Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চূড়ান্ত বিতর্কেও হিলারির জয়

জরিপে হিলারির পক্ষে ভোট ৫২, ট্রাম্পের ৩৯ শতাংশ

প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৩১ এএম, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

ইনকিলাব ডেস্ক : তৃতীয় ও চূড়ান্ত বিতর্কেও রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করেছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। প্রথম ও দ্বিতীয় বিতর্কেও জয়ী হয়েছিলেন হিলারি। তবে প্রথম দুইবারের চেয়ে এবার ব্যবধান কিছুটা কম। সিএনএনের তাৎক্ষণিক জরিপ বলছে, শেষ বিতর্কে হিলারি জয়ী হয়েছেন এমনটা মনে করেছেন ৫২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী, আর ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ভোট পড়েছে ৩৯ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় বিতর্কে হিলারির পক্ষে ভোট পড়ে যথাক্রমে ৬২ ও ৫৭ শতাংশ। আর ট্রাম্প পেয়েছিলেন যথাক্রমে ২৭ ও ৩৪ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসে তিনজন বিচারকের বোর্ড মূল বিতর্ককে ৬টি বিভাগে ভাগ করে তাদের পৃথক রায়ে হিলারিকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। তাদের দেয়া রায় অনুসারে ট্রাম্প বিতর্কের কোনো কোনো রাউন্ডে টাই করলেও জিততে পারেননি। বিচারকদের ফলাফল অনুসারে তিনজন বিচারকের রায়ে প্রথম রাউন্ড হয় ড্র। দ্বিতীয় রাউন্ডে দুই বিচারক হিলারিকে জয়ী ঘোষণা করেন এবং একজন ড্র বলে রায় দেন। তৃতীয় রাউন্ডেও ড্র হয়। এরপর চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ রাউন্ডে একচ্ছত্রভাবে বিজয়ী হন হিলারি।
৯০ মিনিটের বিতর্কের সঞ্চালক ছিলেন ক্রিস ওয়ালেস। সিএনএনসহ অধিকাংশ মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটে এই বিতর্ক সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এদিকে, বিতর্কের পর সিএনএন/ওআরসি তাদের একটি জরিপ প্রকাশ করে। ওই জরিপেও দেখা যাচ্ছে হিলারি জয়ী হয়েছেন। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ৫২ শতাংশ দর্শক মনে করেন হিলারি জয়ী হয়েছেন। ৩৯ শতাংশ মনে করেন ট্রাম্প জয়ী। এছাড়া সিএনএন/ওআরসির জরিপের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় বিতর্কেও হিলারি জয়ী হয়েছিলেন। লাস ভেগাসের নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় সময় গত বুধবার রাত ৯টায় এই বিতর্ক শুরু হয়। সেখানে সঞ্চালনা করেন ফক্স নিউজ সানডের উপস্থাপক ক্রিস ওয়ালেস।
হিলারিকে নোংরা মহিলা বললেন ট্রাম্প
আগের বিতর্কগুলোর মতো এবারও পরস্পরকে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ করেছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। হিলারি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। কারণ ট্রাম্প তার একজন পুতুল মাত্র। বিপরীতে হিলারি ক্লিনটনকে একজন নোংরা মহিলা বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসের নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিতর্ক শুরু হয়। ৯০ মিনিটের বিতর্কে সঞ্চালকের ভূমিকায় আছেন ফক্স নিউজ চ্যানেলের ক্রিস ওয়ালেস। দুই প্রার্থী নিজেদের নীতিগত অবস্থান থেকেই সম্ভাব্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতিগত অবস্থান নিজ দেশের সামনে তুলে ধরেছেন। বিতর্কে নারী ও এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান হিলারি ক্লিনটন। নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকারের পক্ষে নিজের অঙ্গীকারের কথা জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতকে  বৈধ করার যে রুলিং রয়েছে সেটি পরিবর্তনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রথম বিতর্কের মতোই ট্রাম্পকে মোকাবিলার জন্য হিলারি জোরালো প্রস্তুতি অব্যাহত রাখলেও রিপাবলিকান প্রার্থী বিভিন্ন সমাবেশে ভোটারদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। আগের দু’টি বিতর্কের পর জরিপ অনুযায়ী ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে ছিলেন হিলারি। তৃতীয় বিতর্কপূর্ব জরিপের ফলাফলেও ট্রাম্পের তুলনায় এগিয়ে আছেন হিলারি ক্লিনটন। বিতর্ক শুরুর আগে মার্কিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিতর্কে দুই প্রার্থী সঞ্চালক ওয়ালেসের পক্ষ থেকে উত্থাপিত ঋণ ও অধিকার বিষয়ক ইস্যু (এনটাইটেলমেন্ট), অভিবাসন, অর্থনীতি, সুপ্রিম কোর্ট, বৈদেশিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছাড়াও একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিজেদের শারীরিক সক্ষমতাÑ এ ছয়টি পরীক্ষামূলক বিষয়ের প্রশ্ন ও তার উত্তর দেবেন। এর আগে ৯ অক্টোবর ২০১৬ রবিবার দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন পররাষ্ট্রনীতি উপস্থাপনের চেয়ে একে অপরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেই কথা বেশি বলেছেন তারা। বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ই-মেইল কেলেঙ্কারির জন্য হিলারির কারাগারে থাকা উচিত। নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি হিলারির বিষয়ে তদন্ত চালাতে একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দেবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে হিলারি বলেন, ট্রাম্প যা বলেছেন সেটা একেবারেই মিথ্যা। এতে আমি বিস্মিত হইনি। এটা বরং খুবই ভালো হয়েছে যে, ট্রাম্পের মতো একজন বদমেজাজি লোক আমাদের দেশের সর্বময় কর্তা হতে পারেন না। হিলারির এমন বক্তব্যের মাঝপথেই হিলারিকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। এছাড়া বিচারকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এটা বলতে অস্বীকার করেন যে, নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক তিনি মেনে নেবেন। বিতর্ক চলার সময় ট্রাম্পকে ২০০৫ সালে এক অডিও সাক্ষাৎকারে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থন করে ট্রাম্প উল্টো তীব্র আক্রমণ করেন হিলারি দম্পতিকে। নারীদের সঙ্গে নিজের যে কোনো ধরনের যৌন অসদাচরণের কথা অস্বীকার করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলীয় এ প্রার্থী বলেন, ২০০৫ সালের অশালীন মন্তব্য নিয়ে তিনি গর্বিত নন। তবে রাজনীতির ইতিহাসে বিল ক্লিনটন সবচেয়ে বেশি নারী নির্যাতন চালিয়েছেন। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সিএনএন, বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘নির্বাচনের ফল মেনে নেবো’ বলতে অস্বীকার ট্রাম্পের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ