পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনার কারণে সশরীরে গ্রাহকের উপস্থিতি কমেছে ব্যাংকগুলোতে। অর্থ স্থানান্তর, বিল নিষ্পত্তি বা পরিশোধের ক্ষেত্রে মুঠোফোন প্রযুক্তির ওপর আস্থা রেখেছেন তারা। দিন দিন বেড়েছে সক্রিয় হিসাব ও গ্রাহকের সংখ্যা। তবে আগস্ট শেষে গ্রাহক ও সক্রিয় হিসাব সংখ্যা বাড়লেও জুলাই মাসের চেয়ে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। টাকার অঙ্কে যা চার হাজার কোটির বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) আগস্ট মাসের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। এমএফএস-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকরা ৬২ হাজার ২৩০ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার সাত কোটি টাকা। এর আগের মাস জুলাইয়ে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল দুই হাজার ১৪২ কোটি টাকা। ওই মাসে মোট লেনদেন হয় ৬৬ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তবে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা ‘নগদ’-এর তথ্য এখানে যোগ হয়নি। নগদের হিসাব যোগ হলে মোট লেনদেন ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যেত। অর্থাৎ দৈনিক লেনদেনে নতুন করে যুক্ত হতো ৭৫০ কোটি টাকার মতো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার মধ্যে গ্রাহকদের কাছে মোবাইলের লেনদেন আরও জনপ্রিয় করতে বিশেষ ছাড় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মানুষও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশলেস লেনদেনের ওপর আস্থা রাখে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-বোনাস, সরকারের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন ভাতা ও অনুদান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হয়। পবিত্র ঈদুল-আজহার সময় এ সেবায় লেনদেনের পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। সবমিলিয়ে জুলাই মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। আস্তে আস্তে করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। ঈদ-পরবর্তীতে অর্থাৎ আগস্ট মাসে মানুষের কেনাকাটাও কমতে থাকে। সরকারি বিভিন্ন অর্থবরাদ্দও লোপ পায়। সঙ্গে মোবাইলে রেমিট্যান্স প্রবাহও কমে যায়। সবমিলিয়ে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমে যায়। তবে লেনদেন কমলেও আগের মাসের চেয়ে আগস্টে গ্রাহক ও এজেন্ট সংখ্যা বেড়েছে।
জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন অ্যান্ড পিআর শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, সবসময় ঈদের মাসে (জুলাই) মোবাইল ফাইন্যান্সের লেনদেন বাড়ে। এছাড়া করোনার বিস্তার রোধে অনেকে গ্রামে না গিয়ে সহজে প্রিয়জনদের টাকা পাঠিয়েছেন এ মাধ্যমে। পাশাপাশি জুলাই মাসে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটাও বাড়ে। ঈদের পরের মাস আগস্টে স্বাভাবিকভাবে এসব কার্যক্রম কমে যায়। ফলে লেনদেনও কম হয় বলেন শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম।
পদশে বর্তমানে ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। গত আগস্ট মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার টাকা জমা পড়ে (ক্যাশ ইন) ১৮ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। তোলা হয় (ক্যাশ আউট) ১৪ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তিহিসাব থেকে ব্যক্তিহিসাবে পাঠানো হয় ১৯ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। ওই সময় (আগস্ট) কেনাকাটায় তিন হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এ মাধ্যমে। সামাজিক নিরাপত্তার ভাতা কমে ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। কর্মীদের এক হাজার ৯০৩ কোটি টাকার বেতন-ভাতা প্রদান, মোবাইল ফোনের ৬৮৮ কোটি টাকার ব্যালান্স রিচার্জ এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ বাবদ এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট শেষে এমএফএস সেবায় যুক্ত আছেন ১১ লাখ ৬২ হাজার এজেন্ট। নিবন্ধিত গ্রাহক ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি। এর মধ্যে তিন থেকে চার কোটি হিসাবে নিয়মিত লেনদেন হয়। ২০১১ সালের মার্চে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু হয়। প্রথমে বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক এ সেবা চালু করে। পরে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘রকেট’। এরপর বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু হয় ‘বিকাশ’। আর ডাক বিভাগের ব্র্যান্ড ব্যবহার করে ‘নগদ’ বাজারে লেনদেন শুরু করে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। বর্তমানে বিকাশ, নগদ, রকেটের পাশাপাশি এম ক্যাশ, উপায়, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠান মোবাইলে আর্থিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মুঠোফোনে মোট অর্থ লেনদেনের ৭০ ভাগই এখন বিকাশের দখলে। এরপরে রকেটের অবস্থান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।