পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় দশ বছর পরে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলীয় যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস। ২০১১ সালের মধ্যভাগে নির্ভরযোগ্য নৌযানের অভাবে সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে গত সোমবার বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এবং যাত্রী সেবা ইউনিট প্রধানের সাথে আলাপ করা হলে ২ ডিসেম্বর বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলীয় যাত্রীবাহী সার্ভিসটির সম্ভাব্য পরীক্ষামূলক পরিচালনার কথা জানান।
প্রথমিকভাবে সপ্তাহে ৪ দিন ‘এমভি বার আউলীয়া’ ও ‘এমভি তাজউদ্দিন আহমদ’ নামে দু’টি নৌযান বরিশাল ও চট্টগ্রাম উভয়প্রান্ত থেকে সকাল ৭টায় যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছার কথা বলা হয়েছে। তবে ভাটি মেঘনার প্রবল স্রোত অতিক্রম করে তা কতটা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারবে সে ব্যাপারে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। পথিমধ্যে ভোলার ইলিশাঘাট ও হাতিয়ায় যাত্রা বিরতি করবে নৌযানগুলো। ফলে ভোলা ও হাতিয়ার সাথেও বরিশাল এবং চট্টগ্রামের সহজ নৌযোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন।
বিআইডব্লিউটিসির উচ্চ পর্যায় থেকে আগস্টের মধ্যেই সার্ভিসটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত থাকলেও এমভি বার আউলীয়ার মেরামত বিলম্বিত হওয়ায় তা ক্রমাগত পেছাতে থাকে। ২০০২ সালে চীন থেকে সংগ্রহ করা নৌযানটির পেছনে ইতোপূর্বে আরো প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরে এবার পুরানোর পরিবর্তে নতুন ইঞ্জিন সংযোজন করা হল।
ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে বরিশাল-চট্টগ্রাম নৌপথে জরিপ সম্পন্ন করে রুট ম্যাপ সরবরাহের জন্য আইডব্লিউটিএ’কে বলা হলেও তা বিলম্বিত হচ্ছে। সংস্থাটি ২৫ নভেম্বর বরিশাল-চট্টগ্রাম নৌপথে উপকূলীয় যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিসটি চালুর প্রস্তুতি নিলেও বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে জরিপ সম্পন্ন না হওয়ায় সে তারিখটিও ঠিক থাকল না।
১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শিপিং করপোরেশন পশ্চিম জার্মানি থেকে সংগ্রহ করা ৪টি নৌযানের সাহায্যে বরিশাল-হাতিয়া-সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম উপকূলীয় নৌপথে যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস চালু করে। ওইসব নৌযানের মধ্যে ‘এমভি মনিরুল হক’ ও ‘এমভি আবদুল মতিন’ ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে মেরামত করা হয়। কিন্তু ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ওইসব নৌযান খুব বেশি দিন নির্বিঘ্নে চলেনি। নতুনের পরিবর্তে রিকন্ডিশন ইঞ্জিন সংযোজনসহ নানামুখী দুর্নীতির কারণে ওইসব নৌযান নিয়ে বরিশাল থেকে চট্টগ্রামে প্রায় পৌঁনে ৩শ’ কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম করতে ঝুঁকি নেয়নি বিআইডব্লিউটিসি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উপকূলীয় নৌযোগাযোগ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে উপকূলীয় নৌপথের জন্য মাঝারি সাইজের দুটি যাত্রীবাহী নৌযান সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৫০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ দুটি উপকূলীয় নৌযান নির্মাণ প্রকল্প একনেকের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। এর প্রায় বছরখানেক পরে ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর ৭শ’ যাত্রী বহনক্ষম উপকূলীয় নৌযান নির্মাণের লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিসি’র সাথে থ্রি অ্যাংগেল মেরিন লিমিটেড অ্যান্ড দি কুমিল্লা শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড জেভি’র ১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী প্রায় ১৯৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রায় ৪০ ফুট প্রস্থ নৌযানটির নির্র্মাণ কাজ ২০ মাসে শেষ হবার কথা থাকলেও তিন দফায় আরো ৪ বছর সময় বাড়িয়ে গত মার্চে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০ মাসের নির্মাণ কাজ প্রতিষ্ঠানটি শেষ করেছে ৬৮ মাসে। গত ৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘এমভি তাজউদ্দিন আহমদ’ নৌযানটি আনুষ্ঠনিকভাবে উদ্বোধন করেন।
১১.৪৮ ফুট মোলডেড ও ৭.৩৮ সর্বোচ্চ লোডেড ড্রাফটের এ নৌযানটিতে ইকনোমি ক্লাসে ৭১২ জন, স্ট্যান্ডার্ড ক্লাসে ১৭২ জন ছাড়াও স্ট্যান্ডার্ড ও বিজনেস ক্লাসে ৮ জন করে ১৬ জন যাত্রী বহন করবে। নৌযানটিতে যাত্রী ও পণ্য মিলিয়ে ধারণক্ষমতা ১৭৫ টন। বেলজিয়ামের ‘এবিসি’ ব্রান্ডের ৭৫০ অশ^শক্তির দুটি মূল ইঞ্জিন সমৃদ্ধ এ নৌযানটি ঘণ্টায় ১০ নটিক্যাল মাইল বা ১৮.৫২ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম।
বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে প্রায় ৭শ’ যাত্রী বহনক্ষম অপর নৌযান এমভি বার আউলীয়াতে প্রথম ও ডিলাক্স কক্ষ ছাড়াও বেশ কিছু দ্বিতীয় শ্রেণির কিছু কক্ষসহ প্রায় দেড়শ’ টন পণ্য পরিবহন সুবিধা রয়েছে। যা বরিশাল ও চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়াতে নিত্যপণ্য সামগ্রী ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পণ্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও কর্তৃপক্ষ আশা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।