পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। গতকাল ব্যাংকগুলোর সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ব্যাংকগুলোর চলতি বছরের জুনভিত্তিক আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর এ বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ। বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ছাড়াও ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা: রাজি হাসান, নির্বাহী পরিচালক নির্মল চন্দ্র ভক্ত, মহাব্যবস্থাপক মো: রবিউল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও লোকসানি শাখা বেড়ে যাওয়া, প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি এবং শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ আদায় করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গভর্নর। বৈঠকে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে মূলধন ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণ ও লোকসানি শাখা কমিয়ে আনার ওপর জোর দেয়া হয়।
জানা গেছে, সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে ২০০৭ সাল থেকে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমওইউতে খেলাপি ঋণ ঋণ আদায়, ঋণ প্রবৃদ্ধি যথাযথ রাখা, লোকসানি শাখা ও পরিচালন ব্যয় কমানো, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও সুপারভিশনের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিন মাস পরপর ব্যাংকগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে এসব লক্ষ্য অর্জনের মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু তারপরও কোনো উন্নতি হচ্ছে না ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থার চরম অবনতির কারণে গত বছরের ১৮ নভেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈঠক সূত্রে আরো জানা যায়, বর্তমানে ব্যাংক চারটিতে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ রয়েছে। মূলধন ঘাটতি রয়েছে তিনটি ব্যাংকের। বছরের ব্যবধানে বেড়েছে লোকসানি শাখা। শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় পরিস্থিতিও সন্তোষজনক নয়।
মূলধন ঘাটতিতে তিন ব্যাংক : জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ৬৬৪ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ৪৮ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল। অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে ১৯৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে এই ব্যাংকের কোনো ঘাটতিই ছিল না। আর রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৫২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা আগের প্রান্তিকেও ছিল ৪৪৪ কোটি টাকা। গেল বছরের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর প্রান্তিকেও একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক ছাড়া অন্য তিন ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে ছিল। এদিকে, জুন শেষে সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ৯২ কোটি ৯০ লাখ ও রূপালী ব্যাংকের ৭৭৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার প্রভিশন ঘাটতি ছিল।
বেড়েছে খেলাপি ঋণ : চলতি বছরের জুন শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রয়েছে ৯ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা বা ৩০ দশমিক ২২ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ২ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৩১ শতাংশ, জনতা ব্যাংকের ৫ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা বা ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বা ২২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গেল বছরের ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ২২৪ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা ও জনতা ব্যাংকের ২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ছিল।
বেড়েছে লোকসানি শাখা : চলতি বছরের জুন শেষে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের লোকসানি শাখা বেড়ে ৫৮৯টিতে দাঁড়িয়েছে। গেল বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত লোকসানি শাখা ছিল ১৮৩টি। অর্থাৎ ছয় মাসে এ চার ব্যাংকের লোকসানি শাখা বেড়েছে ৪০৬টি। জুন শেষে সোনালী ব্যাংকটির শাখা ছিল ১ হাজার ২০৮টি। এর মধ্যে লোকসানি শাখা ২৯০টি। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ১২৪টি। গত জুন শেষে অগ্রণীর মোট ৯৩২ শাখার মধ্যে লোকসানি শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯টিতে। গত ডিসেম্বরেও ব্যাংকটির লোকসানি শাখা ছিল মাত্র ৩৪টি। জনতা ব্যাংকের ৯০৯ শাখার মধ্যে জুন শেষে লোকসানিতে রয়েছে ৭৪টি। যদিও গত ডিসেম্বরে লোকসানি শাখা ছিল মাত্র ১৫টি। আর রূপালী ব্যাংকের ৫৬০টি শাখার মধ্যে জুন শেষে লোকসানি শাখা দাঁড়িয়েছে ১২৬টিতে। গত ডিসেম্বরে ব্যাংকটির মাত্র ১০টি শাখা লোকসানে ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।