পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : লিবিয়া যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩৯ জনকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল (বৃহস্পতিবার) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের পরিচালক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুয়া ভিসা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে একটি মানব পাচারকারী চক্র ৩৯ জনকে লিবিয়া পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটকের পাশাপাশি মানব পাচারকারী চক্রটিকেও শনাক্ত করেছি। মানব পাচারে জড়িত দু’টি ট্রাভেল এজেন্সি এবং ৩০ জন দালালকেও শনাক্ত করেছে র্যাব।
এদিকে আটককৃত বিদেশগামীদের কয়েকজন জানান, ওই চক্রের মাধ্যমে গত কয়েকদিনে কয়েকশ’ লোক এভাবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে লিবিয়া চলে গেছে। তবে এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশন পুলিশ কিংবা র্যাবের কাছে কোন তথ্য নেই বলে জানান কর্মকর্তারা।
ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের জাল ভিসায় লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত লোকজন ধরা পড়ছে। গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তারা জানান, মানব পাচারের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দালালদের মাধ্যমে লোকজন সংগ্রহ করে নিয়ে এসে ঢাকার ফকিরাপুলস্থ হোটেল ড্রিমল্যান্ড, আলিজা, ইসলামপুর, শেল্টার, হোটেল এশিয়া, প্রবাস এবং চট্টগ্রামের হোটেল সুইসপার্ক, অলংকার ও রেয়াজউদ্দিন বাজারের হোটেল আল ছালামতসহ অন্যান্য আবাসিক হোটেলে উঠানো হয়। পরবর্তীতে অপরিচিত কিছু লোক এসে এদেরকে ভিসা এবং পাসপোর্ট দিয়ে যায়। বিমানের টিকিট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এদের যাতায়াতের রুট ছিল চট্টগ্রাম-দুবাই-তুরস্ক (ইস্তাম্বুল/আঙ্কারা)-লিবিয়া (ত্রিপোলি)।
র্যাব জানায়, মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা চুক্তির মাধ্যমে লিবিয়া পাঠানোর জন্য লোকজনদের প্রলুব্ধ করে। উদ্ধারকৃত ৩৯ জন বিদেশগামীর মধ্যে শুধুমাত্র ১ জন ১ লাখ টাকা এবং আরেকজন ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এছাড়া অবশিষ্ট বিদেশগামীরা লিবিয়া পৌঁছানোর পরে টাকা পরিশোধ করবে। লিবিয়া পৌঁছানোর পরে কিছু কিছু বিদেশগামী নিজ উদ্যোগে এবং কিছু কিছু দালালের মাধ্যমে ইতালি যাবে বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকা, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার এবং সুনামগঞ্জ অঞ্চলের ৩০ জন দালাল এবং ২টি ট্রাভেল এজেন্সি (আল মামুন ট্রাভেলস, পূর্ব জিন্দাবাজার, গ্যালারী মার্কেট, সিলেট) এবং শামিম ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস, (সিলেট ব্রাঞ্চ) শনাক্ত করা হয়।
উদ্ধারকৃতদের পাসপোর্ট এবং ভিসা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়া ১৯ জনের ভিসার ইস্যুর তারিখ একই দিন (৫ অক্টোবর) এবং মেয়াদ ৩০ দিন। বাহিরে অপেক্ষারত বাকী ২০ জনের ভিসার অনুলিপি থেকে দেখা যায়ঃ কিছু কিছু ভিসার মেয়াদ মাত্র ১ দিনের। কিছু কিছু ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ। মূল ভিসার পরিবর্তে পাসপোর্টে ভিসার অনুলিপি সংযুক্ত। সবগুলো ভিসাই স্বল্প মেয়াদী। উদ্ধারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মানব পাচারকারীদের সাথে আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজশ রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিদেশগামীদেরকে দুবাই পৌঁছানোর পর বিমানের টিকেট (চট্টগ্রাম-দুবাই) এবং দুবাইয়ের ভুয়া ভিসা ছিঁড়ে ফেলতে নির্দেশনা দেয়া হয় এবং সেখান থেকে অন্য আরেকটি চক্রের মাধ্যমে তুরস্ক হয়ে লিবিয়া পাঠানোর পরিকল্পনা হয়। লিবিয়াতে তাদের রিসিভ করার জন্য দালালচক্রের প্রতিনিধিরা (লিবিয়ার দালাল : সাদিক এবং মোজাম্মেল) এয়ারপোর্টে আসে এবং তাদের নিয়ে লিবিয়ার বিভিন্ন হোটেলে উঠানো হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। র্যাব জানায়, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হবে। দালালদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।