পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বুধবার খুলে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবাসিক হল। অন্তত এক ডোজ করোনার টিকা নেওয়ার শর্তে এদিন সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। দেশে করোনার সংক্রমণ দেখা দিলে গত বছরের মার্চে বুয়েটের আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে চলমান রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে এক ডোজ করোনা টিকা নেয়ার সনদ ও হলের বৈধ সনদ প্রদর্শন করে আবাসিক হলগুলোতে প্রবেশ করেন। আহসানউল্লাহ হল, তিতুমীর হল, শেরে বাংলা হল, সোহরাওয়ার্দী হল, ডা. এমএ রশীদ হলসহ বিভিন্ন হল পরিদর্শন করে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর খোলায় শিক্ষার্থীদের বরণে হলগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। হলগুলোর প্রধান ফটকগুলো ফুল দিয়ে সাজানো হয়। হল গেইটে স্থাপন করা হয়েছে হাত দোয়ার বেসিন, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য রাখা হয় হ্যান্ড সেনিটাইজার। শিক্ষার্থীদের বরণে হলের প্রভোস্ট, হাউজ টিউটরসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশপথে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানান। শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করলে তাদের ফুল, চকলেট, এবং মাস্ক দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন পর হলে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আহসানউল্লা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সৌরভ ইনকিলাবকে বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলে ফিরতে পেরে খুবই আনন্দ অনুভব করছি । করোনাকালে দীর্ঘদিন বাড়িতে থেকে বন্ধুদের অনেক মিস করেছি। এখন আবার তাদের সাথে দেখা হবে, সেই পুরনো আড্ডার আসর আবার জমবে, পুরনো স্মৃতিগুলো আবার বর্তমান হবে! সবমিলিয়ে খুবই রোমাঞ্চ অনুভব করছি।
একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আখিরুজ্জামান আতিক বলেন, করোনার কারনে দীর্ঘদিন বাসায় থেকেছি । হলে থাকার যে মজা সেটাকে আসলে অনেক বেশি মিস করেছি। তাই এখন হলে আসতে ফেরে অনেক বেশি আনন্দিত। এছাড়াও আমরা যারা এতদিন ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করেছি তাদের জন্য হল খোলাতে অনেক বেশি উপকার হয়েছে।
ড. এমএ রশিদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. আরাফাত উদ্দিন সাকিব বলেন, হলগুলোকে এতো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে দেখেই খুব ভালো লাগছে, মনে হচ্ছে কোনো উৎসবে এসেছি। এতোদিন পর বন্ধুদের সাথে দেখা হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এখন শুধু অফলাইন ক্লাসই একমাত্র প্রত্যাশা। আশাকরি, বুয়েট কতৃপক্ষ শীঘ্রই অফলাইন ক্লাস শুরু করার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আহসানউল্লাহ হলের প্রভোস্ট ড. আল নকীব চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের বরণ করার জন্য আমরা সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করেছি। আমরা তাদেরকে চকলেট,মাস্ক দিয়ে বরণ করে নিয়েছি। স্বাস্থবিধি মানার ক্ষেত্রে আমরা কোনরূপ ঘাটতি রাখিনি। যে সকল স্থানে শিক্ষার্থীদের গ্যাদারিং বা জমায়েত হয়ে থাকে সেসকল জায়গায় আমরা সিটের দূরত্ব বাড়িয়েছি। হলের সামনে নতুন করে বেসিন বসিয়েছি। ক্যান্টিন বয় থেকে শুরু করে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার টিকা নিশ্চিত করেছি। যে সকল শিক্ষার্থী এনআইডি জটিলতায় এখনো করোনার টিকা নিতে পারেনি তাদের জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি যাতে করে বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের করোনার টিকা দেওয়া যায় । এছাড়াও শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় আমরা প্রতিটা রুম থেকে তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে রুমগুলো পরিস্কার করে রেখেছি।
তিতুমীর হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মোহাম্মদ আবু সায়েম বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সচেতন, তারা স্বাস্থ্যবিধি ও হলের নিয়ম মেনে হলে অবস্থান করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এতোদিন পর শিক্ষার্থীদেরকে ক্যাম্পাসে দেখে আমরাও আনন্দিত। তাদেরকে দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে।
হল খোলার বিষয়ে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের থেকে আগেই অনলাইনে তাদের করোনার ভ্যাক্সিন নেওয়ার তথ্য নিয়েছি আমরা। যারা তথ্য জমা দিতে পারে নি তাদের থেকে সরাসরি টিকার সনদ দেখে তারপর হলে উঠিয়েছি। আগামী ১৩ নভেম্বর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।