পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বর্তমান বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা হ্রাসে চীনের বাজারে বাংলাদেশের সব পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার কামনা করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে চীনের সফররত প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমান বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা হ্রাসে আমরা চীনের বাজারে বাংলাদেশের সকল পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের অনুমতির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন পরে বৈঠকের বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি জানান, সন্ধ্যা ছয়টা ৪৫ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা স্থায়ী এ বৈঠকে শি জিন পিং বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে চীন তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়টি তাঁর দেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আপনার এই সফরের মধ্য দিয়ে আমাদের ঘনিষ্ঠ সার্বিক সহযোগিতার অংশীদারত্বে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আপনার চীনা স্বপ্নের মতো আমরাও রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ গ্রহণ করেছি। এর লক্ষ্য হচ্ছে-২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা। এ ক্ষেত্রে চীনকে আমরা বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি।
প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা সব সময়ই চীনের জাতীয় স্বার্থে সে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো বিশেষ করে এক-চীন নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছি। অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে চীনের সহযোগিতাকে আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, এগুলো আমাদের আর্থসামাজিক অগ্রগতিকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে তাঁরা একটি মাস্টার প্ল্যান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য ও কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।
ছয় বছর আগে ঢাকা সফরের কথা উল্লেখ করে শি জিন পিং বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক খাতে বর্তমানে চমৎকার পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে শি জিন পিং প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন। ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা যোগ দেন।
স্পিকারের সাক্ষাৎ
এদিকে গতকাল বিকেলে লা মেরিডিয়েন হোটেলে শি জিন পিং এর সাথে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিকাল ৫টা থেকে ২০ মিনিট ধরে হোটেল লা মেরিডিয়ানে স্পিকারের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল শি’র সঙ্গে বৈঠক করেন। হুইপ মাহবুব আরা গিনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ফারুক খান ও সংসদ সচিবালয়ের সচিব আবদুর রব হাওলাদার প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
এসময় চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের দিক থেকে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। জিনপিং বলেন, বাংলাদেশ একটি চমৎকার সম্ভাবনাময় দেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে অনেক এগিয়েছে। চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় এবং বহু বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাৎকালে তারা দ্বি-পাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা দু’দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়েও কথা বলেন। চীনের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিরাজমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং চীন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।