পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর)। সারা দেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিবসটি পালিত হবে। গাউসুল আজম বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর ওফাত দিবস বিশ্বের মুসলমানদের কাছে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম নামে পরিচিত।
‘ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ, যার অর্থ এগারো। ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে রবিউস সানি মাসের এগারো-এর ফাতেহা শরিফকে বোঝায়। এই পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম শরিফ ইমামুল আউলিয়া পীরানে পীর গাউসুল আযম দস্তগীর হযরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর স্মরণে পালিত হয়।
পবিত্র ফাতেহা-ই- ইয়াজদাহম ১৪৪৩ হিজরী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) এর জীবন ও কর্ম” শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সৈয়দ এমদাদ উদ্দিন। সভাপতিত্ব করবেন দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার।
উল্লেখ্য, বড়পীর আবদুল কাদির জিলানি ৪৭০, মতান্তরে ৪৭১ হিজরি সালের পয়লা রমজান ইরাকের বাগদাদের জিলান নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম সাইয়েদ মহিউদ্দিন আবু মুহাম্মদ আবদুল কাদির আল-জিলানি আল হাসানি ওয়াল হুসাইনি।
বাবার দিক থেকে তিনি হজরত আলী (রা.)-এর ১১তম আর মায়ের দিক থেকে ১৮তম বংশধর। তিনি ছিলেন কাদেরিয়া তরিকার প্রবর্তক, শরিয়ত ও তরিকত জগতের মহাসম্রাট, যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুফাসসির, ফকিহ এবং দার্শনিক। তাঁর শিক্ষার পেছনে রয়েছে মায়ের অবদান। তাঁর মায়ের পরামর্শে ৪৮৮ সনে ১৮ বছর বয়সে বাগদাদে রওনা হন।
বাগদাদে গিয়ে তিনি শায়েখ আবু সাইদ ইবনে মুবারক মাখজুমি হাম্বলি, আবুল ওয়াফা আলী ইবনে আকিল ও আবু মুহাম্মদ ইবনে হুসাইন ইবনে মুহাম্মদ (রহ.)-এর কাছে ইলমে ফিকাহ, শায়েখ আবু গালিব মুহাম্মদ ইবনে হাসান বাকিল্লানি, শায়েখ আবু সাইদ ইবনে আবদুল করিম ও শায়েখ আবুল গানায়েম মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে মুহাম্মদ (রহ.) প্রমুখের কাছে ইলমে হাদিস এবং শায়েখ আবু জাকারিয়া তাবরেয়ি (রহ.)-এর কাছে সাহিত্যের উচ্চতর পাঠ লাভ করেন। বড়পীর অল্প বয়সেই মাদরাসার পরীক্ষা দিয়ে শ্রেষ্ঠ সনদ অর্জন করেন। মাত্র নয় বছর শিক্ষা অর্জন করে ১৩টি বিষয়ের ওপর সনদ লাভ করেন।
বড়পীর আবদুল কাদির জিলানি (রহ.) মহান আল্লাহর বাণী এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর কথামালা মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দীনের প্রচার ও প্রসার করেন। তাঁর কথা ছোট বড় ধনী-গরিব সবাই শুনত এবং সে অনুযায়ী আমল করত। বড়পীরের মাধ্যমেই ইসলাম আগের অবস্থায় ফিরে এসেছিল। এজন্যই তাঁর উপাধি ছিল মুহিউদ্দিন।
বড়পীর আবদুল কাদির জিলানি (রহ.) অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন। যা বর্তমানে বিভিন্ন দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব গ্রন্থের মধ্যে ‘ফতহুল গায়েব গুনিয়াতুত তালেবিন’, ‘ফতহুর রব্বানি’, ‘কালিদায়ে গাওসিয়া’ উল্লেখযোগ্য। মহান এই সুফি হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি মৃত্যুবরণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।