পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ পরনির্ভরশীল রাজনৈতিক দল নয় বলে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ভারতের বিজিপি যেদিন ক্ষমতায় আসে সেদিন আমাদের দেশের অনেক বন্ধুরা বগল বাজিয়েছিলেন।
তারা মনে করেছিলেন, এবার বোধহয় আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে গেল। কিন্তু আওয়ামী লীগ তো পরনির্ভরশীল ও পর কোনো দেশের শক্তির ওপর নির্ভরশীল দল নয়। আওয়ামী লীগ এদেশের তৃণমূলের শক্তি। তৃণমূলের ওপর নির্ভরশীল।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউটে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রাম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ইন্দিরা-মুজিব ল্যান্ড বাউন্ডারি চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি কেউ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। শেখ হাসিনা সেই চুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন। অর্থাৎ আমার বাড়ি আছে সীমানা নাই, তেমনি একটি রাষ্ট্র ছিল। সীমানা ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ একটি পরিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানচিত্র পরিচিতি পেয়েছে।
বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে আমু বলেন, বাংলাদেশ আর আওয়ামী লীগ একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশের সমগ্র উন্নয়নে আওয়ামী লীগ ওঁতোপ্রতোভাবে জড়িত। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশ বারবার পুরস্কৃত হয়েছে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শেখ হাসিনার কারণেই। ভারতের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ফের ৩০ বছরের চুক্তি হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, তা দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার অর্জন।
দেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগের অবদান ও ঐতিহ্য মানুষের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দলীয় নেতাকর্মীর বাইরে যারা আওযামী লীগের শুভাকাঙ্খি রয়েছেন, তারা মানুষের কাছে দলীয় অর্জন তুলে ধরবেন। কারণ দলীয় লোকদের চেয়ে যারা দলের বাইরের শুভাকাঙ্খি রয়েছেন তারা এসব কথা বললে মানুষ বেশি বিশ্বাস করবে শুনবে এবং আমলে নেবে। আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের কথা বলতাম তখন মানুষ বলতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় আমরা এসব কথা বলছি। কিন্তু যখন জাহানারা ইমামকে দিয়ে বলানো হতো তখন কিন্তু এটা মানুষের কাছে অন্য রকম বার্তা দিয়েছে। এজন্য সবাইকে যার যার জায়গা থেকে কথা বলতে হবে। প্রচারণা চালাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. হারুন-অর-রশিদ। আওয়ামী লীগের অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রাম নিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সরোয়ার, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুইয়া, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ওয়াহিদুজ্জামান চান প্রমুখ।
মুনতাসির মামুন তার বক্তব্যে বলেন, কেন জানি মনে হয় আওয়ামী লীগ তৃণমূল নেতাকর্মী ও গরিব মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ গরিব দল। কিন্তু এই দলটি ক্ষমতায় গেলে কেন জানি তাদেরকে মূল্যায়ন করে না। এটা কেন, আমি জানি না। এজন্য আওয়ামী লীগকে বিরোধীদলে থাকলেই ভাল মানায়। দল সুসংহত থাকে। তখন নেতারা সবার খোঁজ-খবর রাখেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাফল্য অনেক বেড়েছে। একারণে তারা সমালোচনা সহ্য করতে চায় না। এটা কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য খারাপ হতে পারে। সমালোচনা থাকতে হবে। তা নাহলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের উদাহরণ দিয়ে মুনতাসির মামুন বলেন, অনেক এ প্লাস পাচ্ছে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় তিন শতাংশ পাস করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ শতাংশ পাস করছে। এসব নিয়ে তো কথা বলতে হবে। কিন্তু কেন সেই সমালোচনা নেয়া হয় না।
নারীদের হিজাবের সঙ্গে আপোষ না করার আহ্বান জানিয়ে মুনতাসির মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ দল সৃষ্টি হয়েছে অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। কেন তারা হিজাবীদের সঙ্গে আপোষ করবে। এটা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যায় না।
সম্পাদক গোলাম সরোয়ার বলেন, অলক্ষ্যে কেন জানি মনে হয় আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে আপোষ করছে। এটা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। অসাম্প্রদায়িকতাকে সঙ্গে নিয়েই আওয়ামী লীগকে চলতে হবে। চীনের প্রেসিডেন্টের আগমন নিয়ে তিনি বলেন, চীন আমাদের উন্নয়নের বড় অংশীদার। কিন্তু তাদের সঙ্গেও চুক্তি করার ক্ষেত্রে আমাদের ভেবে চিন্তে করতে হবে। কারণ ঋণ কতটুকু দিতে হবে। আমরা কতটুকু সুবিধা পাবো এসব বিবেচনায় নিতে হবে।
১০ টাকার চাল নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে উল্লেখ করে সমকাল সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এটা যায় না। ১০ টাকার চাল দেয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি ভাল উদ্যোগ। এই উদ্যোগ কতিপয় নেতাকর্মীর জন্য ভেস্তে যেতে পারে না। পত্র-পত্রিকায় খবর আসছে অনিয়ম নিয়ে। এসব আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।