Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়

কাল পর্যন্ত কোনো টিকিট নেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। ফলে নিরুপায় যাত্রীরা ভিড় করছে রেলস্টেশন ও বিআরটিসি বাস কাউন্টারে। চাহিদার তুলনায় বিআরটিসি বাস অপ্রতুল হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেড়েছে কমলাপুরে।
এদিকে দুপুরের পর থেকে কাউন্টারগুলোতে কোনো টিকিট দেয়া হয়নি। মাইকে ঘোষণা দিয়ে বারবার জানানো হয় আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত কোনো টিকিট নেই। আজকের জন্য লোকাল ও কমিউটার ট্রেনগুলোই শেষ ভরসা। এসব ট্রেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছে যাত্রীরা।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই কমলাপুর স্টেশনের ভেতরে ও বাইরে কয়েক হাজার যাত্রীকে অপেক্ষমাণ দেখা গেছে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট মিলছে না। এ পরিস্থিতিতে স্টেশনের বাইরে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছেন ট্রেনের টিকিট পরীক্ষকেরা (টিটিই)। যদিও স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। জানা গেছে, যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছে না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাবেন হাফিজ। টিটিইকে ভর্তি পরীক্ষার কথা বলে অনেক অনুরোধের পর একটি স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করেছেন। তবে ৩৬০ টাকার টিকিটে তিনি যেতে পারবেন ঈশ্বরদী বাইপাস পর্যন্ত। তাতেই সই। হাফিজ বলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবকিছু বদলে গেল। গাড়িতে রাজশাহী যাওয়ার কথা ছিল। এখন সময়মতো রাজশাহী পৌঁছানো নিয়ে সংশয়। সময়মতো পৌঁছতে না পারলে পরীক্ষা ধরতে পারব না। পরীক্ষা দিতে না পারলে আমার এত দিনের পরিশ্রম সব বৃথা যাবে। রাজশাহীর পরীক্ষা শেষ করে আবার ঢাকায় ফিরে জাহাঙ্গীরনগরের পরীক্ষা ধরতে হবে। এ অবস্থায় কিভাবে কী হবে ভাবতে পারছি না।

চট্টগ্রাম থেকে মনিরা ঢাকায় এসেছিলেন চাকরির পরীক্ষা দিতে। চট্টগ্রামে ফিরবেন। সকাল ৯টা থেকে কোথাও টিকিট পাননি। দুপুরের পর থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি শুরু হয়। সেখানেও ঘণ্টা দুয়েক লাইনে থেকেও টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারা রাত জার্নি করে ঢাকায় এসে পরীক্ষা দিয়ে আবার চট্টগ্রামে ফেরার কথা। অথচ গাড়ি বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনটা পার করছি। ঘুম নেই, খাওয়া নেই, একটা মানুষ আর কতক্ষণ এভাবে অপেক্ষা করতে পারে বলুন? টিটিইদের পায়ে ধরা বাদ রেখেছি! তারা মনে হয় আমাদের মানুষই ভাবে না।’ যে পাঁচ থেকে সাতজনের টিটিইর দল দাঁড়িয়ে টিকিট বিক্রি করছেন, তাদের একজন কমল। নিজেকে সিল্কসিটির টিটিই এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ফুটবল খেলোয়াড় দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার্থী ও ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বিশেষ বিবেচনায় স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছি। রেলওয়ের ন্যূনতম ভাড়া হিসাব করে এখানে ভাড়া নির্ধারণ করা হচ্ছে। মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ম না থাকলেও আজকে স্ট্যান্ডিং টিকিট ছাড়া হয়েছে’। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, আজকের জন্য কোনো বিশেষ ট্রেন- সেবা নেই এবং কোনো ধরনের স্ট্যান্ডিং টিকিটও ছাড়া হয়নি।
স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুরের স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দীন বলেন, যেসব ট্রেন চুক্তিভিত্তিক চলে সেগুলোর স্টাফরা এভাবে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছেন। কোনো সরকারি ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিট দেয়া হচ্ছে না। আমরা অনেক নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করে প্রায় সময়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ