Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পালিয়ে থাকা বাবাকে শিশুসহ হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ

ভারতীয় মায়ের রিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভারতীয় মায়ের প্রায় ৩ বছর বয়সি শিশুসন্তানসহ পালিয়ে থাকা বাংলাদেশি বাবা শাহিনূর টিআইএম নবীকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হাজির করতে দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে এ নির্দেশ দিয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন বেঞ্চটির ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। গতকাল ভারতীয় মা সাদিকা সাঈদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। শিশুটির বাবার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এর আগে গত ১৬ নভেম্বর শিশুসন্তানকে নিয়ে তার বাবা বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনূর টিআইএম নবীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। শিশুর মা ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট উপরোক্ত আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত : গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখতে আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, মা ও শিশু মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তবে বাংলাদেশি বাবা সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শিশুটির সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এই দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়।

তবে হাইকোর্টের আদেশের পর শিশুর বাবা তার সন্তানকে উন্নত পরিবেশে গুলশান রাখার ইচ্ছার কথা জানান। শিশুর মঙ্গলের কথা চিন্তা করে শিশুর মা রাজি হন। এরপর থেকে গুলশান ক্লাবেই শিশুর মাসহ তারা অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে বেড়ানোর কথা বলে গুলশান ক্লাব থেকে শিশুকে নিয়ে যান তার বাবা। তবে এরপর আর শিশুকে গুলশান ক্লাবে মায়ের কাছে দিয়ে যাননি বাবা। এর মধ্যে শিশুর বাবার বিরুদ্ধে জিডি ও মামলাও করা হয়। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত নির্দেশ দেন, গত ১৬ নভেম্বর সকালে শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে। কিন্তু শিশুর বাবা আইনজীবীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। এ কারণে আইনজীবী থেকে ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।

উল্লেখ্য, ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে অন্ধপ্রদেশের হায়দরাবাদের সাদিকা সাঈদ শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন বারিধারার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনূর টিআইএম নবী। মেয়েটিও হায়দরাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের। ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে তাদের ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালেশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। এর মধ্যে এই দম্পতি ২০১৮ সালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। একপর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী। ভারতের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেন। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়স্বজনরা জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান।

পরে গত ৮ আগস্ট সাদিকা সাঈদ শেখ ও তার শিশু সন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করে সংস্থার পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী। এদিকে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পরপরই বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনূর টিআইএম নবী ভারতীয় নাগরিক স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ