পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাখোঁর আমন্ত্রণে ফ্রান্স সফরে গিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার প্যারিসের এলিসি প্যালেসে বৈঠকে গরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, উন্নয়ন, নিরাপত্তা, জলবায়ু ও রোহিঙ্গা সংকটের ইস্যুতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, আগামী বছর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয়পক্ষই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে ফ্রান্সের সরকার ও জনগণের মূল্যবান সমর্থনের কথা উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা খাতে অংশীদারত্ব বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সেই লক্ষ্যে উভয় দেশই সংলাপ ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে, বিশেষ করে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। এছাড়া প্রতিরক্ষা খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহযোগিতা বাড়াতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ। এ বিষয়ে একটি ইচ্ছাপত্র স্বাক্ষরকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে একটি উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের দৃষ্টিভঙ্গি একই। উভয়পক্ষই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রচার এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ সন্ধানে সম্মত হয়েছে।
স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের সুপারিশ পাওয়ায় এদিন বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে ফ্রান্স। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে শ্রম খাতে বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তা বাস্তবায়নে উৎসাহিত করেছে ফ্রান্স। কৃষি, অবকাঠামো, পরিবহন, জ্বালানি, ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতসহ দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও শিল্প অংশীদারত্ব জোরদারে আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেছে তারা।
কথা হয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী প্রেরণের বিষয়েও। এছাড়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মহানুভবতার প্রশংসা করেছে ফ্রান্স। এর কারণে বাংলাদেশের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে বলেও স্বীকার করেছে তারা। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে গুরুত্বারোপ করেছে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ।
এর আগে গতকাল বুধবার ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকীতে যোগ দিতে এবং সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য প্রথমবারের মতো ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণ করতে শেখ হাসিনা লন্ডন থেকে প্যারিস গিয়েছেন।
এছাড়া বুধবার প্যারিসে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকালিন, এয়ারবাসের সিইও গুইলাম ফৌরি এবং ড্যাসল্ট এভিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এরিক ট্র্যাপিয়ার এবং থ্যালেসের প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস কেইন প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি ফরাসি ব্যবসায়িক সংস্থা এমইডিইএফ-এর হাই-প্রোফাইল প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লিও তার সঙ্গে দেখা করেন।
পরে বিকালে তিনি ফরাসি সিনেট পরিদর্শন করেন যেখানে চলমান সিনেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। আজ ১১ নভেম্বর শেখ হাসিনা প্যারিস পিস ফোরামে যোগ দেবেন।
পরে তিনি ইউনেস্কো সদর দফতরে ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখান থেকে তিনি এলিসি প্যালেসে যাবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর তার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দিবেন।
আগামীকাল ১২ নভেম্বর, শেখ হাসিনা প্যারিস পিস ফোরামে যাবেন এবং সাউথ-সাউথ এবং ত্রিদেশীয় সহযোগিতার উপর একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন। পরে তিনি ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিতে ইউনেস্কো সদর দফতরে যাবেন এবং সেখানে তিনি তার ভাষণ দেবেন।
তিনি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মানে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনা প্যারিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। বিকাল ৪টায় (স্থানীয় সময়) তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে চার্লস দ্যা গল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন এবং ঢাকার স্থানীয় সময় ১৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন।
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কপ ২৬-এ ওয়ার্ল্ড লিডারস সামিট ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে গ্লাসগো থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান। গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দর নগরী গ্লাসগো পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।