পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলিশের ইউনিফর্ম, পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি, জ্যাকেট-বেল্ট ও আইডি কার্ড ব্যবহার করে গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির সাথে জড়িত একটি চক্রের ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত চার বছর ধরে জড়িতরা মানুষের টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও দামি জিনিসপত্র লুট করছিল চক্রটি। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গতকাল শুক্রবার ভোর পর্যন্ত সাভারের রাজাশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুুতিকালে এ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা হলো-শামীম রেজা (৩০), হেলাল উদ্দিন (৩৫), মো. পারভেজ (২৫), ওয়াসিম ইসলাম (২৫), নাইম খান (২৭) ও ফেরদৌস আহমেদ রাজু (২৯)। তাদের মধ্যে হেলাল গাড়িচালক, পারভেজ মেকানিক, ওয়াসিম ইলেক্ট্রিশিয়ান। বাকি দুজন ডাকাতির কাছে সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, একটি নকল পিস্তল, একটি পিস্তল টাইপ লাইটার, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ওয়াকিটকি, দুই সেট পুলিশ ইউনিফর্ম, পুলিশ জ্যাকেট, পুলিশ বেল্ট, আইডি কার্ড, দু’টি রামদা, একটি ডেগার, একটি চাপাতি, দুটি টর্চলাইট, দুটি রশি, ৪৬৭ পিস ইয়াবা, ৩০ বোতল ফেনসিডিল, দেড় কেজি গাঁজা, সাত গ্রাম হেরোইন, পাঁচ লিটার চোলাই মদ, ১৯ টি মোবাইল ও ৪৪ হাজার ৫৭০ টাকা জব্দ করা হয়।
ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, আটক শামীম রেজা (৩০) কিশোর বয়স থেকেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তার বাড়ি রাজশাহী। সে গ্রামের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে কাজের জন্য ২০০৫ সালে ঢাকায় আসে। এক পর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। পরে তার নেতৃত্বে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলে। শামীম নিজেকে এসআই পরিচয় দিয়ে ডাকাত বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতো। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি রাতের আধারে পুলিশের পোশাক (ভুয়া) পরে টর্চ লাইট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও দামি জিনিসপত্র লুটপাট করতো। শামীম ২৫ থেকে ৩০টি অটোরিকশা ও সিএনজির মালিক। তার নামে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে নিজেকে পুলিশ বাহিনীর একজন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, নকল আগ্নেয়াস্ত্র, নকল আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করতো। বিভিন্ন সময়ে পুলিশ সেজে তার বাহিনী সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতো। আটক সব আসামির নামে সাভারসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগেও শামীম রেজা একাধিকবার চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা ও মাদক মামলায় আটক হয়েছিল। এরপর জামিন নিয়ে বের হয়ে একই কাজ করে। তবে এবারই প্রথম হুবহু পুলিশের ইউনিফর্ম পরে অভিনব প্রতারণায় নামে শামীম। শুধু ইউনিফর্মই নয়, একজন পুলিশের যা যা প্রয়োজন সবকিছুই শামীম সংগ্রহ করেছিলো। তিনি বলেন, পুলিশের ইউনিফর্ম পরে ডাকাতি করা এ ধরনের কাজে আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এর আগে ডিবি ও র্যাব একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। কারণ রাতের বেলা সড়কে পুলিশ সদস্য সেজে চেকপোস্ট বসিয়ে টহল দিলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হবে। এ ধরনের প্রতারণা যে বা যারাই করছে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে।
পুলিশের আইডি কার্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ সদর দফতর থেকে যেভাবে তৈরি করা হয় ঠিক সেভাবেই তারা আইডি কার্ড তৈরির চেষ্টা করছে, পুরোপুরি বানাতে পারেনি। তবে যারা এ আইডি কার্ড তৈরি করেছে তারাও আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তাদেরও আটক করে এ মামলায় আসামি করা হবে। সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন আসল পুলিশ না নকল পুলিশ? এমন প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দেখতে চাইবেন অথবা স্থানীয় থানা পুলিশ কিংবা র্যাবকে জানালেও ভুক্তোভোগীরা আসল-নকল পুলিশ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
সাভার-আশুলিয়া অপরাধ দমনে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ ও র্যাব কাজ করে। সারাদেশেই রাজধানীর পাশের এলাকাগুলোতে অপরাধের ড্রেন হিসেবে কাজ করে অপরাধীর। রাজধানীতে ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ করে অপরাধীরা সাভার ও আশুলিয়াতে বেশি বসবাস করে। এছাড়া নদীর পাশে কেরানীগঞ্জে বসবাস করে থাকে। এ এলাকাগুলো ঘনবসতি তাই অপরাধীরা বসবাসের জন্য এসব এলাকা বেছে নেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।