পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে উত্তরাঞ্চলে এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। সাসেক-৩ প্রকল্পের আওতায় এই এক্সপেসওয়ে ফোর লেনের পরিবর্তে সিক্স লেন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক এই মহাসড়কটি হবে লালমনিরহাট শহর হয়ে বুড়িমারী স্থল বন্দর পর্যন্ত। খুব শিগগিরই এক্সপেসওয়ে ও আন্তর্জাতিক সিক্স লেন মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
সিক্সলেন আন্তর্জাতিক মহাসড়কটি দৃশ্যমান হলে উত্তরাঞ্চলে বিনোয়োগের ডালা যেমন খুলবে তেমনি পরিণিত হবে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যবসা বাণিজ্যের স্বর্ণদ্বার। এই জেলার সাথে নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথ ও আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন হবে ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, চীন ও জাপানের। ব্রিটিশ শাসন আমলে লালমনিরহাট জেলা ছিল ভারত বর্ষের ব্যবসাবাণিজ্যে ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে স্বর্ণদ্বার।
বর্তমান সরকারের পরিকল্পনায় পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পেতে যাচ্ছে লালমনিরহাট জেলা। যাহা উত্তরাঞ্চলের স্থায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং সরকারের উন্নতশীল অর্থনৈতিক বাংলাদেশ পরিণিত করার কার্যক্রমকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। এ বছর এই রাস্তা ও এক্সপেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ করতে সরকার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর জোর দিয়েছে। তাই দেশে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে উত্তরাঞ্চলে এক্সপ্রেস হাইওয়ে ও সিক্স লেন আধুনিক মহাসড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাসেক-৩ প্রকল্পের আওতায় বুড়িমারী থেকে রংপুরের পায়রা বন্দর পর্যন্ত অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও বুড়িমারী লালমনিরহাট সদর হয়ে রংপুর সিক্স লেন মহাসড়ক নির্মাণ করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেয়া হয়েছে। গত বছর মার্চ মাসে রাজধানী ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেস হাইওয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। এবার উত্তরাঞ্চলের সাথে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে বুড়িমারী থেকে রংপুরের পায়রাবন্দ পর্যন্ত প্রায় ৪০/৪৫ কিলোমিটার দ্বিতীয় এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বুড়িমারী থেকে রংপুরে যাওয়া যাবে এই এক্সপ্রেস হাইওয়ে দিয়ে। থাকবে একসেস কন্ট্রোল ব্যবস্থা। চাইলেই কেউ যখন তখন এক্সপ্রেসে ঢুকতে পারবেন না। সরকার নির্ধারিত টোল দিয়ে যেতে হবে। দু’পাশে রেলিং থাকবে। যাতে রাস্তার ও যানবাহনের গতিকে মন্থর করতে না পারে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। থাকবে সকল ধরনের সড়ক নিরাপত্তার মেজার। সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে সারাক্ষণ যানবাহনের গতিবিধি নজরে রাখা যাবে। এই সব সিসিটিভি ক্যামেরা যানবাহনের নিধারিত গতি মেনে চলছে কি না সেটাও তাৎক্ষণিক যানা যাবে। এক্সপ্রেসটি হয়ে উঠবে দুর্ঘটনামুক্ত নিরাপদ সড়ক। এই সড়কে যানবাহন কে কোথাও সামান্য সময়ের জন্য চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হবে না।
প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন দফতরের সূত্রে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ে ও সিক্স লেন সড়কটি নির্মাণে তিনটি রুটকে সুপারিশ করা হয়ে ছিল। সেইভাবে সুপারিশ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। প্রথমটি বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে লালমনিরহাটের বড়খাতা ও নীলফামারীর ডালিয়া হয়ে রংপুরের পায়রাবন্দ পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে লালমনিরহাটের কাকিনা ও রংপুরের গঙ্গাচড়া হয়ে পায়রাবন্দ পর্যন্ত। আর তৃতীয়টি বুড়িমারী থেকে লালমনিরহাট সদর হয়ে মুস্তফিতে কুড়িগ্রামকে সংযুক্ত করে রংপুরের পায়রাবন্দে গিয়ে মিলিত হবে। এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ হবে বুড়িমারী হতে পায়রাচত্বর পর্যন্ত। বুড়িমারী ও রংপুরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। এতে করে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাথে পণ্য আমদানি ও রফতানিতে গতি আসবে। এই বুড়িমারী স্থলবন্দরটি ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশে দিনদিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বন্দরটি উত্তরাঞ্চল ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এদিকে এক্সপ্রেসওয়ে ও সিক্সলেন সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবিত প্রথম রুটটি নির্মাণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প। আর দ্বিতীয় রুটের প্রস্তাবিত জায়গায় নির্মাণ করা হলে সুবিধা পাবে মাত্র একটি জেলার তিন উপজেলার মানুষ। অন্যদিকে, তৃতীয় রুটটি বাস্তবায়ন হলে সুবিধা পাবে তিন জেলার জেলার ২৩ উপজেলার মানুষ ও তিনটি স্থলবন্দর। তাই এক্সপ্রেসওয়ে ও সিক্স লেন হাইওয়ে রাস্তাটি লালমনিরহাট সদর হয়ে নির্মাণের দাবি পক্ষে জেলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ইতোমধ্যে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার সরকারি দলের রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষ সরকারের নীতি নিধারণ পর্যায়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা করেছে।
লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সিরাজুল হক জানান, কর্মসংস্থান, জনগণের ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই প্রকল্প কোনদিক দিয়ে নির্মাণ করতে রংপুর, লারমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের এই তিন জেলার মানুষের কতটুকু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে সেটা দেখার বিষয়। এই স্বার্থ আদায় হচ্ছে কিনা সেটা দেখতে হবে। এই প্রকল্প নিয়ে কোন রাজনীতি নয়। তিনি বলেন, লালমনিরহাট শহরের মধ্য দিয়ে যদি সিক্স লেন নির্মাণ করা হয়। তাহলে লালমনিরহাটের উন্নয়ন হবে। শহর হয়ে উঠবে আধুনিক, ব্যতিক্রম ও নান্দনিক দৃশ্যমান হবে শহরের সৌন্দর্য। লালমনিরহাট জেলাবাসী এই প্রকল্পের বিপক্ষে নয়। তারা এই প্রকল্পটির এক্সপ্রেসওয়ে বুড়িমারী রংপুর হয়ে নির্মাণ হউক তাতে কোন সমস্যা নেই। তবে সিক্স লেন হতে হবে লালমনিরহাট শহরের ভিতর দিয়ে। তাতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুর উপকৃত হবে। এই অঞ্চলের তিনটি বন্দর বুড়িমারী, সোনাহাট ও প্রস্তাবিত নৌ, রেল ও সড়কপথ বন্দর মোগলহাট সিক্সলেন সড়কের সাথে যুক্ত হবে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, এক্সপ্রেসওয়ে ও সিক্স লেন নির্মাণ করার জন্য একটি প্রতিনিধি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। তারা দীর্ঘ সময় ধরে জরিপ চালিয়ে প্রকল্প বাস্তাবায়নের উদ্যোগ নিতে যা যা করা দরকার করছে। ইতোমধ্যে রিপোর্ট দাখিল করেছে। প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি নিযে পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করেছে। ডিপিসি তেরি করা হয়েছে। ডোনার খোঁজা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।