Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে ভগ্নিপতিকে খুন করে থানায় শ্যালক!

আনোয়ারায় যুবক নিহত

প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্বজনের হাতে খুনের ঘটনা চলছেই
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে স্বজনের হাতে স্বজন খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। স্ত্রীর হাতে স্বামী, স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের পর এবার ভগ্নিপতিকে খুন করে লাশ বস্তাবন্দি করে ঘরে তালা মেরে দিয়েছে শ্যালক। বাবলু ধর (২১) নামে ওই যুবক এরপর থানায় হাজির হয়ে ঘটনা জানায় পুলিশকে। পুলিশকে সাথে নিয়ে এসে তালা খুলে লাশ উদ্ধারে সহযোগিতাও করেছে সে। প্রথমে ঘটনা চেপে গেলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মুখ খুলে শ্যালক।
তার স্বীকারোক্তি বোনের সাথে পারিবারিক কলহের জেরে ভগ্নিপতিকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে রাখে সে। তার আগে বোন ও তার দুই সন্তানকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় বাবলু। গোপনে লাশ দাহ করার প্রস্তুতিও ছিল তার। তবে শেষ পর্যন্ত ঘটনা চেপে রাখতে পারেনি সে। চাঞ্চল্যকর লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার টেরিবাজার এলাকায়।
শ্যালকের স্বীকারোক্তির পর টেরিবাজারের একটি বাসা থেকে গতকাল (সোমবার) সকালে অঞ্জন ধরের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আফিনী গলির পূজার মাঠের পাশে একটি ভবনের ৫ম তলার ওই বাসায় অঞ্জনের সাথে থাকতো বাবলুও। অঞ্জনের গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার জলদি। তিনি হাজারী গলির একটি স্বর্ণের দোকানের কারিগর ছিলেন।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন জানান, বোনের সঙ্গে দাম্পত্য কলহের কারণে বাবলু তার ভগ্নিপতিকে খুন করেছেন বলে জানিয়েছেন। অঞ্জনের সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে ও তিন বছর বয়সী একটি ছেলে আছে বলে জানান তিনি।
বাবলু পুলিশকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময়ে অঞ্জন তার বোনকে নির্যাতন করতেন। ক্ষোভের কারণে রোববার সকালে তার বোন দুই সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পর অঞ্জনকে খুন করে তিনি বাসায় তালা দিয়ে চলে যান।
এদিকে লাশ উদ্ধারের সময় অনুপস্থিত থাকলেও দুপুরে বাসায় ফিরেছে স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর খবরে তিনি এবং তার দুই সন্তান এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর এ অবস্থায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তাকেও থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের ধারণা, খুনের সাথে স্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তবে বাবলু দাবি করেছে সে একাই পরিকল্পিতভাবে তার ভগ্নিপতিকে খুন করেছে। তার বোন এ ব্যাপারে কিছুই জানে না।
এদিকে নগরী ও জেলায় সাম্প্রতিককালে স্বজনের হাতে স্বজন খুনের বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। ১১ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালী থানার কাটাপাহাড় এলাকা থেকে মরিয়ম বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে পাথর ছুড়ে হত্যা করে তার স্বামী মোঃ রুবেল হোসেন (৩২)। এর আগে স্বামীকে হত্যা করে বাসায় রেখে সীতাকু- থানায় হাজির হন খোদেজা বেগম (৩০) নামে এক নারী। একই দিন নগরীর আগ্রাবাদ মৌলভী পাড়ায় স্ত্রীকে খুন করে লাশ বাসায় রেখে পালিয়ে যান স্বামী। তারও আগে নগরীর গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় মাকে কুপিয়ে খুন করে ছুরি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ছেলে। এর আগে হাটহাজারীতে পুত্রের হাতে খুন হন পিতা। সম্প্রতি স্বামীর হাতে কয়েকটি স্ত্রী খুনের ঘটনা ঘটে। তার আগে চান্দগাঁও এলাকায় মাকে খুন করে এক পুত্র।
গত কয়েক বছরে সীতাকু-, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও সাতকানিয়ায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুনের একাধিক ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পারিবারিককলহ, মাদকের ভয়াল আগ্রাসন সেইসাথে নৈতিকতার অবক্ষয় এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে স্বজনের হাতেই প্রাণ যাচ্ছে স্বজনের।
আনোয়ারায় যুবক নিহত
বিদেশে নিয়ে ভালো চাকরি না দেয়ার জের ধরে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেকজন। রোববার গভীর রাতে উপজেলার জুঁইদ-ী ইউনিয়নের খুরুশকুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কফিল উদ্দিন (৩০) ও আহত মো. হাশেম (৩৩) ওই এলাকার বাসিন্দা। হতাহত এবং গ্রেপ্তার সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। হামলার ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জানে আলম ও ইউসুফ নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আনোয়ারা থানার ওসি দুলাল মাহমুদ জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলেন, নিহত ব্যক্তি ও হামলাকারীরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিল। তারা একই গ্রুপের ছিল ও একসঙ্গে চলাফেরা করতো। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রামে ভগ্নিপতিকে খুন করে থানায় শ্যালক!
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ