Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মানুষ বলছে দুর্নীতির টাকায় হচ্ছে আ’লীগের জৌলুসের সম্মেলন

হান্নান শাহ স্মরণ সভায় আব্দুল্লাহ আল নোমান

প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। গতকাল বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আওয়ামী লীগ একটা কাউন্সিল করছে। এত বড় সম্মেলন, এত জৌলুস সৃষ্টির সম্মেলন। বিশাল গেইট করেছে, কোটি কোটি টাকা খরচ। আওয়ামী লীগের যে সভা সেই সভার যে হিসাবটা দেখলামÑ লক্ষ নয়, কোটি কোটি টাকার ব্যাপার। এই টাকাটা কোথায় থেকে আসছে, সেটা আমরা কেউ জানি না।
নোমান বলেন, ক্ষমতাসীনদের বলব, এই সম্মেলন জনগণের কাছে কীভাবে প্রতিপাদ্য হচ্ছেÑ সেটা একবার যদি জরিপ করে দেখেন, তাহলে বুঝবেন জনগণের কী প্রতিক্রিয়া। সম্মেলনের গেইটটা দেখেই মানুষজন বলে, হায়রে এই আমাদের টাকায় এই সম্মেলনটা হচ্ছে, দুর্নীতির টাকায় এই সম্মেলনটা হচ্ছেÑ এটা মানুষের মনের কথা। এটা জোর করে আওয়ামী লীগ সরাতে পারবে না। আর আমরাও বলে আমাদের নিজের পক্ষে আনতে পারব না।
সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে নোমান বলেন, আমরা বলতে চাই আওয়ামী লীগের সম্মেলন সফল হউক। এই সম্মেলনে দেশের যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের যে আশা-আকাক্সক্ষা, সেটা বাস্তবায়নে উদ্যোগ থাকুকÑ এটা আমরা চাই।
আমরা এই কথাও বলতে চাই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আপনি সম্মেলন করছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, সমগ্র শহরের পুরোটা আপনারা নিয়ে নিচ্ছেন। জনগণের দুর্ভোগ যাতে না বাড়েÑ এই চিন্তা আপনাদের করতে হবে।
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে বিএনপির মরহুম নেতা আসম হান্নান শাহের স্মরণে এই আলোচনা সভা হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে হান্নান শাহ ইন্তেকাল করেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির যখন জাতীয় সম্মেলন হলো, সেই সম্মেলন তিনদিন আগেও কোথায় হবে আমরা বলতে পারি নাই আমাদের কাউন্সিলরদের। কারণ আমরা কোনো জায়গার অনুমতি পেলাম না। অনুমতি না পেয়ে আমরা আমাদের পোস্টারে লিখতেও পারলাম না, কর্মীদের জানাতে পারি নাই কোথায় সম্মেলন হবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের ভেতরে সম্মেলন করতে দেয়া হলো। সোওরায়ার্দী উদ্যানের একটা অংশ ব্যবহার করার যে অনুমতি চেয়েছিলাম তাও দেয়া হলো না।
অথচ আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৫ দিন আগ থেকে আয়োজন চলছে। রাস্তায় মাইকও লাগানো হয়ে গেছে। বিএনপির প্রতি আওয়ামী লীগের যে আচরণ সেটা অসহনীয় এবং সেটা শুধু প্রতিবাদ যোগ্য নয়, প্রতিরোধযোগ্য।
আগামী ৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি সভা করতে চায় এরকম আগ্রহের কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আপনারা সম্মেলন করছেন, আমাদের করতে দেন নাই। তার জন্য আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। সামনে ৭ নভেম্বর রয়েছে। এই দিবসটি বিএনপি পালন করতে চায়। এ ব্যাপারে যদি অনুমতির ব্যাপার হয়, সেটা যদি না দেয়া হয়, তাহলে আমরা আন্দোলনী শক্তি দিয়ে সেটা আদায় করব। আমাদের আন্দোলনে তীব্র গতিতে চলবে, আমাদের নেত্রী কর্মসূচি দেবেন। এই কর্মসূচির ভিত্তিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আজকে আমি ধানমন্ডি থেকে আসছিলাম এলিফেন্ট রোড দিয়ে। পুরো রাস্তায় দেখছিলাম- ছোট ছোট লাইট। মৎস্যভবন পর্যন্ত যা আমি দেখেছি সারা শহর জ্বল জ্বল করবে বাতিতে। সেই বাতি জ্বালালে মানুষের মনের মধ্যে যে আগুন সে আগুন তো এই বাতি নিভাতে পারবে না।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে এগিয়ে গেছেÑ এই প্রশংসা করে গেছেন বিশ্বব্যংক প্রেসিডেন্ট। সাথে সাথে তিনি এটাও বলে গেছেন যে, এই দারিদ্র্য বিমোচন চলমান রাখতে দুর্নীতি সমস্যার সমাধান করতে হবে। দুর্নীতির ব্যাপারে তাদের অবস্থান একটুও হেরফের হয় নাই।
আমরা বলতে চাই, দারিদ্র্য বিমোচনের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের আমলে। সেই শুরুটা চলমান। যখন যে সরকার আসে, সেই সরকার এটা এগিয়ে নিয়েছে। কম-বেশি সব সরকারই এই কাজটি করেছে। বিশেষ করে সরকারের চেয়ে প্রাইভেট সেক্টর এক্ষেত্রে অন্যতম সাংগঠনিক শক্তি। সেখানে ব্র্যাক বলুন, গ্রামীণ ব্যাংকের ৮৬ লাখ সদস্যের কথা বলুন এবং দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প রয়েছে সরকারের। এটা নতুন করে নয়, সব সরকারের আমলেই হয়েছে। মরহুম হান্নান শাহের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নোমান।
সংগঠনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমীন, ফোরকান-ই আলম, সুরঞ্জন ঘোষ, ওসমান আলী, ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ স্ইাদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানুষ বলছে দুর্নীতির টাকায় হচ্ছে আ’লীগের জৌলুসের সম্মেলন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ