পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য ২৫ কোম্পানিকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী এক মাসের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হলে এই ২৫ কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ বিষয়ে সোমবার কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠির অনুলিপি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও দেয়া হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আজিজ পাইপস, ফু-ওয়াং ফুডস, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা স্পিনার্স, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম), আলহাজ্জ টেক্সটাইল মিলস, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইডস, কাট্টালি টেক্সটাইল, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফাইন ফুডস, অগ্নি সিস্টেমস এবং অ্যাডভান্ট ফার্মা।
কোম্পানিগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একাধিক আলোচনা, বৈঠক ও সতর্কতার পরে এটি এখনও প্রতীয়মান হচ্ছে, ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী আপনার কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক এখনও সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেননি। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মাসিক শেয়ার ধারণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে আপনার কোম্পানি ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা পরিপালন করেনি।
আরও বলা হয়, এ পরিস্থিতিতে আপনার কোম্পানিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২১ মে বিএসইসির জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায়, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি। এর আগে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর কমিশন সভা করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ব্যর্থ হবেন, সেই কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি।
ওই কমিশন সভা শেষে বিএসইসির মুখপাত্র জানান, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ব্যর্থ হবেন, ওই কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা কমিশন সভায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, কোম্পানির বিদ্যমান উদ্যোক্তা পরিচালক এবং প্রস্তাবিত পরিচালকদের সাব রুল (২) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের রুল ৪ (প্রভিশন অব ইনসাইডার ট্রেডিং), ১৯৯৫ মতে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। আইনের এই ধারা অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাইতে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ৬০ কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দেয় বিএসইসি।
এই ৬০ কার্যদিবসের গোণনা শুরু হয় ২৯ জুলাই থেকে। আর ৬০ কার্যদিবস শেষ হয় ওই বছরের ২৭ অক্টোবর। তবে এ সময় শেষ হওয়ার আগেই কয়েকটি কোম্পানি সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে এক মাস সময় বাড়ানো হয়। যা শেষ হয় ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। এদিকে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বরে দুই শতাংশের কম শেয়ার ধারন করায় ৯ কোম্পানির ১৭ পরিচালকের পদ শূন্য ঘোষণা করে বিএসইসি। শূন্য ঘোষণা করা ১৭ পরিচালকের পদ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্টে কোম্পানিকে পূরণ করতে বলা হয়। ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন শেয়ারহোল্ডারদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
পরিচালক পদ হারানোর মধ্যে সব থেকে বেশি রয়েছেন মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সে। কোম্পানিটির পাঁচজন পরিচালক পদ হারিয়েছেন। এরা হলেন- আজিজ মাহমুদ ইরশাদ উল্লাহ, ফাতেমা ইসলাম সোনীয়া, আজাদ মোস্তফা, শফিকুর আহমেদ এবং সাদ কাদির বিন সোলাইমান। ইটকেট লিমিটেড থেকে পদ হারিয়েছেন তিনজন পরিচালক। এরা হলেন- এটিএম মাহবুবুল আলম, সাদিকা মাহাবুব ও মো. আনিসুজ্জামান। দু’জন পরিচালক পদ হারিয়েছেন প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স থেকে। এরা হলেন- বদলুর রহমান খান এবং হাবিব ই আলম চৌধুরী।
মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকেও দু’জন পরিচালক পদ হারিয়েছেন। এই দুই পরিচালক হলেন- শামিমা নাসরিন এবং দিলরুবা শারমিন।
এছাড়া বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের হোসেল হুমায়ন, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের পাবলিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পাইওনিয়ার ড্রেসেস, ইমাম বাটনের লোকমান চৌধুরী, পূরবী জেনারেলের মো. ইকবাল এবং ইউনাইটেড এয়ারের শাহিনুর আলম পরিচালক পদ হারিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।