পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বিচারক, আইনজীবী ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে অবশ্যই মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা, মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হলে তা বিচারের ব্যাপ্তিকে ক্ষুণ্ন করে। এতে মামলার পক্ষসমূহের খরচ বেড়ে যায় এবং আদালতে মামলার জট বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি বলেন, সকল বিচারপ্রার্থী দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকারী। সে ক্ষেত্রে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে মেডিয়েশন প্রক্রিয়া মামলাজট নিরসনে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে মেডিয়েশন বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সারাদেশের ২৮০ জন বিচারককে সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস)। প্রধান বিচারপতি বলেন, মূলত মেডিয়েশন হলো বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি পদ্ধতি। যে পদ্ধতি আদালত-ট্রাইব্যুনালের প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে থেকে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে মেডিয়েশন পদ্ধতি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে অনুসরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে পঞ্চায়েত অন্যতম। পঞ্চায়তের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ দ্বারাও সমাদৃত হয়ে থাকে। তিনি বলেন, মেডিয়েশন পদ্ধতিতে একজন মেডিয়েটরের মাধ্যমেই কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। যেখানে উভয়পক্ষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা হয়। ফলে উভয়পক্ষের সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়। এটি বিচার বিভাগের ওপর থেকে মামলার চাপ নিরসনে কাজ করে এবং বিচারে সমতা নির্ণয় করে। প্রধান বিচারপতি বলেন, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে দেওয়ানি-ফৌজদারি মামলায় মেডিয়েশনের প্রয়োগ হচ্ছে। বর্তমানে নিউইয়র্কে ১০ শতাংশ দেওয়ানি মামলা বিচারের বিভিন্ন পর্যায়ে থেকেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হচ্ছে। কানাডায় প্রায় ৮০ শতাংশ মামলা এভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াতেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেয়া হয়েছে। আগামী দিনে সমগ্র বিশ্বেই মামলা নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পন্থা হিসেবে মেডিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির (বিমস) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক প্রধান বিচারপতি গীতা মিতাল, জাতিসংঘের অম্বুসম্যান ড. কেভিন বেরি ব্রাউন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মোহাম্মদ নাজির, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমাদ্দার ও বাংলাদেশ ইন্ডিয়া মেডিয়েটর্স ফোরামের চেয়ারম্যান জর্জ যিশু ফিদা ভিক্টর প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া, বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২১ এর জন্য ৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য, বিমসের সহযোগিতায় কয়েক ধাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের মেডিয়েশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশের বাছাই করা মোট ২৮০ জন বিচারক এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আহমেদ সোহেলসহ আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞগণ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।