Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার অনৈতিক বাণিজ্যে ‘নৈতিকতা’ উধাও

প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টালিন সরকার : ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য (সাংবাদিকদের নির্বাচিত নেতা) উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের নার্সারীতে ছেলেকে ভর্তি করাতে যান। পকেটে টাকাসহ ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়ে ফরমও পূরণ করেন। কিন্তু ভর্তির মাত্রাতিরিক্ত ফি এবং মাসিক বেতন ১২শ’ টাকার কথা শুনে রাগে-দুঃখে স্কুলেই ফরম ছিঁড়ে ফেলে ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফেরেন।
অতঃপর সিদ্ধান্ত নেন ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেবেন। ডিআরইউ’র সদস্য এবং ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকে কর্মরত আরেক সাংবাদিক ভর্তি ফি আর দুই বাচ্চার মাসিক বেতন চালিয়ে যাওয়ার অপারগতার দুঃখে ছেলেমেয়েকে ঢাকা থেকে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পাঠিয়ে দেন। তারা গ্রামের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। শুধু দুই সাংবাদিক নয়; ঢাকার বেসরকারি স্কুল-কলেজে পড়–য়া লাখ লাখ শিক্ষার্থীর অভিভাবক লেখাপড়ার খরচ জোগাতে গিয়ে চরম বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়ে গেছেন। একজন সহকর্মী জানালেন, তার মেয়েকে উইলস লিটলের ইংলিশ মিডিয়ামে নার্সারীতে ভর্তি করেছেন ১৮ হাজার টাকায়। নার্সারীর মাসিক বেতন ২৭শ’ টাকা। বাংলা মিডিয়ামে ওই ক্লাসের বেতন ১২শ’ টাকা। আরো দুর্ভাগ্যজনক তথ্য দিলেন দুই বন্ধু ও এক সহকর্মী।
জানালেন, বেসরকারি ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার পদে চাকরি করেন একজন মহিলা এবং বীমা কোম্পানীতে চাকরি করেন আরেকজন নারী। দু’জন চাকরিজীবী বাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ নির্বাহের জন্য চাকরির পাশাপাশি অসামাজিক পথে পা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। অফিস ছুটির পর গুলশান-বনানীসহ অনেক এলাকায় তাদের সন্ধ্যা কাটাতে হয়। প্রশ্ন হলো নতুন বছরের নতুন সূর্য সীমিত আয়ের এই মানুষগুলোর জন্য একি বার্তা নিয়ে এলো? শিক্ষা নাগরিক অধিকার। বাচ্চাদের শিক্ষার জন্য মাকে বেশ্যাবৃত্তিতে নাম লেখাতে হবে কেন?
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ৫ জানুয়ারী পৃথক পৃথক সমাবেশ করায় ‘রাজনীতিতে সুবাতাস’ খবর প্রচার করছে মিডিয়াগুলো। বিগত বছরের মতো লাগাতার অবরোধ এবং পুলিশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা নেই। এটাকে নতুন বছরের সূর্য রাজনীতির সুবাতাস নিয়ে এসেছে বলা হচ্ছে। বেতন বৃদ্ধি করায় সরকারি চাকরিজীবীদের কাছে নতুন বছরের সূর্য নতুন ভাবে ধরা দিয়েছে। কিন্তু ঢাকায় যারা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, ব্যবসা-বাণিজ্য করেন এবং অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত চাকরিজীবীদের জীবনে নতুন বছরের সূর্য কি ‘সুবার্তা’ নিয়ে এসেছে? সরকারি চাকুরেদের বেতন বৃদ্ধি করায় বেসরকারি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। যাদের বেতন বাড়েনি তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া কি বন্ধ হয়ে যাবে? নাকি ওই দুই সাংবাদিক ও ব্যাংক-বীমায় কর্মরত নারী কর্মীর পথ বেছে নিতে হবে অভিভাবকদের? পহেলা জানুয়ারী শুধু ‘বই বিতরণ’ কি সরকারের একমাত্র সাফল্য?
নতুন বেতন কাঠামোতে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে ঢাকার বেসরকারি স্কুল ও কলেজে শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে দ্বিগুণ। বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন অভিভাবকরা। তারা বর্ধিত বেতন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন। রাজধানীর নামকরা অধিকাংশ স্কুলের ছাত্রÑছাত্রী অভিভাবকরা প্রতিবাদ করছেন। কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে বর্ধিত বেতন প্রত্যাহারের জন্য আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। প্রতিবাদ কর্মসূচির চলার সময় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ওপর পুলিশ ‘চড়াও’ হয় এবং অভিভাবকরা ‘পুলিশি লাঞ্ছনা’র শিকার হন। গত দুই সপ্তাহ থেকে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের সামনে মানববন্ধন, শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া ও অবস্থান ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন; অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রশ্ন হলো পুলিশ কি শুধু বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের পেটাবে নাকি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে যারা বেতন বাড়িয়ে অপরাধ করেছে তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে শিক্ষাকে পণ্য বানানোর হাত থেকে বাঁচাবে? ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সরকার আমলাদের খুশি করবে এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অপমান করে আমলারা যা চাচ্ছেন তার চেয়েও বেশি দেয়া হচ্ছে। সরকারি চাকুরের বেতন বৃদ্ধিকে যুক্তি দেখিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের বৃদ্ধি সংগত? রাজধানীর বেসরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা কি সবাই সরকারি চাকুরে? সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সুবিধা দেশের শতকরা কতজন মানুষ পাচ্ছেন? বেসরকারি স্কুলে হঠাৎ করে দেড়গুণ, দ্বিগুণ বেতন বৃদ্ধি নিয়ে সরকার নীরব কেন? তাহলে কি পরিবহন সেক্টরের মতো নৈরাজ্যকর অবস্থা শিক্ষাক্ষেত্রে শুরু হয়ে গেল? মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সরকারি নির্দেশনার বাইরে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সুযোগ নেই’। তাহলে কোন খুঁটির জোরে বেসরকারি স্কুলের বেতন দ্বিগুণ করা হচ্ছে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিয়াম স্কুল, আইডিয়াল স্কুল, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল, শহীদ লেফটেন্যান্ট আনোয়ার গার্লস স্কুল, বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, জুনিয়র ল্যাবরেটরি স্কুলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন বাড়ানো হয়েছে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ। একজন অভিভাবক জানালেন, বেসরকারি স্কুলগুলো পে-স্কেলের অজুহাতে লুটপাটের দোকান খুলেছে। প্রায় প্রত্যেকটি স্কুলে দ্বিগুণ ফি আদায় করা হচ্ছে। কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, স্কুলের বাংলা মাধ্যমে বিভিন্ন ধাপে এক হাজার ৩শ’ টাকা থেকে দুই হাজার ১শ’ টাকা, ৬শ’ থেকে এক হাজার ১শ’ টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে এক হাজার ৯শ’ থেকে দুই হাজার ৭শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন বাড়ানো হয়েছে। প্রতিবাদে রোববার থেকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে লাগাতার অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের আন্দোলনরত এক অভিভাবক বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির অজুহাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ টিউশন ফি প্রায় দ্বিগুণ করেছে। আমরাও আন্দোলনে আছি। কিন্তু সরকার নীরব থাকায় সদুত্তর পাচ্ছি না। ভিকারুনিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবকরাও বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছেন। তাদের অভিযোগ এই স্কুলে প্রথম শ্রেণীর বেতন ৮শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫শ’ টাকা করা হয়েছে। দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর মাসিক বেতন ৮শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৬শ’ টাকা, সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীর ৯শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার ২শ’ টাকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুন বেতন বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ স্কুলে ৭০ শতাংশের বেশি নন-এমপিভুক্ত শিক্ষক। তাদের বেতন-ভাতা এমপিভুক্ত শিক্ষকদের মতো দিতে হয়। সেটার পুরোটাই আসে স্কুলের নিজস্ব আয় থেকে। স্কুলের নিজস্ব আয় মানে শিক্ষার্থীদের বেতন, উন্নয়ন ফি। ভর্তির ফি বাড়ানো ছাড়া শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো সম্ভব না। আমরা বাধ্য হয়েই বাড়াচ্ছি’। অথচ গত বছরের ২৯ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা ভর্তি নীতিমালার ১০ (ক)-তে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করতে পারবে।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বেসরকারি স্কুলগুলো মানছে না! এক সহকর্মী জানালেন, উত্তরা ১৩ নম্বরে ট্রাষ্ট কলেজে প্লেতে ভর্তি ১০ হাজার টাকা, প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী ১৫ হাজার টাকা। মাসিক বেতন প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা। একাদশ ও দাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ৩৫ হাজার টাকা ও মাসিক বেতন ১৩ হাজার টাকা। এই পরিমাণ ভর্তি ও বেতন দিয়ে কতজন নাগরিক তাদের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করাতে পারবেন? তাহলে কি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবহণ সেক্টরের মতো নৈরাজ্যকর অবস্থায় চলে যাচ্ছে? পরিবহন সেক্টর কার্যত সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ঢাকায় প্রতি কিলোমিটারের জন্য বাসভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। অথচ বাসগুলোতে মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ থেকে ৫ গুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ চক্র যাত্রীদের নাজেহাল করছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের এই অপকর্মের ইন্ধনে রয়েছে প্রভাবশালী একাধিক মন্ত্রী। পান থেকে চুন খসলেই ওই মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের ইন্ধনে বাস লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিবহন সেক্টরে কার্যত চলছে নৈরাজ্যকর অবস্থা। তাহলে কি বাস লঞ্চের মতো শিক্ষালয়গুলোতেও নৈরাজ্যকরা অবস্থা শুরু হবে।
সরকার নারী শিক্ষা এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণের মাধ্যমে শিক্ষার হার বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে। এ নিয়ে নিত্যদিন সরকারি প্রচার মাধ্যমে ঢাকঢোল পেটানো হচ্ছে। কিন্তু বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে নিম্নমানের কিছু নতুন বই তুলে দিয়ে সরকার দায়িত্ব শেষ করছে। ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষাখাতে নাগরিকের ব্যয় করার ক্ষমতা যাচাই বাছাই না করেই বেসরকারি স্কুলগুলো আকাশ ছোঁয়া বেতন নির্ধারণ করছে। অভিভাবকদের সেটা দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুল কলেজে বেতন হঠাৎ করে বৃদ্ধি হওয়ার কারণে অনেক পরিবার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে বাধ্য হয়েই জীবনধারা পাল্টে ফেলছে। অনেক পরিবার বাসা ভাড়া ছেড়ে দিয়ে অল্প টাকায় একরুমের সাবলেট নিচ্ছেন। বাসা ভাড়া থেকে টাকা বাঁচিয়ে ছেলেমেয়েদের খরচের যোগান দিচ্ছেন। নিজের কারণেও কয়েকমাস আগে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ফোন করতে হয়েছিল। একটি বেসরকারি কলেজে একাদশে ভর্তিতে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং মাসিক বেতন তিন হাজর টাকা নেয়া হচ্ছে। জানালে বোর্ড চেয়ারম্যান অবাক হয়ে বললেন, এতো বেশি টাকা নেবে কেন? সাংবাদিক হিসেবে আপনারা এ নিয়ে লেখালেখি করুন। সম্ভব হলে অভিভাবক হিসেবে বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করুন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। লিখিত অভিযোগ ছাড়া স্কুল কলেজের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা শিক্ষা বোর্ডের নেই। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্য শুনে অবাক হয়ে শিক্ষাবিট করেন এমন কয়েকজন সহকর্মীকে ঘটনা জানালে তারা ভয়াবহ তথ্য দেন। তাদের তথ্য হলো বেসরকারি স্কুল কলেজে ভর্তির অতিরিক্ত ফি এবং অস্বাভাবিক মাসিক বেতন নেয়া হয়; সে টাকার ভাগ গভর্নিং বডি থেকে শুরু করে মাউশি, শিক্ষা বোর্ড, মন্ত্রণালয়ের বড় কর্তাদের পকেটে পর্যন্ত যায়। বিভিন্ন বেসরকারি কলেজে একাদশে শিক্ষার্থী ভর্তির টাকায় মাউশি, শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের অনেক বড়কর্তা কোরবানীর গরু কিনেছেন। যারা স্কুল কলেজ থেকে নিয়মিত টাকা খান তারা কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে স্কুল কলেজগুলোর শিক্ষা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে? প্রশ্ন হলো শিক্ষা নিয়ে মানুষ বানানোর কারিগর বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকদের শিক্ষার নামে এই অনৈতিক বাণিজ্যে নৈতিকতা কি উধাও হয়ে যাবে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষার অনৈতিক বাণিজ্যে ‘নৈতিকতা’ উধাও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ