পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : শিবপুরের কয়েকটি গ্রামে ইঁদুরের উপদ্রব আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। সব্জি মাচার গেছো ইঁদুর এখন আমন ধানের ক্ষেতে হানা দিতে শুরু করেছে। রাতের বেলায় শত শত ইঁদুর আমন ক্ষেতে হানা দিয়ে ধানের ডিগ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। চাষীরা বিষটোপ এবং ফাঁদ পেতেও ইঁদুর মারতে পারছে না। ইঁদুরের উপদ্রবে কৃষককুল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলছে শিবপুর উপজেলার ইটনা, চাঁনপাশা, তেলিপাড়া, রামপুর, গলইকান্দা, কবিরপুর, নোয়াবাদ ও আশপাশের গ্রামসমূহে। আমন চাষীরা জানিয়েছে, এসব গ্রামসমূহে অধিকাংশ অগ্রাণী ধান ক্ষেতের চারাই এখন থোরপেটা। অর্থাৎ ধানের চারায় কাচথোর পড়েছে। কোন কোন ক্ষেতে থোর বেরিয়ে গেছে। আবার কোন কোন ক্ষেতের ধানে সোনা পড়তে শুরু করেছে। ক্ষেতগুলোকে এই অবস্থায় নিতে কৃষকদের ব্যাপক পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। হাল চাষ, সার প্রয়োগ, চারা ক্রয়, চারা লাগান, পরিচর্যা ইত্যাদি বাবদ এক বিঘা ক্ষেতে খরচ পড়েছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখন কৃষকের স্বপ্ন অগ্রাণী ধান কেটে বাড়ি নেয়া। এই মুহূর্তে শত শত ইঁদুর কৃষকের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। দিনের বেলা চাষীরা ক্ষেত পরিচর্যা করে বাড়ি ফিরছে। আর রাতের অন্ধকারে শত শত গেছো ইঁদুর ক্ষেতে ঢুকে ধানের চারা কেটে সর্বনাশ ঘটাচ্ছে। তারা জানিয়েছে ইঁদুরের আক্রমণ থেকে কোন ক্ষেতই রেহাই পাচ্ছে না। ইঁদুরগুলো পানির উপর দিয়ে সাঁতরে গিয়ে বুকের নিচে ধানের চারা ফেলে মাঝখান থেকে কেটে দিচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছে. এক একটি ইঁদুর বড় বিড়ালের চেয়েও আকারে বড়। এসব ইঁদুর বসবাস করে সাধারণত এলাকার গাছ-গাছালি এবং শাকসব্জির মাঁচায়।
মাচার সব্জি খেয়ে তারা জীবন ধারণ করে থাকে। এ বছর অতি বৃষ্টিজনিত কারণে মাচায় সব্জি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গেছো ইঁদুরদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। যার ফলে ইঁদুররা সব্জি না পেয়ে আমন ধান ক্ষেতে হানা দিয়েছে।
চাষীরা জানিয়েছে, আমন ধানের কাঁচথোরের নিচের অংশ খেতে খুবই মিষ্ট। ইঁদুরেরা কাঁচথোরের এই নিচের অংশটি খেতে খুবই ভালবাসে। এবার সব্জির অভাবে ঈদুরগুলো আমন ধান ক্ষেতে এই খাবারগুলোকেই বেছে নিয়েছে। যার জন্য ইঁদুরেরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমন ক্ষেতে আক্রমণ করছে। রাত ১২টার দিকে মানুষ চলাচল বন্ধ হলে ইঁদুরেরা জমিতে হানা দেয়। ভোর পর্যন্ত তারা তাÐব চালিয়ে ক্ষেতগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়ে চলে যায়। ইঁদুর মারার জন্য বিভিন্ন প্রকার বিষটোপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু একটি ইঁদুরও বিষটোপ খাচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে ছোট বড় অসংখ্য ফাঁদ পাতা হয়েছে। কোন ফাঁদের খাবারও খাচ্ছে না। ফাঁদে আটকা পড়ছে না একটি ইঁদুরও। এ অবস্থায় কৃষকরা ইঁদুরের উপদ্রবে মহাবিপাকে পড়েছে। এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ইঁদুর খুবই চালাক প্রাণী। এরা খাবার দিলেই খেতে চায় না। তাদের যাত্রা পথে হঠাৎ কোন খাবার দেখলে ইঁদুরেরা সবাই মিলে মিটিং করে। এরপর একটি ইঁদুরকে খাবার খেতে নির্দেশ দেয়। প্রথমে একটি ইঁদুর খাবার খায়। এতে ইঁদুর মারা গেলে বা অসুস্থ হলে কোন ইঁদুরই খাবার খেতে চায় না। শুধু তাই নয় এদের চলার পথে নতুন কিছু দেখলে ওরা সে পথ দিয়ে হাঁটতেও যায় না। ইঁদুর মারতে হলে ইঁদুরের চেয়ে বেশি বুদ্ধি খাটিয়ে বিষটোপ কিংবা ফাঁদ পাততে হয়। ইঁদুররা বিষটোপ না খাওয়া বা ফাঁদের খাবার গ্রহণ না করার কারণ হতে পারে অধিকতর সুস্বাদু খাবার তারা পেয়ে গেছে। হতে পারে সেটা আমন ধানের কাচথোরের নিচের মিষ্ট অংশ।
নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক লতাফত হোসেন এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, অতি শীঘ্রই সেখানে লোক পাঠিয়ে ইঁদুর মারার পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের জানানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।