পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দারিদ্র্য বিমোচন এবং সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে অভিভূত বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। সরেজমিনে বাংলাদেশের এ সাফল্য দেখতে দুই দিনের আনুষ্ঠানিক সফরে আজ ঢাকায় আসছেন তিনি। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কিম। এসময় তিনি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করবেন বলে সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
বিবৃতিতে কিম বলেন, ‘দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশ বাংলাদেশের কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নিতে পারে।’ সুশাসন শক্তিশালীকরণ ও বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজের সুযোগগুলোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট।
কাল (সোমবার) আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে এ বিষয়ে একটি গণবক্তৃতা দেবেন কিম। বক্তৃতায় গত দুই দশকের কম সময়ে প্রায় দুই কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যসীমা থেকে উত্তোরণে বাংলাদেশের সাফল্যের নানা দিক উঠে আসবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অগ্রগতি, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমাতে সৃজনশীল উদ্যোগ, বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানব উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং কার্যকরী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বিষয়ে আলোকপাত করবেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা বক্তৃতা করবেন।
ঢাকায় অবস্থানকালে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিশ্বব্যাংকের আরো বেশি পরিমাণে অংশগ্রহণের পথ খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন কিম। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশের কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পও তিনি ঘুরে দেখবেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সাথেও তার বৈঠক করার কথা রয়েছে।
কিমের এ সফরকে গুরুত্বের সাথে দেখছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রতি বছর তাদের সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। তার এ সফরকালে সহযোগিতা সম্প্রসারণের নতুন ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার পরে এটাই হবে সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদাধিকারীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে জিম ইয়ং কিম বিশ্বব্যাংকের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে রবার্ট ম্যাকনামারা প্রথম বাংলাদেশ সফর করেন। সর্বশেষ ২০০৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট বি জোয়েলিক দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন।
দক্ষিণ কোরীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক জিম ইয়ং কিম ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এক দশক পর বিশ্বব্যাংকের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে করতে এলেও কিমের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন শেষ করেই ঢাকায় আসছেন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আসা কিম।
কর্মসূচি
আজ রাতে ঢাকায় নামার পর র্যাডিসন হোটেলে উঠবেন জিম ইয়ং কিম। সোমবার সকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকের পর বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশ’ শীর্ষক পাবলিক লেকচারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেবেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল রোমার। বিশ্বব্যাংক সাউথ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সনও বক্তৃতা করবেন।
মঙ্গলবার সকালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য বরিশাল যাবেন কিম। ফিরে এসে একান্ত বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। বিকালে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিদায় নেবেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্যের হার মোট জনসংখ্যার ১২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে ২০০৯-১০ অর্থবছর শেষে এ হার ছিল সাড়ে ১৮ শতাংশ।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা শূন্য থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।