পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা বরিশাল : অনেক অপেক্ষা ও জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্মেলনের প্রায় ৪৬ মাস পরে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হল। গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকে সভাপতি এবং কে এম জাহাঙ্গীরকে সম্পাদক করে দীর্ঘদিন স্থবির বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের এ কমিটি অনেক অপেক্ষার অবসান ঘটালেও দলীয় অন্ত:কলহ কতটুকু নিরসন হবে তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। তবে বরিশাল বিভাগীয় সদরের এ মহানগর কমিটি যোগ্যতায় এতদিনের আলোচিত জনদের চেয়ে অনেক ভাল হলেও তারা কতটা দক্ষতার সাথে সে দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়টিও পর্যবেক্ষণে রাখতে চাচ্ছেন মহলটি। এমনকি পরমত-সহিষ্ণুতা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতি তারা কতটুকু সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন সে বিষয়টিও আগামী দিনের জন্য রাখতে চাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল এর আগেও মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দলের অনেক সুসময় ও দুঃসময়ে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাত্র দুদিন আগে বুধবার গভীর রাতে ঢাকায় ঘোষিত বরিশাল মহানগর কমিটিতে ব্যাপক চমক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলকেও কিছুটা হতচকিত করেছে। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রায় ৪ বছর পরে গত ১১ জুন জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। একই দিন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরে দীর্ঘদিন শুধুমাত্র সভাপতি ও সম্পাদক দিয়ে বরিশালে শাসক দলের কিছু পোষাকী কর্মকা- চললেও এখানে দলটির রাজনৈতিক শূন্যতা ছিল পীড়াদায়ক। ২০১২-এর ঐ সম্মেলনে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহকে জেলা কমিটির সভাপতি ও তালুকদার মোঃ ইউনুসকে সম্পাদক করার পাশাপাশি শওকত হোসেন হিরনকে মহানগর সভাপতি ও আফজালুল করিমকে সম্পাদক করা হয়। ‘অতি অল্প সময়ের মধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা ঐসব সম্মেলনে জানান হলেও তাতে পার হয়ে গেছে প্রায় চার বছর। ২০১৪-এর ৯ এপ্রিল শওকত হোসেন হিরন ইন্তেকাল করলে সে পদের ভারও এতদিন বহন করেন নি কেউ। এমনকি হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেসা আফরোজ এতদিন অনেকটা অঘোষিতভাবে মহানগর আওয়ামী লীগের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করলেও তিনি কবে কোথায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন তা বলতে পারছেন না দলের কোন নেতাকর্মী।
তবে সাম্প্রতিককালে কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুখ শামিম ও জেলা সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক হচ্ছেন বলে যথেষ্ট আলোচনা শুরু হলেও সে বিষয়টি বাস্তব রূপ লাভ করল না। এমনকি সদ্য ঘোষিত এ পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ২০১২-এর ২৭ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত সম্পাদক আফজালুল করিমকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। ফলে বরিশালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হিরন যুগের অনেকটাই অবসান ঘটল।
দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কা-ারি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর হাত ধরে ১৯৯৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে শাসক দলে যোগ দিয়ে হিরন ধীরে ধীরে দলের নেতৃত্বে চলে আসেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পরে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও গোলাম আব্বাস চৌধুরী বরিশাল ত্যাগ করলেও শওকত হোসেন হিরন ক্রমে দলের নেতৃত্বে চলে আসেন। এক পর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কও হন তিনি। ২০০৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ৬৭৫ ভোটের ব্যবধানে মেয়র হয়ে হিরন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে শক্তভাবেই গ্রহণ করেন। ২০১২’র ডিসেম্বরে সম্মেলনের মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহানগর সভাপতি নির্বাচিত হলেও পরের বছর সিটি নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন প্রায় ১৮ হাজার ভোটে। কিন্তু এ পরাজয়ের জন্য হিরন সরাসরি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহকেই দায়ী করেন প্রকাশ্য সভায়। এমনকি নগরীতে হাসনাতের বিরুদ্ধে জঙ্গি মিছিলও বের করা হয়।
বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়েও সমালোচিত হয়। সে থেকে হিরনের সাথে হাসনাতের দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর এসব কারণে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ বরিশালকে এড়িয়েই চলতে শুরু করেন। বরিশাল মহানগরীতে তিনি কোন দলীয় কর্মা-ে অংশগ্রহণ করছেন না দীর্ঘদিন। তবে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে এ মহানগরীতে নিজের অবস্থান যথেষ্ট শক্ত পোক্ত করেছেন। দলীয় ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণসহ অনেকের ভালমন্দের খোঁজ-খবর রাখছেন তিনি। এক পর্যায়ে তার নামই মহানগর সম্পাদক হিসেবে উঠে আসে। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মহানগর কমিটির যে একটি রূপরেখা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠান হয়েছিল ইতোপূর্বে সেখানেও সাদেক আবদুল্লাহর নাম সম্পাদক হিসেবে ছিল। কিন্তু দলীয় শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি অনুমোদন পায়নি। জেলা আওয়ামী লীগ কমিটিতে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতি ছাড়াও তার স্ত্রী সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং এক পুত্র ও শ্যালক নির্বাহী কমিটির সদস্য রয়েছেন।
এদিকে ২০০৮-এর জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুখ শামিম প্রতদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়ে দল ও রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু সাম্প্রতিককালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদের লবিং-এ তিনি শক্ত অবস্থানে থাকলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সাবেক মহানগর সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকেই বেছে নিলেন। তবে জেলা সভাপতি আবুল হাসনাতের পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ সহকারী সম্পাদক এবং সদর আসনের এমপি জেবুন্নেসা আফরোজকে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ ছাড়াও সাবেক মহানগর সম্পাদক আফজালুল করিমকে সহ-সভাপতি করায় নতুন এ কমিটি যথেষ্ট সমৃদ্ধ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা।
গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে বরিশালে পৌঁছে গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল দলীয় কার্যলয়ে সভা করে নগরীতে একটি মিছিলও করেছেন। এ সভা ও মিছিলে সাদেক আবদুল্লাহসহ মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।