পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২ বছর ৮ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন ধনাঢ্য বাবা শাহিনূর টি আই এম নবী। শিশুটির ভারতীয় মা সাদিকা সাঈদ শেখ রিটের প্রেক্ষিতে বাবাকে সন্তানসহ হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। একই সঙ্গে শিশুসহ তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে বিদেশ চলে গেছেন শিশুর বাবা।
গতকাল রোববার আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান। আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। এর আগে শিশুসহ তার বাবাকে গতকাল রোববার বিকেল ৩টার মধ্যে হাজির করতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
মামলাটি গতকাল শুনানিতে ওঠে। শুনানিকালে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান আদালতকে জানান, গত ১৬ নভেম্বর ওই শিশুকে নিয়ে তার বাবা অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন। এসময় আদালত সরকারপক্ষীয় আইনজীবী বিপুল বাগমারের কাছে জানতে চান, শিশুসহ বাবার দেশত্যাগের ঘটনা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পরে কিনা? জবাবে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই আদালত অবমাননার শামিল। পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার তারিখ ধার্য করেন।
গত ১৬ নভেম্বর শিশু সন্তানকে নিয়ে তার বাবা বাংলাদেশী নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। শিশুর মা ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
তবে এ রিটে শিশুর বাবার আইনজীবী থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখতে আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) ব্যবস্থাপনায় থাকবে ওই মা ও শিশু।
তবে বাংলাদেশী বাবা সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এই দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়। হাইকোর্টের আদেশের পর শিশুর বাবা তার সন্তানকে উন্নত পরিবেশে গুলশান রাখার ইচ্ছার কথা জানান। শিশুর মঙ্গলের কথা চিন্তা করে শিশুর মা রাজি হন। এরপর থেকে গুলশান ক্লাবেই শিশুর মাসহ তারা অবস্থান করছিলেন।
একপর্যায়ে বেড়ানোর কথা বলে গুলশান ক্লাব থেকে শিশুকে নিয়ে যান তার বাবা। এরপর আর শিশুকে গুলশান ক্লাবে মায়ের কাছে দিয়ে যাননি তিনি। এরমধ্যে শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে জিডি এবং মামলাও করা হয়। গত ১৫ নভেম্বর শিশুটিকে হাজির করতে আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু শিশুর বাবা আইনজীবীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। এ কারণে আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নিজেকে প্রত্যাহার করেন।
উল্লেখ্য, ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দারাবাদের সাদিকা সাঈদ শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন ঢাকার বারিধারার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনুর টি আই এম নবী। মেয়েটিও হায়দারাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের। ২০১৭ সালে হায়দারাবাদে তাদের ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। এরমধ্যে ২০১৮ সালে এই দম্পতির পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী। ভারতের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে স্ত্রীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজন জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। এতেও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। পরে গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশু সন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।