পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয় তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতি ততটা কমেনি। গতকাল অর্থমন্ত্রী রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, পরিষদ সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহযোগী এনজিও’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। দুটি ভূগর্ভস্থ বেইজমেন্টসহ ১২ তলা বিশিষ্ট এ ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৮ কোটি ৬৩ লাখ। ভবনটি নির্মিত হলে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের স্থায়ী দফতর স্থাপিত হবে। ফাউন্ডেশনের দারিদ্র্য বিমোচনের কাজ গতিশীল হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে উত্তরণের চূড়ান্ত যোগ্যতা অর্জন- একসঙ্গে এ তিনটি বিশেষ ঘটনার যোগসূত্রের এ বছরটি, বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে স্মরণীয় একটি বছর। এই গৌরবোজ্জ্বল বছরে এনজিও ফাউন্ডেশন একটি নিজস্ব ভবন নির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার আজীবনের স্বপ্ন ছিল একটি দারিদ্র্যমুক্ত ও শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। জাতির পিতার সেই অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে তারই রক্তের উত্তরাধিকার বর্তমান প্রজন্মের কিংবদন্তী ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও হিরন্ময়ী নেতৃত্বে গত এক দশক গড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ মহামারি কালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, এমন ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, গত মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভার টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১-এ আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ফাউন্ডেশনটি প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময় সরকার থেকে আয়বিধায়ক তহবিল হিসেবে ১৬২ কোটি টাকা, প্রাপ্ত অনুদান ও অর্জিত মুনাফা থেকে সহযোগী সংস্থাকে ১৫৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়ার পরেও বর্তমান আয়বিধায়ক তহবিলে স্থিতি রয়েছে ২৭০ কোটি টাকা। এটা অবশ্যই ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের ইঙ্গিত বহন করে।
তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেক্ষুদ্রক্ষুদ্র এনজিওর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া, অসহায়, অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় সাড়ে সাত হাজার গ্রামে ১১২০টি এনজিও (সহযোগী সংস্থা) ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে হতদরিদ্র মানুষের সেবা করে যাচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশেষ ঋণ কর্মসূচি হিসেবে পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। আশা করছি, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন অতীতের মতো ভবিষ্যতেও প্রান্তিক ও অসহায় জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।