পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : বিচারিক সেবার মান উন্নয়ন, বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে নতুন করে একটি আদালত ভবন ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। আদালত ভবনটি হবে ২০ তলা। এতে থাকবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এছাড়াও ২০ তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবনও নির্মিত হবে। সেখানে থাকবে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ সব কর্মকর্তাদের অফিস, লিগ্যাল এইড অফিস, মেডিকেল সেন্টার, পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা নামাজের ব্যবস্থা, আধুনিক ডে-কেয়ার সেন্টার। বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বার্হী কমিটিতে (একনেকে) আছে। সেখানে অনুমোদন হলে শুরু হবে ওই দুইটি ভবনের নির্মাণ কাজ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিচার বিভাগকে আধুনিকায়নের জন্য মহাপরিকল্পনা নেন। তার ফলশ্রুতিতে এসব কাজ হচ্ছে। আশা করছি এ বছর শেষ দিকে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে একনেকের অনুমোদনের উপর। তিনি আরো বলেন, এতে করে বিচারিক সেবার মান উন্নয়ন এবং বিচার প্রার্থীরা ভোগান্তি অনেকাংশে কমবে। এদিকে নতুন আদালত ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা। তাদের মতে, এমন উদ্যোগে বিচারপ্রার্থীদের সেবা বাড়বে তেমনি বিচারকার্য গতিশীল হবে।
সুপ্রিমকোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মামলার সংখ্যা। যদিও প্রতিদিন কম বেশি নিষ্পত্তিও হচ্ছে। তবে সেটা তুলনামূলক কম। ফলে বছর শেষে বাড়ছে মামলার সংখ্যা। কোন কোন সময় নথি পেতে বিচারপ্রার্থীরা অনেক বেগ পেতে হয়। এতে করে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তিও বাড়ছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি রয়েছেন ৯৭ জন। তবে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ভবিষ্যতে আরও নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া দরকার। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী চেম্বার ও এজলাস না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা যায়।
এছাড়াও সুপ্রিমকোর্টের প্রশাসনিক কাজের জন্য মূল ভবনের নীচ তলা এবং দ্বিতীয় তলার ছাদে কয়েকটি কক্ষ রয়েছে। এর বাইরে সড়ক ভবন থেকে প্রাপ্ত তিনটি ভবনে বিক্ষিপ্তভাবে চলছে বিভিন্ন শাখার কার্যক্রম। মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে স্থান সংকুলান না হওয়ায় প্রতিটি শাখায় বিপুলসংখ্যক নথি কক্ষের মেঝেতে স্তূপাকারে রাখা হয়েছে। এতে একদিকে নথি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং দ্রুত খুঁঁজে বের করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এসব কারণে প্রশাসনিক কাজও স্থবির হবার উপক্রম হচ্ছে। পূর্বেও সুপ্রিমকোর্ট জায়গা স্থান সংকট দূর করার জন্য (সড়ক ভবন) নেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। তারপরেও সংকুলান হচ্ছে না। বেড়েই চলছে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যের পরিধি। সেই অনুপাতে বাড়েনি বিচারক বা অবকাঠোমোগত উন্নয়ন। এসব সমাধানে এবং আইনজীবী সমিতির ভবন নির্মাণে দাবি জানিয়ে আসছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব নেয়ার পর বিচারবিভাগ আধুনিকায়নসহ নানা সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেন। তার পরামর্শে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন চলতি বছর নতুন আদালত ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণের আইন মন্ত্রণালয়ের বরাবর চিঠি পাঠান। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন করে তা পাঠানো হয় গণপূর্ত অধিদপ্তরে। সেখান থেকে তা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। আর একনেকে অনুমোদন হলেই শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
জানা যায়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্তমান বার কাউন্সিলের পাশের খালি জায়গায় নির্মাণ করা হবে নতুন আদালত ভবন। ২০ তলা বিশিষ্ট ১২ তলা এ ভবনের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৯ কোটি ২৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আর ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে ২০১৯ সালের জুন মাসে। সেখানে ৪২টি কোর্ট থাকবে বলে জানা যায়। ২০তলা এ ভবনটিতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয় থাকবে, কনফারেন্স হল। নতুন এ প্রশাসনিক ভবনটিতে থাকবে একটি পূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরি। বিভিন্ন প্রকার প্রশিক্ষণের জন্য থাকবে একটি ট্রেনিং ইউনিট। থাকবে গবেষণাগার। শরীর চর্চা ও চিত্ত বিনোদনের জন্য আলাদা কক্ষ। থাকবে সার্ভার রুম ও সুইমিং পুল। এছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে আধুনিক এ ভবনটিতে। এটি হবে ওয়াইফাই সংযুক্ত আধুনিক ভবন। যেটি প্রশাসনিক ভবন নামেই পরিচিতি পাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, স্থান সংকুলানের অভাবে বিচারকরা সমন্বয় করে কোর্টে বসছেন। এতে করে বিচার কাজ এক ধরনের বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে মামলা জট বাড়ছে। বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তিও বাড়ছে। এসব সমাধানে সরকারের উচিত নতুন আদালত ভবন নির্মাণ করা। নতুন ভবন নির্মিত হলে কোর্ট বিচারপতির সংখ্যাও বাড়বে। মামলা নিষ্পত্তি বেশি হবে বিচারপ্রার্থীদের সেবাও বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন হওয়া দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।