পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ভারত থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত লবণ আমদানিতে কেজিপ্রতি খরচ পড়ছে পাঁচ টাকার কম। কিন্তু সেই লবণই পরিশোধন করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা দরে। দাম কমাতে লবণ আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও তার সুফল পাচ্ছে না সাধারণ ক্রেতারা।
তবে লবণের বাজারে এমন কারসাজিতে নারায়ণগঞ্জের সিন্ডিকেটই জড়িত বলে লবণ ব্যবসায়ীরা জানান। এক্ষেত্রে পুবালী সল্টের পরিতোষ এবং মোল্লা সল্টের খবির মোল্লা গংদের দায়ী করছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আমদানি করা লবণের দাম পরিশোধনের পর কোনোভাবেই কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে পুবালী সল্টের মালিক পরিতোষ কান্তি সাহা বলেন, ১ হাজার ২০০ টন লবণ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৮০০ টন তার কারখানায় পৌঁছেছে, যা দিয়ে অল্প কয়েক দিন কারখানা চালু রাখা যাবে।
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে আমরা লবণের দাম কেজিতে চার টাকা কমিয়েছিলাম। কিন্তু বাইরে থেকে ১৬ থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে অপরিশোধিত লবণ কিনে পরিশোধন করে এ দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’
দাম না কমানোর কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিগুলো বলছে, যে পরিমাণ লবণ আমদানির অনুমতি মিলেছে, তা দিয়ে কয়েক দিনের বেশি মিল চালু রাখা সম্ভব নয়। এ জন্য তাদের আমদানি করা অপরিশোধিত লবণ অন্য মিলের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই গুণ দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
গত মাসে দেশের বাজারে পরিশোধিত লবণের দাম সর্বোচ্চ ৪২ টাকা কেজিতে উঠেছিল। গত ঈদুল আজহার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে কোম্পানিগুলো এ দর কেজিতে চার টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়। বাজারে এখন সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে পরিশোধিত মিহি দানার লবণ কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি লবণের দাম ২৮-৪২ টাকা, এক বছর আগের চেয়ে যা প্রায় ৬৩ শতাংশ বেশি।
বাজারে দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার দুই দফায় আড়াই লাখ টন অপরিশোধিত লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। প্রথম দফায় গত আগস্টে ১২১টি মিলকে ৬২০ টন করে ভোজ্য লবণ ও ১২০টি মিলকে ৬২৫ টন করে শিল্পে ব্যবহৃত লবণ এবং পরের দফায় চলতি মাসের শুরুতে ১৪৪টি মিলকে ৬৯৪ টন করে অপরিশোধিত লবণ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়।
আমদানিকারকরা বলেন, ভারত থেকে অপরিশোধিত লবণ আমদানি করে কারখানায় আনতে প্রতি কেজির খরচ পড়েছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ টাকা।
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (বিটিসি) স¤প্রতি একটি ব্যয় বিবরণী ধরে এক কেজি লবণের কাক্সিক্ষত দর কত হওয়া উচিত, তা বের করেছিল। তাতে অপরিশোধিত লবণের কেজি প্রতি দর পাঁচ টাকা ধরে হিসাব করে দেখা যায়, বাজারে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ভ্যাকুয়াম ইভাপোরেশন পদ্ধতিতে পরিশোধিত লবণ ২৬ টাকার বেশি বিক্রি হওয়া উচিত নয়।
আমদানি করা লবণ পরিশোধন করে বাজারে ছেড়েছে কয়েকটি বড় কোম্পানি। তারা লবণ বিক্রি করছে কেজিপ্রতি ৩৮ টাকা দরে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মিলের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অপরিশোধিত লবণের দর কেজিপ্রতি ৫ টাকা হলে ভ্যাকুয়াম ইভাপোরেশন পদ্ধতিতে পরিশোধিত লবণ কেজিপ্রতি ২৫ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু ৫ টাকা কেজিতে পাওয়া গেছে মাত্র ১ হাজার ২০০ টন লবণ, যা মিলের তিন দিনের চাহিদা। বাকিটা ১৫ টাকা কেজি দরে অন্যদের কাছ থেকে কিনতে হয়েছে।
বড় মিলের মালিকেরা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) কাছ থেকে আয়োডিন উত্তোলনের অনুপাত অনুযায়ী লবণ আমদানির অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাদের দাবি, বাজারে না থাকা মিলগুলোকে অনুমতি দেয়া হলে তারা অপরিশোধিত লবণ আমদানি করে বড় মিলের কাছে বিক্রি করে দেয়।
ভারত থেকে যে লবণ আমদানি হয়েছে, তা এখন বস্তাপ্রতি ১ হাজার ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কেজি পড়ে ১৫ টাকার বেশি। এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আলমগীর বলেন, এমন সব মিলকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আসলে তারা বাজারে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।