Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গড়িমসি

হজ এজেন্সি’র ১শ’ কোটি টাকা পরিশোধ প্রসঙ্গে

প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আন্তঃমন্ত্রণায় কমিটি গঠনের পাঁয়তারা
শামসুল ইসলাম : বেসরকারি হজ এজেন্সি ও হজযাত্রীদের ফেরতযোগ্য পাওনা প্রায় ১শ’ কোটি টাকা পরিশোধে ধর্ম মন্ত্রণালয় গড়িমসি করছে। এতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর মাঝে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। হজ এজেন্সিগুলোর বিভিন্ন খাতের জমাকৃত কোটি কোটি টাকা ফেরত দিতে শুধু টালবাহানা করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব একাউন্টে জমাকৃত এসব অর্থের মোটা অংকের ইন্টারেস্ট প্রতি মাসে কার পকেটে যাচ্ছে তা’ খতিয়ে দেখা জরুরী হয়ে পড়েছে। বার বার তাগিদ দেয়ার পরেও ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সি ও হজযাত্রীদের পাওনা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ফেরতযোগ্য এসব অর্থ বিলি বন্টনের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি নিয়ে এক কমিটি গঠনের পাঁয়তারা চলছে বলে জানা গেছে। এতে ন্যায্য পাওনা পেতে আরো বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে হজ এজেন্সিগুলোকে। হাবের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। হাব কর্তৃপক্ষ শিগগিরই ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও সচিব মোঃ আব্দুল জলিলকে সর্ম্বধনা দিয়ে ১শ’ কোটি টাকার ফেরতযোগ্য বকেয়া পাওনা আদায়ের কৌশল হাতে নিতে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি হজযাত্রীরা হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন কম্পন্ন করে। হজযাত্রীদের অনুরোধে প্রাক-নিবন্ধনসহ হজ সংক্রান্ত খরচাদি হজ এজেন্সি নির্বাহ করে থাকে। ২০১৬ সালে হজে যেতে ব্যর্থ হজযাত্রীদের অর্থ স্ব-স্ব হজ এজেন্সির নামে ফেরত দেয়ার জন্য হাব কর্তৃপক্ষ আশকোণাস্থ পরিচালক হজকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানায়। পরিচালক হজ বিষয়টি তোয়াক্কা না করে সরাসরি হজযাত্রীদের অনুকূলে ফেরত দিচ্ছে। এতে হজ এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার গত ১৬ অক্টোবর ধর্ম সচিব মোঃ আব্দুল জলিলের কাছে লিখিত আবেদন পেশ করেছেন যে, হজে যেতে ব্যর্থ হজযাত্রীদের জমাকৃত অর্থ জরুরী ভিত্তিতে স্ব-স্ব হজ এজেন্সিতে পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছেন।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের ঘোষিত প্যাকেজ অনুযায়ী হজযাত্রী প্রতি ৫০ সউদী রিয়াল হারে ব্যাংক গ্যারান্টির অর্থ সোনালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের অর্থ ফেরত প্রদানের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও অদ্যাবধি ব্যাংক গ্যারান্টির অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। যে সকল হজযাত্রী ২৫ জিলক্বদ তারিখের পর সউদী আরব যান তাঁদের ৬০ রিয়াল-এর বাস টিকিট অব্যবহৃত থাকে। অতীতে এ অর্থ প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির অনুকূলে ফেরত দেয়া হতো। কিন্ত ২০১২,২০১৩ ও ২০১৪ সালে হজ এজেন্সিগুলো এ অর্থ ফেরত পায়নি। ২০১৫ সালের কিছু এজেন্সি এ খাতের অর্থ ফেরত পেলেও এজেন্সিদের বড় অংশই এ অর্থ ফেরত পায়নি। চলতি বছরের অর্থও অপরিশোধিত রয়েছে। ২০১৪ ও২০১৬ সালের ঘোষিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ১% বাড়ি ভাড়ার টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। গৃহীত অতিরিক্ত ১% বাড়ি ভাড়ার আংশিক ব্যয় হয়েছে। এ খাতের একটি বড় অংকের অর্থ এখনো পরিশোধ করা হয়নি। ২০০৮ সাল হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বেসরকারি হজযাত্রীদের অনকূলে মোয়াল্লেম ফি বাবদ অর্থ সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সি সরকারের নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসেবে জমা দেয়। এ অর্থ জমাদানের পর মৃত্যু, গুরুতর অসুস্থতা, দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য কারণবশতঃ কিছু কিছু হজযাত্রী হজে যেতে ব্যর্থ হয়। তাদের অনুকূলে জমাকৃত অর্থ অতীতে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে ফেরত দেয়া হতো। বিগত ২০০৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত হজযাত্রীদের অব্যবহৃত মোয়াল্লেম ফি আংশিক ফেরত দেয়া হলেও সর্ম্পূণ পরিশোধ করা হয়নি। চলতি বছরের অর্থও অপরিশোধিত রয়েছে। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ ফি বাবদ ৩শ’ টাকা হারে প্রাক-নিবন্ধনের সময় সরকার নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে জমা দেয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে হজযাত্রী প্রতি জমাকৃত ৩শ’ টাকা হারে অপারেটিং হজযাত্রীদের অনুকূলে ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। হাব সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম বাহার ইনকিলাবকে বলেন, ফেরত যোগ্য জমাকৃত প্রায় ১শ’ কোটি টাকা হজ এজেন্সিগুলোকে পরিশোধ করতে সরকার কেন গড়িমসি করছে তা’ বোধগম্য নয়। হাব সভাপতি হজ এজেন্সিগুলোর পাওনাদি যথাসময়ে পরিশোধ না করে সরকার আমাদের সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হজযাত্রীদের ফেরতযোগ্য জমাকৃত অর্থ পরিশোধে কেন আন্তঃমন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত কমিটি গঠন করতে হবে তা’ বোধগম্য নয়। হাব সভাপতি এ ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গড়িমসি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ