পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাওরে নির্মাণ হবে শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক। ব্যয় করবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওরের ওপর দিয়ে ১১ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি ৫ বছরে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে পর্যটন আরও সমৃদ্ধ হবে। হাওর পরিস্থিতি সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে হাওর এলাকায় সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে, কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে সহায়ক হবে। বদলে যাবে হাওরের পল্লী অবকাঠামো সড়ক। আগামী বছর থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
একই সাথে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা এবং নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসবে। এদিকে, বহু আকাক্সিক্ষত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে অভিনন্দন জানিয়ে হাওরাঞ্চলে আনন্দ মিছিল হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ইনকিলাবকে বলেন, হাওরের প্রাণ ও প্রকৃতির রক্ষার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। তিনি আমাদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন প্রাণীবৈচিত্র্য ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে হাওরের কোনো উন্নয়ন হবে না। তার নির্দেশনা মাথায় রেখেই আমরা হাওরের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য উড়াল সড়কের জন্য পৃথক ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চিন্তা করছি। উড়াল সড়কে যানবাহনের শব্দ থেকে হাওরে প্রাণবৈচিত্র্যের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য শব্দ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা-জামালগঞ্জ (ভায়া জয়শ্রী-সুখাইড়-সাচনা বাজার) পর্যন্ত ‘শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক’ প্রকল্পটি গত মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। এটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান, হাওরে নির্মাণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে উড়াল সড়ক হবে। তার জন্য ব্যয় করা হবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। ১১ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে আগামী ৫ বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। কাজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জলভ‚মিকে মূল ভ‚খÐের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড সড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে হাওর অঞ্চলে সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করা সহজ হবে। হাওর-সহিষ্ণু অবকাঠামো উন্নয়নপূর্বক এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যা গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওরের ওপর দিয়ে ১১ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় করবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে পর্যটন আরও সমৃদ্ধ হবে। হাওর পরিস্থিতি সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে হাওর এলাকায় সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে, কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে সহায়ক হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা এবং নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসবে।
প্রকল্পের আওতায় ৯৭ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার অল সিজন উপজেলা সড়ক এবং ২০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন করা হবে। ১৬ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার সাবমার্সিবল উপজেলা সড়ক, ২২ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার সাবমার্সিবল ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়ক, ১০ দশমিক ৮১ কিলোমিটার উড়াল সড়ক উন্নয়ন এবং ৫৭টি ব্রিজ ও ১১৮টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে, যার মোট দৈর্ঘ্য হবে ৫ হাজার ৬৮৮ মিটার। কমিশন জানিয়েছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় গ্রাম, ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন, গ্রোথ সেন্টার ও বাজার উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বিধায় প্রকল্পটি ওই পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে হাওর এলাকায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সারা বছর মালামাল পরিবহন, উৎপাদিত কৃষিপণ্য, মৎস্যসম্পদ ইত্যাদি দ্রæত ও সুলভে পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল হবে। অধিকন্তু, প্রকল্পটি গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখবে।
জানা গেছে, পানিতে তলিয়ে যাবে এমন ১৬ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার উপজেলা ও ২২ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়ক এবং ৫৭টি সেতু ও ১১৮টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রস্তাবিত উড়াল সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রস্তাবিত উড়াল সড়কে যানবাহন চলাচল সম্ভব হবে। প্রতিবছর বর্ষাকালে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হাওর এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে। পর্যটকদের বিস্তীর্ণ হাওরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দিতে উড়াল সড়কের দুই পাশে অন্তত ৬ থেকে ৭টি দ্বিতল টাওয়ার নির্মাণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হাওরের আওতাভুক্ত দুটি জেলার ৫টি উপজেলার জনগণ এর দ্বারা অর্থনৈতিক সুফল পাবে। বদলে যাবে এখানকার সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবেশ। বিষয়টি সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলেই নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
অন্যদিকে প্রকল্পটি অকনেকে অনুমোদনের পর গত মঙ্গলবার বিকেলে হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল হয়েছে। ওই দিন বিকালে ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আনন্দ মিছিল শেষে খাদ্যগুদাম সংলগ্ন মোড়ে বক্তব্য দেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. আব্দুল হাই তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকসি। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা এলজিইডির পক্ষ থেকেও পৃথক আনন্দ র্যালী বের করা হয়। এ সময় স্থানীয়দের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।