশালার আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক অ্যানহ্যান্স প্রোপ্রাম (সিপ)।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পের পর গ্যাসের লাইনের পাইপে বিস্ফোরণ ঘটবে আর সেই আগুনে পুরো নগর দাউ দাউ করে জ্বলবে। ভূগর্ভস্থ পানি ও আশপাশের নদী-জলাশয়ের পানিতে নগরে বন্যার সৃষ্টি হবে। উপড়ে পড়া বিদ্যুতের খুঁটির তারের সংস্পর্শে এসে পানিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হবে। সেই পানিতে পড়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাবে মানুষ।
মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে তাতে আধঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করা গেলে ৯০ শতাংশ মানুষকে বাঁচানো যাবে। উদ্ধারকাজ শুরু করতে একদিন লাগলে ৮১ শতাংশ, দুদিন লাগলে ৩৬ শতাংশ এবং তিনদিন লাগলে ৩৩ শতাংশ মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। উদ্ধারকাজ শুরু করতে যত বেশি বিলম্ব হবে মৃতের সংখ্যা তত বেশি বাড়বে।
ভূমিকম্প হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করণীয় সম্পর্কে মাকসুদ কামাল বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধের ব্যবস্থা থাকতে হবে। একই সঙ্গে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকার উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক বলেন, ভূমিকম্প হবে, তা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু এটা সত্য যে কোনো সময় হয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আনিসুল হক ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০ সদস্য নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানান। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে তিনি প্রতিটি বিদ্যালয় ও কলেজে সেমিনার আয়োজনের অনুরোধ জানান এবং সেই সেমিনারে তিনি নিজেও উপস্থিত থাকবেন বলে জানান।
মেয়র বলেন, ঢাকার দুই সিটি ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ৭৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি কেনা হবে দুই বছরের মধ্যে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক মেজর শাকিল নেওয়াজ বলেন, নেপালের বাসাবাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার হওয়ার কারণে ক্ষয়ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। ঢাকায় যে পরিমাণ গ্যাসের পাইপ লাইন ও রাসায়নিকের মজুদ আছে, তাতে শহরজুড়ে আগুন জ্বলবে। নগরে বন্যার সৃষ্টি হবে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মানুষ মারা যাবে। শহর অন্ধকারে ডুবে যাবে।
শাকিল নেওয়াজ আরও বলেন, ভূমিকম্পে মানুষ মারে না। মানুষ মরে মানুষের তৈরি অব্যবস্থাপনার কারণে। ভূমিকম্পের বিপর্যয় মোকাবিলায় বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরি করতে হবে। ঢাকার ৭৬ শতাংশ সড়ক সরু। এগুলো প্রশস্ত করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভূমিকম্পে ঢাকা শহরের ৬৫ ভাগের বেশি ক্ষতি হবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ