Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার দাবিতে সংগ্রামের আহ্বান গণসংহতির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে ‘অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার’ প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রামে যুক্ত হতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনের’ উদ্বোধনী সভায় দলটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ আহ্বান জানান। এ সময় সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য রাজনীতিকরা ভোটাধিকার অর্জনে জনগণকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এ সরকারের কাছ থেকে মুক্তি ছাড়া কোনো উপায় নেই। সরকার একের পর এক মুলা ঝুলিয়েছে আমাদের সামনে। আপনারা বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন, আমরাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছি। তার মানে এই নয় যে, আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিনিময়ে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেবেন।
তিনি বলেন, যে দেশে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তারচেয়ে বড় জবরদস্তি হতে পারে না। আবারও একটা নিশিরাতে ভোট করার পাঁয়তারা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা আরেকটা ভোট ডাকাতি হতে দেবো না। সকল দলের প্রতি আহ্বান, যার যার অবস্থান থেকে ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে হবে। রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এই সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে উল্লেখ করে সাকি বলেন, আসুন, লড়াই করে, অভ্যুত্থান করে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাই। সম্মিলিত গণজোয়ারের মাধ্যমে অভ্যুত্থান একমাত্র সমাধান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা নিরবচ্ছিন্ন ঘটনা। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের ধর্মাশ্রয়ী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শব্দ হলে মনে করে বোমা ফুটছে— এই হচ্ছে সরকারের সাহসের নমুনা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার না দেওয়ার কারণে এই সরকারের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি মামলা দেওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন সাইফুল হক।
তিনি বলেন, জানি না, কোথায়, কখন আগুন লেগে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনৈতিক ব্যবসা চলছে না, তাই তারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ব্যবসা শুরু করেছে। এ সময় তিনি রাজপথে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা মানুষই না। তারা মিথ্যা বলে, বানিয়ে-বানিয়ে কথা বলে। এরা সবাই ডাকাত। ভয়কে জয় করে ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার তিনি আহ্বান জানান।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সংবিধানের বিপরীতে গিয়ে দেশ পরিচালনা করছে ক্ষমতাসীন দল। এই সরকার বাংলাদেশের লুটেরা, ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার সরকার। বাংলাদেশের বাজারে আগুন বলে মন্তব্য করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সবকিছুর দাম এখন বেশি। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন জোনায়েদ সাকি ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সম্মেলনে প্রায় ৫০টি জেলা থেকে প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অধিবেশনের পর শোভাযাত্রা করে মৎস্যভবন মোড় ঘুরে আবার প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ করেন নেতাকর্মীরা।
গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মনির উদ্দিন পাপ্পুর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, হাসনাত কাইয়ুম, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, গণসংহতির নেতা তাসলিমা আখতার, আবুল হাসান রুবেল, ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ