পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : সরকারি দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে বৃহত্তর চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জৌলুসপূর্ণ ওই সম্মেলনের দিকে নজর এই অঞ্চলের নেতাকর্মী, সমর্থকদের। কাউন্সিলর ডেলিগেটসহ কয়েক হাজার নেতা ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। আজ তারা মিছিল নিয়ে যোগ দেবেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে। দুই দিনের ওই বিশাল আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে কাউন্সিলে কারা কেন্দ্রে ঠাঁই পাচ্ছেন তা নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো টানা দুই মেয়াদে সরকারে থাকা দলটির জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা, মহানগর, উপজেলা থেকে শুরু করে পৌরসভা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও সম্মেলনে শরিক হতে আগ্রহী। তাদের এ উৎসাহের কারণে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে কেন্দ্রের নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে বাড়তি ১৬৪৬ জনসহ প্রায় ২ হাজার প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তবে কেন্দ্র নির্ধারিত মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে ৩৫৪ জন কাউন্সিলর যোগ দিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর ও প্রতিনিধিরা গতকাল দিনে-রাতে ট্রেনে এবং বাসে ঢাকা গেছেন। একই সাথে উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতারাও গতকাল ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম ছাড়েন। বিগত সম্মেলনগুলোর চেয়ে এবারের সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর ও প্রতিনিধি কার্ড বেশি পেয়েছে। এবার কাউন্সিলর কার্ড পেয়েছে ১৩২টি এবং প্রতিনিধি কার্ডও ১৩২টি। এদিকে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ পেয়েছে ১১১টি করে কাউন্সিলর কার্ড এবং ১১১টি করে প্রতিনিধি কার্ড।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর ও প্রতিনিধিরা চট্টগ্রামের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের আনন্দবার্তা নিয়ে যাবে সম্মেলনে। তিনি জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা সবাই কমলাপুর স্টেশনে সমবেত হবে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেবেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সম্মেলনকে ঘিরে দারুণ উজ্জীবিত। এই সম্মেলন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নতুন করে মাঠে নামার শক্তি এবং উৎসাহ যোগাবে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে প্রতিটি উপজেলা থেকে বাসে করে কাউন্সিলর ও প্রতিনিধিরা ঢাকায় যাচ্ছেন। আমরা ট্রেনেরও ৪টি বগি ঠিক করেছি। তবে প্রতিনিধি হবে প্রায় ১০০০।
এদিকে সম্মেলনের পর কাউন্সিলে নতুন কমিটিতে কাক্সিক্ষত পদ পেতে চট্টগ্রামের শীর্ষনেতারাও দৌড়-ঝাঁপে পিছিয়ে নেই। এবার মূল কমিটিসহ উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের পদ পেতে বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশিসংখ্যক তরুণ ও সাবেক ছাত্রনেতা চেষ্টা-তদ্বির চালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই দৌড়ে আছেন প্রবীণ নেতাদের কয়েকজন পুত্রও। চট্টগ্রামের দুই শীর্ষ নেতা তাদের দুই পুত্র নিয়ে কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে অনেকের ধারণা বিগত সময়ের তুলনায় এবারের কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশি পদ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ গঠনতন্ত্র সংশোধন করে পদের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
দলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই অঞ্চল থেকে প্রায় দেড় ডজন নেতা নতুন কমিটিতে স্থান পেতে নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের বেশিরভাগই ঢাকায় অবস্থান করছেন নিয়মিত। সাবেক ছাত্রনেতারা সম্মেলনকে ঘিরে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছেন। সকল কর্মসূচিতে সরব উপস্থিত থেকে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন তারা। নিজেদের দৃশ্যমান করতে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গত কাউন্সিলে এই অঞ্চলের যারা কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে এবার কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। আবার অনেকে আরও ভাল পদে যেতে পারেন। গত কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম সদস্য হন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এবারও এ পদে তিনি থাকছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম আলোচনায় আছে। উপদেষ্টা পরিষদে আছেন সাবেক এমপি ইসহাক মিয়া, ড. অনুপম সেন ও প্রণব বড়ুয়া। এই পদে এবার একাধিক নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। এই পদে আসতে পারেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আবদুল মান্নান।
নতুন করে যারা কেন্দ্রে আসতে পারেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন।
এছাড়া চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষনেতা প্রেসিডিয়াম সদস্য-গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বড় ছেলে মাহবুবুর রহমান ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নামও শোনা যাচ্ছে। দৌড়-ঝাঁপে যারা আছেন তাদের মধ্যে কেউ সম্পাদকীয় পদ, কেউ কার্যকারী সদস্য, কেউ আবার উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদে আসতে পারেন এমনটা ধারণা করা হচ্ছে। এবার চট্টগ্রাম থেকে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক, অপর একজন নেতা দপ্তর সম্পাদক ও বান্দরবান থেকে এক নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক পাওয়ার বিষয়টি বেশ আলোচিত হচ্ছে।
এদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েও এই অঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহের শেষ নেই। বলা হচ্ছে, এবার এ পদে পরিবর্তন হচ্ছে। আলোচনায় আছে ওবায়দুল কাদেরের নাম। এতে খুশি এই অঞ্চলের অনেক নেতা। তাদের মতে তিনি সাধারণ সম্পাদক হলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতাকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ আরও বাড়বে। ওবায়দুল কাদেরকে চট্টগ্রাম এলাকার নেতাকর্মীরা অতি আপনজন মনে করেন। চট্টগ্রামের সাথে তার যোগাযোগও নিবিড়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।