Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক ধারা

প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাড়ে তিন মাসে ঘাটতি হাজার কোটি টাকা
রফিকুল ইসলাম সেলিম : নেতিবাচক ধারায় রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ে। অর্থবছরের প্রথম সাড়ে তিন মাসে রাজস্ব ঘাটতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। জুলাই থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৮২২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৮ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। এ নি¤œমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী এ প্রতিষ্ঠান এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এ নেতিবাচক ধারাকে সাময়িক উল্লেখ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার শওকত আলী সাদী গতকাল (সোমবার) ইনকিলাবকে বলেন, ঈদের লম্বা ছুটি এবং এর পরপর প্রায় সপ্তাহজুড়ে প্রাইম মুভার ও ট্রেইলর ধর্মঘটের কারণে রাজস্ব আদায় কিছুটা কমে গেছে। বন্দরের কার্যক্রম সচল হওয়ায় গত কয়েকদিনে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দিনে রাজস্ব আদায় আরও বেড়ে যাবে। বিশ্ববাজারে বেশকিছু আমদানি পণ্যের দাম নি¤œমুখী হওয়ায় রাজস্ব আদায় কিছুটা কমেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমদানি বাড়বে। আর তখন রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে। বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাস্টম হাউস সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অতিরিক্ত কমিশনার।
গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ৩১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে। তার আগের বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১০ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৬২২ কোটি টাকা।
গেল সাড়ে তিন মাসে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি-রফতানি বাড়লেও রাজস্ব আদায় সে অনুপাতে বাড়ছে না। এর মূল কারণ হলো বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে পণ্যের মূল্য কমে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী গেল অর্থবছরে আমদানি পরিমাণ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ শতাংশ। বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে পণ্যের মূল্য কমে যাওয়ায় গড়ে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র ৬ শতাংশ।
গত অর্থবছরে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। তার আগের অর্থবছরে এ মূল্য ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ পণ্য আমদানি ১ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন বাড়লেও শুল্কায়ন মূল্য বেড়েছে ১১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ।
গেল অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ১ হাজার ২৪২টি কন্টেইনার জাহাজ বেড়েছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১২১টি বেশি। অর্থাৎ জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে ১১ শতাংশ। একই অর্থবছরে ভাল্ক জাহাজ এসেছে ১ হাজার ৬৩৩টি। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৮৮টি বেশি। ভাল্ক জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে ১২ শতাংশ। সব মিলে চট্টগ্রাম বন্দরে গেল অর্থবছরে ২ হাজার ৮৭৫টি জাহাজ ভিড়েছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০৯টি বেশি। কর্মকর্তারা আশা করছেন, আমদানির সাথে এবার জাহাজ আগমনের হারও বাড়বে।
সেপ্টেম্বরে ঈদুল আজহার প্রায় এক সপ্তাহ ছুটি ছিল। ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর শুরু হয় প্রাইম মুভার-ট্রেইলর ধর্মঘট। এ ধর্মঘট চলে প্রায় এক সপ্তাহ। ধর্মঘটের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন ও খালাসে অচলাবস্থা নেমে আসে। বন্দরে দেখা দেয় ভয়াবহ জাহাজ ও কন্টেইনার জট। পরে ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও অচলাবস্থা অব্যাহত থাকে আরও কয়েকদিন। আর এ কারণে পণ্য খালাসে ধীরগতি নেমে আসায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক ধারা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ