Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাসভাড়ায় গণঅসন্তোষ

যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় চলছে সিএনজিচালিত বাসে ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস থাকবে না : মালিক সমিতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি রাজধানী ঢাকার কর্মজীবী মানুষকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। করোনাকালের অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে যখন মানুষ চেষ্টা করছে; তখন বাসভাড়া বৃদ্ধিতে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়ে গেছে নাগরিক জীবন। বিশেষ করে অল্প বেতনে চাকরি করেন, সীমিত আয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে হয় তারা পড়ে গেছেন বিপাকে। তাদের অভিযোগ, জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। গণপরিবহনে ভাড়ার টাকার যোগান দিতে তাদের অন্য খরচ কর্তন করতে হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ক্লগ, টুইটার এমনকি টিভির টকশোগুলোতে গণপরিবহনের অযৌক্তিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ করা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য বাস মালিক সমিতি ও বিআরটিএ’র কিছু অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেট করে বাসভাড়া বাড়িয়েছেন। বাস্তবতার সঙ্গে এসি রুমে থাকা ওই কর্মকর্তাদের কোনো ধারণা নেই।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তেলের মূল্য ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর বাসভাড়া ২৬ শতাংশ এবং লঞ্চভাড়া ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি অবাস্তব ধারণা থেকে করা হয়েছে। কারণ তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বাসভাড়া শতকরা ৩ থেকে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি হতে পারে। কিন্তু বাস মালিকদের সুবিধামতো বিআরটিএ কিলোমিটারপ্রতি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। তারপরও রাজধানীর বাসগুলোতে সেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে আরো বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সিএনজিচালিত বাসে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গণঅসন্তোষ চরম পর্যায়ে চলে গেছে। রাজধানীতে প্রতিদিন বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মানববন্ধন হচ্ছে। বাসের যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার, কন্ডাক্টরদের ঝগড়া-মারামারি হচ্ছে। বিআরটিএ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করছে, স্টিকার লাগিয়ে সিএনজি ও গ্যাসের বাস চেনার ব্যবস্থা করেছে, বাস মালিক সমিতি দাবি করছে তারা বেশি ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পুনর্নিধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং যাত্রী ভোগান্তি থেকে বিরত না থাকলে, দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফলে জনঅসন্তোষ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। গতকাল বেশ কয়েকজন বাসযাত্রী জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক দেশে বাস করেও তারা জিম্মিদশায় পড়ে গেছেন। এভাবে নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হলে গণবিস্ফোরণে শঙ্কা বেড়ে যায়।

জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে দেশজুড়ে সাধারণ জনগণ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তেলের আগুন বাজারে লেগে গেছে। পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এর মধ্যে পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি কর্মজীবী মানুষকে বিপাকে ফেলেছে। আগেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হতো। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি বাসে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সিএনজিচালিত বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বুয়েটের এক জরিপে বলা হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী শতকরা ৯৫ ভাগ বাস সিএনজিচালিত। ফলে এসব বাসের ভাড়া বৃদ্ধির কথা নয়। কিন্তু গতকাল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দাবি রাজধানীতে সিএনজিতে চলা বাসের সংখ্যা মোট বাসের মাত্র ৩.২৭ শতাংশ। অথচ গতকাল বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার লাগানো বাসে সিএনজি ভরানো হচ্ছে।

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ধারা ৮০ অনুসারে, গণপরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় করা একটি অপরাধ। আইন অমান্যকারীকে অনধিক ১ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। ঢাকার রাস্তায় ‘ওয়েবিল’-এর অজুহাতে বিআরটিএ নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া এড়িয়ে চলছে বেশ কিছু পরিবহন। ওয়েবিল বলতে বোঝায় কোনো বাসে নির্দিষ্ট দূরত্বে চড়ে যাওয়া যাত্রীদের তালিকা, যা নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর পরীক্ষা করা হয় এবং সেই দূরত্বের জন্য নির্দিষ্ট ভাড়া বেঁধে দেন পরিবহন মালিকেরা। এই ওয়েবিলের নামে আগে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।

‘ডিজেলচালিত’ বাসে গ্যাস ভড়ানো রহস্য : ডিজেলচালিত বাসভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও গ্যাসে চলে এমন বাসভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। বিআরটিএ বাসে ডিজেলচালিত ও গ্যাসচালিত বাসে স্টিকার লাগানো বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু ‘গ্যাসচালিত’ বাসগুলোতে ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার লাগিয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। গাবতলীর এসপি ফিলিং স্টেশন। গাড়ির সামনে ‘ডিজেলচালিত’ লেখা স্টিকার লাগানো। গাবতলী থেকে ডেমরাগামী অছিম পরিবহনের ঢাকা-মেট্রো-ব ১১-৮৩২৬ ও ঢাকা-মেট্রো-ব ১১-৮৩০৯ নম্বরের দু’টি বাস। বাস দু’টির সামনের গ্লাসে ‘ডিজেলচালিত’ লেখা স্টিকার টানানো থাকার পরও পাম্পে গিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) নেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে এ দৃশ্য দেখে ওই ফিলিং স্টেশনে জিজ্ঞাসা করা হলে সেখানকার এক কর্মী জানান, বাস দুটোর একটি ১১ দশমিক ৫৪ লিটার ও আরেকটি ১১ লিটার সিএনজি নিয়েছে। জ্বালানি নিয়ে গাবতলী মোড় ঘুরেই বাস দু’টি যাত্রী নেয়া শুরু করে।

অছিম পরিবহনে ঢাকা মেট্রো-ব ১১-৮৩২৬ নম্বরের বাসটির চালকের সহকারী এরশাদ বলেন, ভাড়া বেড়েছে ৫ টাকা। গাবতলী থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক ২৫ টাকা ছিল, এখন ৩০ টাকা হয়েছে। এভাবে সব স্টেশনে ৫ টাকা বেড়েছে। বাস কিসে চলে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, স্টিকার লাগানো আছে, দেখেন সামনে। বাস চলে ডিজেলে। কিছুক্ষণ আগেই পাম্প থেকে সিএনজি নেয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে চালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা কইরেন না। বাস থেকে নামেন।

এমন চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে। ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর সব গ্যাসচালিত বাসের ভাড়াও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করলে মালিকদের পোষ্য গুন্ডা বাহিনী যাত্রীদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।

এখন গ্যাসে চালিত বাস নিয়েও বাস মালিকদের সংগঠন ভুয়া তথ্য দিচ্ছে। বিআরটিএ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, ঢাকার বিভিন্ন রুটে বর্তমানে যত বাস চলাচল করে তার ৯৫ শতাংশই জ্বালানি হিসেবে সিএনজি ব্যবহার করে। ডিজেলে চলে মাত্র ৫ শতাংশ বাস। আর বুয়েটের গবেষক দল গবেষণা করেও তথ্য দিয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ৯৫ শতাংশ বাস সিএনজি। অথচ বাস মালিক সমিতি দাবি করছে ঢাকায় ১২০ কোম্পানির ৬ হাজার বাস চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৯৬টি বাস সিএনজিচালিত। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দাবি সিএনজিতে চলা বাসের সংখ্যা মোট বাসের মাত্র ৩.২৭ শতাংশ।

রাজধানতে সিটিং সার্ভিস থাকবে না : ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সিটিং সার্ভিস এবং গেইট লক সার্ভিস থাকবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ। রাজধানীতে আর ওয়েবিলে বাস চলবে না। গতকাল রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। বাসভাড়া পুনর্নির্ধারণ ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। এনায়েত উল্যাহ বলেন, কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বলা হচ্ছে, ঢাকা এবং দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সিএনজিচালিত। এসব বাসে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১২০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৩ কোম্পানির ১৯৬টি বাস সিএনজিচালিত পেয়েছি। এটি মোট গণপরিবহনের মাত্র ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। গ্যাসে চলা বাসগুলো হলোÑ গ্রেট তুরাগ ট্রান্সপোর্টের ৪০টি, অনাবিল সুপার ৪০টি, প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহন ১২টি, শ্রাবণ ট্রান্সপোর্ট ৩০টি, আসিয়ান ট্রান্সপোর্ট ২০টি, মেঘালয় ট্রান্সপোর্ট ৫টি, হিমালয় ট্রান্সপোর্ট ১৪টি, ভিআইপি অটোমোবাইলের বাস ২টি, মেঘলা ট্রান্সপোর্ট ২৭টি, শিকড় পরিবহনের ৮টি, বিকল্প অটো সার্ভিস ১টি, গাবতলী লিংক মিনিবাস সার্ভিস ১১টি এবং ৬ নং মতিঝিল বনানী কোচ ২১টি। এনায়েত উল্যাহ বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর আগে ঢাকায় গ্যাসচালিত গাড়ি চলাচল করত। এখন এসব বাসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

পরিবহন মালিক সমিতি জানায়, তাদের পক্ষ থেকে সিএনজিচালিত ও ডিজেলচালিত বাসে স্টিকার যুক্ত করে দেয়া হবে। কোনো ধরনের সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিলের মাধ্যমে বাস চলবে না। আমরা তিন দিন সময় দেবো। এরপর কোনো গেটলক ও সিটিং সার্ভিসের বাস চললে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘চিটিং’ বন্ধে মানববন্ধন : বাসভাড়া কমানোর দাবিতে গতকাল রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে তেলের বৃদ্ধি করা দাম কমানো এবং বাসভাড়া কমানোর দাবি জানানো হয়। গণপরিবহন মালিকদের ‘অনৈতিকতা’ সিন্ডিকেট করে যাত্রীদের হয়রানি এবং জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ জানানো হয়। সবচেয়ে বড় কর্মসূচি পালিত হয় সায়েন্স ল্যাব মোড়ে। সেখানে এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিতসহ সিটিং সার্ভিসের নামে ‘চিটিং’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনালকডাউনের অপূরণীয় ক্ষতির পর দেশ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, ঠিক তখন সরকার মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছে বাড়তি তেলের দাম। তার সঙ্গে বিআরটিএ ও বিআইডব্লিউটিএ পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এখন সরকারি লাইসেন্স নিয়ে জনগণের পকেট কাটছে পরিবহনগুলো। প্রতিটি পরিবহন নানা অজুহাতে অনুমোদিত ভাড়ার কয়েক গুণ বেশি আদায় করছে। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, গণপরিবহনগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে নানা অজুহাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে এসব পরিবহন দাঁড়িয়েও অসংখ্য যাত্রী নিচ্ছে। ওয়েবিল দেখিয়ে কিলোমিটারের নির্ধারিত ভাড়ার ধার ধারছে না।

এ সময় পরিবহন নৈরাজ্য বন্ধে সংগঠনের পক্ষে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল। দাবিগুলো হলোÑ নগরী থেকে সিটিং সার্ভিস বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বাড়ানো পরিবহন ভাড়া পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ফাঁকফোকড় না রেখে পরিবহনভিত্তিক সুনির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে, তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগে ভাড়া বাড়ানো গ্যাসের গাড়িগুলো চিহ্নিত করে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। নগর ও দূরপাল্লার পরিবহনে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে নজরদারি করতে হবে। চুক্তিতে গাড়ি চালানো এবং ওয়েবিলে ভাড়া আদায় বন্ধ করতে হবে এবং সব নগর পরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান : ডিজেলচালিত বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় ঠেকাতে রাজধানীতে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। বিআরটিএ এর আগে জানিয়েছিল ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে। গতকাল গাবতলী, শাহবাগ, মিরপুর, আরামবাগে ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখা গেছে।

শাহবাগ এলাকায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় ৫টি বাসকে জরিমানা করা হয়। অভিযানে ‘স্বাধীন এক্সপ্রেস পরিবহন’-এর একটি বাসকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিআরটিএর নির্বাহী হাকিম শাকিলা বিনতে মতিন সাংবাদিকদের বলেন, মূলত মূল্য তালিকা টানানো হয়েছে কি না, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নিচ্ছে কি না এবং গ্যাসে চালিত বাসে ডিজেলচালিত বাসের মতো বেশি ভাড়া নিচ্ছে কি না তা লক্ষ করা হচ্ছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত ৩০টির মতো গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৫টি গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • MD Mujaheed Chowdhury ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    জনগণকে জিম্মি করা হলো।
    Total Reply(0) Reply
  • Hm Kamran ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    আয় আল্লাহ, জালেমদের ন্যায্য প্রাপ্য বুঝিয়ে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Anwar Hossen Khan ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
    বিআরটি হচ্ছে একটি দুর্নীতিবাজ সংস্থা পরিবহন মালিক তাদের কাছ থেকে যা খুশি তাই আদায় করে নেবে আর দুর্নীতিবাজরা জনগণের স্বার্থ না দেখে পরিবহন মালিকদের স্বার্থ দেখবে এটাই স্বাভাবিক ‌। এই সংস্থা কতটা দুর্নীতিবাজ তার প্রমান সরকার জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়া পরিবহন কিনে আর এই দুর্নীতিবাজরা টাকা খেয়ে পরিবহনগুলোর চুক্তিতে দিয়ে দিচ্ছে নিজেদের ক্ষমতা নাই পরিবহন গুলো পরিচালনা করা তাই জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে জনগণের বিপক্ষে কাজ করা এই প্রতিষ্ঠান রাখার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun Nur Rashid ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    লাভবান মালিক, শ্রমিক, বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে দেখা যেতো মালিক, আর শ্রমিক কেমন গেম খেলতে পারে। একই সুতোয় গাথা।
    Total Reply(0) Reply
  • Ariful Shameem ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    আমরা উন্নত জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছি। তেলের দাম বাড়ে ৫% আমরা বাড়তি ভাড়া দিব লঞ্চ ২৭%/বাস ৩৫%। মগের মুল্লুক।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sohel Rana ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    সরকার ও ধান্দাবাজদের লাভ। আর আমাদের মতো ৩ টাকার বেতনে চাকরি করা লোকের বেঁচে তেকে মরার মতো অবস্থা। না পারবো নিজে খেতে না পারবো মা বাবার জন্য ভালো কিছু কিনতে
    Total Reply(0) Reply
  • Salman Julkarnine ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    এটা সমাধান নয়। মানুষের উপর জুলুম এটা। মানুষের ইনকাম এর চাইতে ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে প্রায়। সব কিছুর দাম বেশি। কয়দিন পর দূর্নীতির আশ্রয় নিবে সাধারণ জনগন ই। আর নিম্নভিত্ত মানুষ না খেয়ে অপরাধী হয়ে উঠবে।।।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি যতদিন থাকবে ততদিন,কিছু বললে লাভ হবে না,তোমরা কি দেখতে পাচ্ছে না যে এক জন প্রধান বিচারপতি পযন্ত এই চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি কাছে পরাজয়,এবং বিদেশে থাকতে হইতেছে,আর তোমরা কি তোমরা সাধারণ জনগন,তোমরা অসন্তোষ হলে কি এই দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতির সরকার তোমাদের কথা শুনবে,তোমরা যদি বাঁচতে চাও রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি চালু কর,জীবন রক্ষা পাবে,অন্যথায় এই দেশে এই দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতির পাওয়ারে সব কিছু চলবে,তোমরা হায় হুতাস করতে পারিবা,ওরা যাই মনে চায় তাই করবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mojibur Rahman ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    নির্বাচীত সরকার বলেই জনগণের কথা মাথায় রেখেছে❗ কতোটা অসহায় আজ আমরা❓
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
    দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি যতদিন থাকবে ততদিন,কিছু বললে লাভ হবে না,তোমরা কি দেখতে পাচ্ছে না যে এক জন প্রধান বিচারপতি পযন্ত এই চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি কাছে পরাজয়,এবং বিদেশে থাকতে হইতেছে,আর তোমরা কি তোমরা সাধারণ জনগন,তোমরা অসন্তোষ হলে কি এই দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতির সরকার তোমাদের কথা শুনবে,তোমরা যদি বাঁচতে চাও রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি চালু কর,জীবন রক্ষা পাবে,অন্যথায় এই দেশে এই দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতির পাওয়ারে সব কিছু চলবে,তোমরা হায় হুতাস করতে পারিবা,ওরা যাই মনে চায় তাই করবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Parvez ১১ নভেম্বর, ২০২১, ৬:৫০ এএম says : 0
    অপেক্ষায় আছি, এ কথা শুনার জন্য, কোন আমলা/মন্ত্রী/সাংসদ এ কথা বলবেন যে, ভাড়া বাড়ানোতে দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং জনগণ খুশী।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১১ নভেম্বর, ২০২১, ৯:৪০ পিএম says : 0
    এদেরকে এই জন্যই বলা হয় নরপিচাশ ওদের মনের মধ্যে কোন মায়াদয়া কিছু নাই আমরা মরে যাচ্ছি আর উনারা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় রাজা রানীর মত পাস করে যদি খাওয়া-দাওয়ার দাম বাড়বে না কেন তারা তো পেতেই থাকবে আর আমরা মরতেই থাকবো ও মুসলমান জেগে ওঠো দেশটাকে স্বাধীন করতে হবে না হলে আমরা সব শেষ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাসভাড়ায় গণঅসন্তোষ

১১ নভেম্বর, ২০২১
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ