পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মোঃ খলিল সিকদার রূপগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জামদানি শিল্প নগরী ও গবেষণা কেন্দ্রে প্লট ফেরত নিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্লট মালিকরা লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে প্লট বুঝে নিতে হচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন বহিরাগত প্রভাবশালীর নিকট জামদানি তাঁতীদের প্লট বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জামদানি তাঁতীদের বরাদ্দকৃত এসব প্লট দিন দিন প্রভাবশালীদের হাতে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে জামদানি শিল্প বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। প্রকৃত জামদানি তাঁতীদের সুযোগ সুবিধা দেয়া না হলে এ শিল্প হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালে জামদানি বিসিক শিল্প নগরীর অনুমোদন দেয়া হয়। পরে ১৯৯৬ সালে এ শিল্প নগরীর কার্যক্রম শুরু হয়। বিসিকে মোট প্লট রয়েছে ৪০৭টি। এর মধ্যে পর্যায়ক্রমে জামদানি তাঁতীদের মাঝে ৩৯৯টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। ৮টি প্লট তাঁতীদের না বুঝিয়ে দিয়ে ৩ লাখ টাকা করে নিয়ে প্রভাবশালীদের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্তমান স্টেট অফিসার মামুনুর রশিদ। এতে করে প্রকৃত তাঁতীরা প্লট থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ২০০৮ সালে ঘর ও তাঁত না থাকার কারণে তখনকার দায়িত্বরত অফিসার ৪৯টি প্লট বাতিল করে। ঘর নির্মাণ ও তাঁত স্থাপন করার শর্তে বর্তমান দায়িত্বরত বিসিকের স্টেট অফিসার মামুনুর রশিদ বাতিলকৃত ৪৯টি প্লট বুঝিয়ে দেয়ার জন্য তাঁত মালিকদের নোটিশ প্রদান করেন।
অভিযোগ রয়েছে, স্টেট অফিসার প্লট প্রতি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে দাবি করেছেন। বেশ কয়েকজন প্লট মালিক দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করে প্লট বুঝে নিতে হয়েছে। হালিমা জামদানির মালিক শুক্কুর মাহমুদ, মারিয়া জামদানি হাউজের মালিক ইসমাইল হোসেন, মৌসুমী জামদানি হাউজের মালিক জিয়ারুলসহ আরো অনেকেই জানান, নোয়াপাড়া বিসিকের স্টেট কর্মকর্তার দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করতে প্লট মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, নোয়াপাড়া জামদানি বিসিক শিল্পাঞ্চলের বরাদ্দকৃত ৪০৭টি প্লটের মধ্যে বেশিরভাগ প্লটই প্রভাবশালীদের হাতে রয়েছে। প্রকৃত তাঁতীদের হাতে এখন আর প্লট নেই। এছাড়া অল্প কিছু প্লটে তাঁত থাকলেও বেশিরভাগ প্লটই বাসা বাড়ি হিসেবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু প্লটে ৪/৫টি করে তাঁত রয়েছে। এছাড়া শিল্পনগরী এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ময়লা আবর্জনা ফেলে নোংরা পরিবেশ হয়ে উঠেছে শিল্পনগরী এলাকা। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের আনাগোনা বেড়ে গেলেও দেখার কেউ নেই। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা থাকেন বাণিজ্য নিয়ে। এ বিষয়ে জামদানি নগরী বিসিকের স্টেট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ৪টি প্লট খালি হয়েছে। খালি প্লট ফেরতের জন্য দেড় মাসের সময় দিয়ে একটি নোটিশ করা হয়। এছাড়া বাকি সব প্লটের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা চলছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হেড অফিসের পরিচালক মোস্তফা কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে কথা পরে বলবেন বলে তিনি জানান।
নোয়াপাড়া জামদানি পল্লী (বিসিক) সমিতির সভাপতি হাজী জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, প্রকৃত তাঁতীদের সুযোগ-সুবিধা না দেয়া হলে এ শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এ জন্য প্রকৃত তাঁতীরা প্লট বুঝে পেয়েছেন কিনা, প্লটে তাঁত আছে কিনা, জামদানি উৎপাদন হচ্ছে কি না এসব মনিটরিং করলে দেখা যাবে এ শিল্প এগিয়ে যাবে। এ জন্য সরকারের দৃষ্টি দেয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম বলেন, পূর্বে যদি প্লট বাতিল করা হয় এবং তা পরে আবার বুঝিয়ে দেয়া হয় সে ক্ষেত্রে হয়তো সরকারীভাবে একটি ফি ধরা হতে পারে। তবে ওই ফি কি পরিমাণ তা আমার জানা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।