পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
গত ৭ নভেম্বর কল মানি মার্কেটে লেনদের পরিমাণ ছিল ৮হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। সেদিন মার্কেট রেট ছিল ২ দশমিক ২৭ টাকা। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্থাৎ ১৬ নভেম্বর এর দাম বেড়ে এখন ৪ দশমিক ২৫ টাকার বেশি। ব্যাংকগুলোতে হঠাৎ নগদ অর্থের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে স্বল্প সময়ের জন্য ধার করা টাকার সুদের হারও (কল মানি রেট) বেড়েছে। গত মঙ্গলবার কল মানি মার্কেটের রেট ছিল গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত মঙ্গলবার কল মানি মার্কেটে আন্তঃব্যাংক লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। আগেরদিন সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৮হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। লেনদেনের পরিমাণ আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে না বাড়লেও এ দিনে কল মানি রেট ছিল ৪ দশমিক ২৫ টাকা। গত বছর সেপ্টেম্বরের পর এত বেশি রেট আর দেখা পায়নি। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর কল মানি রেট ছিল ৪ দশমিক ২৭ টাকা। আর গত বছরের একই দিনে অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর ছিল ১ দশমিক ৮১ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক আমানতে সর্বনি¤ড়ব সুদ হার বেঁধে দেয়ার পর অনেক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে সুদ দিতে পারছে না। একইসঙ্গে অনেক ব্যাংকের আমানত কমে আসলেও ঋণের পরিমাণ কমছে না। অথচ ব্যাংকগুলোকে আমানত ও ঋণের বিপরীতে এডিআর ও এসএলআর সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। সে কারণে ব্যাংকগুলো মানি মার্কেটের ওপর নির্ভর করায় এর রেট হঠাৎ করে বেড়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কল মানি মার্কেটের রেট ছিল ১ দশমিক ৭৮ টাকা। এর পর মে মাসে কিছুটা বেড়ে ২ দশমিক ৮ টাকা হয়। জুনে ছিল ২ দশমিক ২৫ টাকা। আগস্ট সেপ্টেম্বরে ছিল ২ টাকার কম। তবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এর রেট বাড়তে থাকে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকের আমানত কমে আসছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে ঋণের বিপরীতে ১৩ শতাংশ অর্থ বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলো সেটা টাকা সংগ্রহ করতে মানি মার্কেটে ঝুঁকছে। আর এজন্যই রেট বাড়ছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, কল মানি রেট বেড়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ হতে পারে। যেমন-আগে বিভিনড়ব ধরনের আমানতের সুদহার অনেক কম ছিল। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতের সর্বনি¤ড়ব সুদহার নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেখানে সঙ্গত কারণেই কল মানি রেট তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, ডলারের দামও কিছুটা বাড়ছে। একদিনের জন্যও যদি ডলারের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কল মানিতেই চলে যাচ্ছে। আরেকটি কারণ হতে পারে, বাংলাদেশ ব্যাংক যে বিল মার্কেট থেকে তুলে নিচ্ছে সেখানেও একটা প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, বিগত দুই বছরে করোনার কারণে ইনভেস্টমেন্ট কম ছিল। এখন ইনভেস্টমেন্ট বেড়েছে, ফলে ডলারের দাম বাড়ছে, আমানতের রেট বাড়ছে। এতে কল মানি রেটও বেড়ে যাচ্ছে। তবে এটা সাময়িক বলে জানান তিনি।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, করোনা মহামারি চলে যাওয়া। জনগণ ভ্যাকসিনের আওতায় চলে আসা, বছর শেষে ব্যাংকগুলোর লক্ষমাত্র পূরণের চাপ এবং আমানতের সুদহার বেড়ে যাওয়া-সব ডিমান্ডের চাপ গিয়ে পড়ছে কল মানি রেটের উপরে। এ এমডি বলেন, আমনতের সুদহার বেধে দেওয়ায় এক ধরনের চাপ আছে। অনেকেই আছে কল মানি থেকে ধার নিয়ে ব্যাংক চালানোর চেষ্টা করবে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর লক্ষমাত্রা পূরণের বিষয় থাকে। বছরের শেষ সময়ে গত বছরের এই সময়ে করোনা মহামারির কারণে ব্যাংকগুলো ব্যবসা করতে পারেনি।
জনতা ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ঋণের চাহিদা বাড়ছে। সাধারণ বড় আমানত থাকা ব্যাংকগুলো মানি মার্কেটে বিনিয়োগের চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিনড়ব বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করছে। এতে মানি মার্কেটে তারল্যের সংকট দেখা দেওয়ায় এর বিনিময় রেট বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার মানি মার্কেটে ব্যাংকগুলোর টাকার চাহিদা ছিল ব্যাপক। এ দিন ব্যাংকগুলোর লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের ন্যায় হলেও মার্কেট রেট গড়ে ৪ শতাংশের বেশি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।