Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনকে এ অঞ্চলের স্বাধীনতাকামীদের পাশে দাঁড়াতে হবে: ডা. জাফরুল্লাহ

‘চীন-বাংলাদেশের সম্পর্কের ৪ দশক’ শীর্ষক ন্যাপের আলোচনা

প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার
কাশ্মির মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের অবসান হবেনা বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, চীনকে কাশ্মিরিদের পাশে দাঁড়াতে হবে, ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। একইভাবে উলফা, মনিপুরি, অরুণাচল থেকে মেঘালয় পর্যন্ত যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে, তাদের পাশেও দাঁড়াতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে চীনের প্রেসিডেন্ট শিন জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৪ দশক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-(বাংলাদেশ ন্যাপ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চীনকে ১৯৭১ সালের মতো ভুল করলে চলবে না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা পৃথিবীর অমঙ্গল বয়ে আনবে। মানুষের প্রাণহানি হবে। ভারতের আধিপত্যবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান দেখতে পেয়েছিলেন ভারতের আধিপত্যবাদী চেহারা। দেখেছিলেন রক্ষীবাহিনীর চেহারা। এজন্য তিনি ’৭২ সালের সংবিধানে একটি ধারা করেছিলেন, পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে স্বাধীনতাকামীদের আমরা (বাংলাদেশ) সমর্থন দেব। তাই যদি দিতে হয় তাহলে আমাদের দরজা উলফার জন্য খুলে দিতে হবে। আমাদের দরজা মনিপুর ও মেঘালয়বাসীদের জন্য খুলে দিতে হবে। ঠিক যেভাবে খোলা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও উলফার ট্রেনিং বাংলাদেশে অব্যাহত ছিল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের আমলেও উলফার ট্রেনিং অব্যাহত ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়ার আমল থেকে ভারতীয়রা এটি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের কণ্ঠ রোধ করছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, ভারত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা, তাদের দুর্যোগ অব্যবস্থাপনার কারণে ১০ লাখ লোক মারা গিয়েছিল। তাদের তালিকা আজ পর্যন্ত ভারত আমাদের কাছে হস্তান্তরও করেনি। রেডক্রসকে সে তালিকা দেয়নি। অনেকে যে ৩০ লাখ ৩০ লাখ (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ) বলছেন, তার মূল কোথায়? সেটা আড়াল করতে ভারতীয় প্রচারণায় মুক্তিযুদ্ধে সেই শহীদদের নাম লিপিবদ্ধ করতে দিতে আগ্রহী নয়। ৩০ লাখ শহীদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলে তাদের স্বজনরা বলতে পারবে আমার বাবা, আমার দাদা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু এটা করতে সরকার উৎসাহিত নয়। অথচ তারা ৩০ লাখ শহীদ (সংখ্যা) নিয়ে খেলছে। এর মূল কারণ এটা ভারতীয় চক্রান্ত। ভারত জানে শহীদদের তালিকা করলে ভারতের শরণার্থী শিবিরে যে ১০ লাখ বাংলাদেশি মারা গিয়েছিল, সেটা সামনে চলে আসবে।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেন, মানুষ সমাজে বটগাছের আশ্রয় খোঁজে, পাখিও খোঁজে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। সামাজিক, সাংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু প্রয়োজন। চীন আমাদের সেই পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি চীনকে পরীক্ষিত বন্ধু মনে করে। তার সফর বাংলাদেশে রাজনীতিতে দীর্ঘ প্রভাববিস্তার করবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেবেল রহমান গানি বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলদেশের যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে, চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সেই সম্পর্ক জোরালো করতে ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে এক মাত্র চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলেই উপকৃত হবে। নইলে অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বর্তমানে যে ভাবে আগ্রাসনের শিকার হয়েছে সেভাবে আগ্রাসনের শিকার হবে। চীনের দায়িত্ব মানবতার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশকে আগ্রাসির জিঞ্জির হতে রক্ষা করবে।
চীনা প্রেসিডেন্টের আসন্ন বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্ক আরো বেশি শক্তিশালী করবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, কাশ্মির ও রোহিঙ্গা ইস্যুও সমাধান ছাড়া জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় দল চেয়ারম্যান এ্যাড. এহসানুল হুদা, ন্যাপ প্রেসিডিয়াম সদস্য সাদ্দাম হোসেন, ব্যারিস্টার মশিউর রহমান গাণি, যুগ্ম মহাসচিব মো. নুরুল আমান চৌধুরী, সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, নগর সদস্য সচিব শহীদুননবী ডাবলু, নারী নেত্রী বাসন্তি বড়–য়া বাবলী, আবদুল্লাহ আল কাউছারী, জিল্লুর রহমান পলাশ প্রমুখ।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীনকে এ অঞ্চলের স্বাধীনতাকামীদের পাশে দাঁড়াতে হবে: ডা. জাফরুল্লাহ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ