Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফাঁসি কার্যকর-আপিল অকার্যকর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

চুয়াডাঙ্গার আলোচিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া আব্দুল মোকিম এবং গোলাম রসূল ঝড়ুর পক্ষে করা নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পূর্ণাঙ্গ আদেশে এ বিষয়ে একটি ‘গাইডলাইন’ থাকবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
এ সময় সরকারপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া দুই আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. আসিফ হাসান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আদালতে না বসায় আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ বেঞ্চ নট টু ডে (আজ নয়) বলে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আদেশ দেন গতকাল।
মামলায় জেল আপিল নিয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী রেগুলার (নিয়মিত) আপিল শুনানি না করায় নিজেদের ভুলের কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। প্রধান বিচারপতি এ সময় বলেন, মৃত্যুদণ্ডের মামলা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখে শুনে রায় দেয়া হয়। এ বিষয়ে আদালতের উপর দোষ দেয়ার চেষ্টা দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি বলেন, আমার সময়ে ২০০৯ সালের থেকে সব মৃত্যুদণ্ডের মামলার আপিল শুনানি হয়েছে। ২০১৩ সালের মামলা কেন আপনি আদালতে আনেননি। পরে ওই আইনজীবী জানান, আসামির পরিবার গরিব হওয়ায় তারা সঠিকভাবে কোনো বিষয় অবহিত করেননি। পরে আদালত মামলাটি অকার্যকর ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গায় হত্যা মামলায় আপিল নিষ্পত্তির আগেই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় সংবাদ মাধ্যমে। পরে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল জানান এটি সঠিক নয়। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই দণ্ড কার্যকর হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামি মোকিম ও ঝড়ুর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়।
১৯৯৪ সালের ২৮ জুন একই এলাকার সাবেক মেম্বার মো. মনোয়ার হোসেন খুন হন। ওই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই মো. অহিমউদ্দিন বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে মোকিম ও ঝড়ুর নাম আসে। পরে ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ মামলার বিচারে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, দুইজনকে যাবজ্জীবন ও অপর আসামিদের খালাস দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, একই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসূল ঝড়ু। পরে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুসারে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে। মামলার ডেথ রেফারেন্স নম্বর ছিল ৩৯/২০০৮। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই মামলার রায় ঘোষণা করেন। বাকি আসামিদের খালাস দেন হাইকোর্ট। পরে মোকিম ও ঝড়ুর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর বলেন, মোকিমের পরিবার জানায়, ২০১৭ সালে মোকিমের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এমনকি অপর আসামি ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর হয়েছে। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন সই করা একটি নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর মামলায় বিচারিক আদালত, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। এরপর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে আসামি দু’জনের ফাঁসি হয়। এদিকে যশোর কারা কর্তৃফক্ষ থেকে জেলার তুহিন কান্তি খান সাংবাদিকদের জানান, খুলনা অঞ্চলের আওতাধীন যশোর কারাগারে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তাদের আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্য ছিলেন, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (বর্তমান প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আপিল অকার্যকর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ