পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামির আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক কথা বলেছেন। তারা বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে তাদের ফাঁসি হয়েছে।
গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনও আপিল পেন্ডিং ছিল বলে আমাদের জানা নেই। ফাঁসি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সিস্টেমের কোনও ব্যত্যয় হয়নি। যথাযথ নিয়ম মেনে তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের জানা মতে এই রকম ঘটনা ঘটেনি। প্রথম কথা হলো এই ফাঁসির ক্ষেত্রে একটা প্রসিডিউর আছে। যিনি ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত হন, প্রথমে তিনি আপিল করতে পারেন। তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন। আপিল না মঞ্জুর হওয়াতে তিনি আবার আপিল বিভাগে আপিল করেছেন। জেল থেকে তিনি আপিল করেছেন, যেটাকে জেল আপিল বলে। জেল আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার পর, না মঞ্জুর হলে তিনি সর্বশেষ প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট প্রাণভিক্ষার আবেদন না মঞ্জুর করেছেন। এরপর সিস্টেম অনুযায়ী তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যেটুকু দেখেছি, যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। কোনও আপিল পেন্ডিং ছিল বলে আমাদের কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের জানা নেই। সমস্যা কোথায় হয়েছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা বলতে পারবো না। যথাযথ নিয়মের মধ্যেই তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এখন যদি কেউ কিছু বলে থাকেন, সেটা আমাদের জানা নেই। কারা কর্তৃপক্ষের কাছেও কোনও নিষেধাজ্ঞা কিংবা কিছু আসেনি। আমাদের যে সিস্টেম, সেই সিস্টেমে কোনও ব্যত্যয় হয়নি।
এদিকে, একই দিন সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামির আপিল শুনানির আগেই মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করার অভিযোগটি সঠিক নয়। চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় গোলাম রসুল ঝড়– ও আব্দুল মোকিম নামের দুই আসামির নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগে দন্ড কার্যকর হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাদের আইনজীবী। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা আপিলটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হলে আইনজীবী স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারেন, ৪ বছর আগে ২০১৭ সালেই দন্ড কার্যকর হয়ে গেছে।
এদিকে আপিল শুনানির আগেই দুই আসামির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে-এমন সংবাদ যথার্থ নয় বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সিস্টেম ডিজিটালাইজড হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বুধবার বিষয়টি পত্রপত্রিকায় দেখলাম। গতকাল সে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, আসামি জেল থেকে যে আপিল দায়ের করেছিল তা নম্বর ছিল ০৩/২০১৬। সে আপিলটি সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর খারিজ করে দেন। কিন্তু আসামিদের দায়ের করা আরেকটি আপিল যেটা বুধবার তালিকায় ছিল। সমস্যা হয়েছে, সংবিধান সংশোধনের ফলে আপিলগুলোর লিভ পিটিশন শুনানি হয় না। সরাসরি আপিল হয়। যার কারণে ওই আপিলটা পড়েছিল। কিন্তু তাদের আইনজীবীদের উচিৎ ছিল দুইটা আপিল এক সঙ্গে শুনানি করা, বা আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে আসা। যেহেতু তারা আদালতের দৃষ্টিতে আনেননি, সেই কারণে তাদের যে জেল আপিলটা ছিল সেটি সুপ্রিম কোর্টের ফুর কোর্টে শুনানি হয়ে ডিসমিস (খারিজ) হয়। পরে তারা প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। সেটিও খারিজ হয়ে গেছে। পরবর্তীতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই দন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর এ যে আপিলটা ছিল। এটা যেহেতু আলাদা রয়েছে। এটা ট্যাগ করা হয়নি, এ কারণে রয়ে গেছে। তাদের বিচার তো হয়ে গেছে। আদালত সব কিছু শুনেই খারিজ করে গেছে।
এখানে কি করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলো-জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা তো অ্যানালগ সিস্টেম, ডিজিটাল হয়নি। আমি মনে করি, আইনজীবীদের দায়িত্ব ছিল, এটি আদালতের নজরে আনা যে জেল আপিলের সঙ্গে আরেকটা আপিল রয়েছে। যে ঘটনার আমরা প্রায়ই সম্মুখিন হই। অনেক সময় দেখা যায়, জেল আপিল আসে না। তখন সাতদিন সময় দেয়া হয়। আশা করছি, সিস্টেম ডিজিটালাইজড হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। পাঁচটা আপিল থাকলেও রায় তো একটাই হবে। সব দেখে শুনেই আদালত রায় দিয়েছে। ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এখন ওই আপিলটি অকার্যকর হয়ে গেছে।
এর আগে যশোর কারাগারে চার বছর আগে আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়– নামে ২ জনের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, আসামিদের নিয়মিত আপিল তালিকায় থাকা অবস্থায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।