পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ঃ ২৫৮/৭ (৯২.২ ওভারে) (প্রথম দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী, চট্টগ্রাম থেকে : টসে নেমে ২ অধিনায়কের হয়ে গেল ২টি রেকর্ড। অ্যালেক স্টুয়ার্টের ১৩৩ ম্যাচের রেকর্ড টপকে ইংল্যান্ড টেস্ট ইতিহাসে সর্বাধিক ১৩৪ ম্যাচের ইতিহাস রচনা করলেন অ্যালিস্টার কুক। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে গতকাল কোয়ার্টার সেঞ্চুরি পূর্ণ হলো মুশফিকুর রহিমের। এমন একটি দিনে তিন ক্রিকেটারের (মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান রুম্মান, কামরুল ইসলাম রাব্বী) অভিষেকে ৮ বছর ৯ মাস আগে ডানেডিন টেস্টে তিন অভিষিক্ত ক্রিকেটারের কথাই মনে করিয়ে দিল বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় উইকেট কিপার কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক বছরে হাজার রান পূর্ণ করে ইতিহাসে নাম লেখালেন ইংলিশ লোয়ার অর্ডার বেয়ারস্ট! তবে ১৫ মাস পর টেস্টে প্রত্যাবর্তন দিনটিতে স্মরণীয়তম করে রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এতো লম্বা বিরতির পর টেস্ট খেলতে নেমে না জানি কতোটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়? এটাই ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের দুর্ভাবনা। সর্বশেষ টেস্ট দলের ৫ ক্রিকেটারকে না পাওয়ায় টেস্ট প্রত্যাবর্তন ম্যাচে বড় কিছুর আশাও করেননি বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হাতুরুসিংহে। তবে ২০ উইকেট নেয়ার মতো সামর্থ বোলিং ইউনিটের নেই, এমন মন্তব্য করে প্রকারান্তরে যে এক তরুণকে তাতিয়ে দিয়েছিলেন হাতুরুসিংহে, অভিষেকে দ্যুতি ছড়ানো বোলিংয়ে সেটাই দেখল বিশ্ব। প্রথম দিনে স্পিন ধরায় বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ডের স্কোর ২৫৮/৭। অভিষেকে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজেই (৫/৬৪) উপভোগ্য দিনে ইংল্যান্ডের উপর ছড়ি ঘোরালো বাংলাদেশ।
লম্বা সময় ধরে বোলিং করতে পারেন, এই কামরুল ইসলাম রাব্বীকে টেস্ট দলে নেয়ার সে যৌক্তিকতার প্রমাণ মেলেনি। একটি ওভার ছাড়া অবশিষ্ট প্রতিটি ওভারেই খেয়েছেন বাউন্ডারি এই পেসার। সাব্বির রহমান রুম্মানকে সিøপের আদর্শ ফিল্ডারে পরিণত করার চেষ্টায়ও অভিষেকে বিফল টিম ম্যানেজমেন্ট। বেয়ারস্ট’র ক্যাচ দিয়েছেন ছেড়ে এই মেকশিপ্ট সিøপ ফিল্ডার। এখানেই ব্যতিক্রম মিরাজ। বদলে যাওয়া জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফ্লাট পীচ থেবে স্পিন ফ্রেন্ডলী উইকেট! ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিরাজের হাতে বল তুলে দেয়ায় ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে নামিয়ে আনতে পেরেছেন মুশফিকুর। নুতন বলে বোলিংয়ের দায়িত্ব পেয়েই দিয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুরের আস্থার প্রতিদান, নিজের ৫ম ওভারে ইংল্যান্ড ডেব্যুটেন্ট ওপেনার বেন ডাকেটকে হতভম্ব করা ডেলিভারীতে বোল্ড আউটে ফিরিয়ে দিয়ে দারুণ অভিষেকের আভাস দিয়েছিলেন। সাকিবের মতো অভিজ্ঞ স্পিনার থাকতেও দিনের সব আলোটা যেনো পড়েছে মিরাজের উপর। প্রথম ঘণ্টায় সফরকারীদের ৩ উইকেট ফেলে দিয়ে (৩৪/৩) ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ এই তরুণ অফ স্পিনারের প্রথম স্পেলেই (১০-২-১৩-২)। চারটি স্পেলের কোনটাতেই ফেরেননি শূন্য হাতে। শেষ স্পেলে বেয়ারস্টকে স্ট্রেইটারে বোল্ড করে নিজের অভিষেক ইনিংসে ৫ম উইকেটে করেছেন হতভম্ব।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ২৪২ রানও ১২ উইকেটে আসর সেরার স্বীকৃতি পেয়ে আলোচনায় উঠে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ টেস্ট অভিষেকেই করেছেন বাজিমাত। চট্টগ্রামে ২ দিনের অনুশীলন ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে খেলেছেন, তবে তাকে লুকিয়ে রাখতে বোলিং, ব্যাটিংÑ কোনটাই করায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। লুকিয়ে রাখা ছেলেটিই অভিষেক ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট (৫/৬৪)। নাইমুর রহমান, মুঞ্জুরুল ইসলাম, মাহামুদুল্লাহ, ইলিয়াস সানি, সোহাগ গাজী, তাইজুল ইসলামের পর বাংলাদেশের ৭ম বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেটের ইনিংস মিরাজের। বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে অভিষেকে সর্ব কনিষ্ঠ মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৮ বছর ৩৬১ দিন বয়সে এই কৃতিত্বে টেস্ট ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স (১৮ বছর ১৯৩ দিন), পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি (১৮ বছর ২৩৫ দিন) ও শহীদ নাজিরের (১৮ বছর ৩১৮দিন) পর ৪র্থ সর্বকনিষ্ঠ সফল ডেব্যুটেন্ট মেহেদী হাসান মিরাজ।
দিনটি আরো ভাল হতে পারতো। ৬ষ্ঠ জুটিতে মঈন আলী-বেয়ারস্ট’র ৮৮ রানের পার্টনারশিপটি ভুগিয়েছে কিছুক্ষণ। চার চারবার কাঁটা পড়তে পড়তে বেঁচে এতোটা লম্বা করেছে জুটিটি। বাংলাদেশের উৎসব স্তম্ভিত করেছেন ভারতের টিভি আম্পায়ার এস রবি। যার মধ্যে ৮,১৬,২৯ রানের মাথায় মইন আলীর বিরুদ্ধে এলবিডাব্লুর রিভিউ আপীল ৪ বার হয়েছে প্রত্যাখ্যাত! যার মধ্যে ২ বার আম্পায়ার ধর্মসেনার এলবিডাব্লুর সিদ্ধান্ত রিভিউ আপীলে বাতিল হয়েছে। চার চার রিভিউ আপীলে বেঁচে যাওয়া মঈন আলী বড়ই ভাগ্যবানÑইংল্যান্ড ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেছেন তিনি! রেকর্ডের দিনটি বড়ই হতাশায় কেটেছে সদ্য ভুমিস্ট দ্বিতীয় কন্যা সন্তানকে রেখে আসা অ্যালিস্টার কুক সাকিবের দ্বিতীয় বলে সুইপ করতে চেয়ে হয়েছেন বোল্ড (৪ রান)। স্টোকসকে যেভাবে টার্নে পরাস্থ করে ব্যাট প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড আউট করেছেন সাকিব, তা বিস্ময়ের চেয়েও বেশি কিছু। যে উইকেট ৫ম দিনেও অতীতের চারটি টেস্টে বদলায়নি চরিত্র, সেই উইকেটে প্রথম দিন থেকে যেভাবে ধরেছে স্পিন, তাতে দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ডের শেষ তিন উইকেট ঝটপট ফেলে দেয়ার পর ইংলিশ স্পিনের পরীক্ষাও যে দিতে হবে বাংলাদেশ দলকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।