Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রিজেন্টের সাহেদকে কেন জামিন নয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে কেন জামিন দেয়া হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অর্থ পাচার মামলায় তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল ডিভিশন এ রুল জারি করেন। মোহাম্মদ সাহেদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)র পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।

এজাহারে উল্লেখিত তথ্য মতে, গত বছর ২৫ আগস্ট সাহেদ ও তার সহযোগী পারভেজের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন সিআইডির ইন্সপেক্টর মো. ইব্রাহীম হোসেন। মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ পাচারের অভিযোগ আনা হয়। পরে দুদকও তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ওই মামলায় অর্থ পাচারের ধারাও যুক্ত করা হয়।
সিআইডি’র করা মামলয় উল্লেখ করা হয়, সাহেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে তিনি ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ঋণের ৮০ লাখ টাকাসহ মামলা দায়েরকালে তার ব্যাংক হিসাবগুলোয় জমা ছিল ২ কোটি ৪ লাখ টাকার মতো। এ অর্থের উৎস প্রতারণা ও জালিয়াতি। ‘প্রতারণা’ ও ‘জালিয়াতি’ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতাভুক্ত অপরাধ। প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের মাধ্যমে রূপান্তর এবং ভোগবিলাসে ব্যয় করার অপরাধে সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন বিভাগ সাহেদের বিরুদ্ধে এ মামলা করে। জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ লেনদেনের সুবিধার জন্যই মো. সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড ও অস্তিত্ববিহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছিলেন। ব্যাংক হিসাবগুলো খোলার সময় তিনি কেওয়াইসি (গ্রাহকের তথ্যসংবলিত ফরম) ফরমে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো পরিচালনা করতেন রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ। গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব হিসাবে টাকা জমা হয়েছে। অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ছিল। সর্বশেষ তার অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা ছিল।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, মোহাম্মদ সাহেদ ও সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা রয়েছে। সাহেদ ও তার সহযোগী মাসুদ পারভেজ এবং রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড এবং অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য রয়েছে।
এছাড়া বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারি আকার ধারণ করলে ভুয়া পরীক্ষা এবং জাল সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সাহেদ। তার অপরাধকর্মের প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের সহযোগিতায় রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড নামে ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাহ মখদুম এভিনিউ শাখায় নতুন অ্যাকাউন্ট খোলেন। এটি পরিচালনা করতেন সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম ও মাসুদ পারভেজ।
প্রসঙ্গত প্রতারণা, জালিয়াতিসহ বহু মামলার আসামি মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে রিজেন্ট সাহেদকে গতবছর ১৬ জুলাই অবৈধ অস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-র‌্যাব। সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা দিয়ে নৌপথে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে অস্ত্র মামলা, জালিয়াতি মামলা, প্রতারণা এবং অর্থ পাচার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কারাগারে রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাহেদ

৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ