পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়ে কাজ না দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল ভয়ংকর একটি মানবপাচারকারী চক্র। অল্প সময়ে ধনী হওয়ার লোভে ধীরে ধীরে মানব পাচারকারী চক্রের বড় সিন্ডিকেট তৈরি করে সাইফুল ইসলাম ও তৈয়ব আলী। এ চক্রের রয়েছে শতাধিক সদস্য। এরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল্য থেকে লোক সংগ্রহ করে এবং পরে প্রতারণা করতো। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা সাইফুল ইসলাম ও মো. তৈয়ব আলীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১০টি পাসপোর্ট, ৭টি ফাইল, ৪টি সিল, ১৭টি মুঠোফোন ৫টি নিবন্ধন খাতা, ৩টি সিম কার্ড,৪টি ব্যাংকের চেক বই, ২টি কম্পিউটার এবং নগদ ১০ হাজার ৭০০ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্য ব্যক্তিরা হলো-শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ওরফে লিমন (৩৮), মারুফ হাসান (৩৭), জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), লালটু ইসলাম (২৮), আলামিন হোসাইন (৩০) ও আবদুল্লাহ আল মামুন (৫৪)। গতকাল বুধবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪-এর পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, মেহেরপুরের গাংনী থানার কামন্দী গ্রামে মুদিদোকানি সাইফুল ইসলাম কয়েক বছর আগে মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসতেন। অল্প সময়ে ধনী হওয়ার লোভে ধীরে ধীরে মানব পাচারকারী কোনো চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। চক্রের দালাল হিসেবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করতেন সাইফুল। অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাড্ডা এলাকায় অনুমোদনহীন তিনটি ট্রাভেল এজেন্সি টুটুল ওভারসিজ, লিমন ওভারসিজ ও লয়াল ওভারসিজ খোলেন সাইফুল। তার শতাধিক লোকেরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার, শিক্ষিত নারী-পুরুষদের মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করান। পরে তাদের বাড্ডায় অনুমোদনহীন ট্রাভেল এজেন্সিতে এনে সউদী আরব, জর্ডান ও লেবাননে টাকা পাঠানোর কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই থেকে তিন লাখ আদায় করেন। এরপর সাইফুল বৈধ ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কেটে তাদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠান। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সাইফুলের লোকেরা পাসপোর্ট ও মুঠোফোন নিয়ে তাদের আরেক পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেন।
তারা নারীদের বাসাবাড়িতে ও পুরুষদের পণ্য বিক্রির দোকানে কাজে দিয়ে দেন। মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছানোর পর পাচারের শিকার নারী–পুরুষেরা বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলার পরই তাদের মুঠোফোন কেড়ে নেয়া হয়। অনেকেই তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। ছয় বছর ধরে সাইফুল এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরো বলেন, সাইফুলের মাধ্যমে জর্ডানে যাওয়া আসমা বেগম নামের এক নারীর সঙ্গে তাদের পরিবারের সাত দিন ধরে যোগাযোগ নেই। এ পর্যন্ত ২৫ জন ভুক্তভোগী র্যাবের কাছে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই থেকে তিন লাখ নিয়েছেন সাইফুল। সাইফুলের প্রতারণার কাজে অন্যতম সহযোগী আবু তৈয়ব। সে কোনো পড়াশুনা জানে না। চায়ের দোকান ছিল তার। সাইফুলের প্ররোচনায় মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ও বহু লোককে প্রতারণামূলকভাবে বিদেশে পাঠানো এবং দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা-পয়সা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তৈয়ব নিজেকে দেশের একটি স্বনামধন্য এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে চাকরি এবং দেশের নামি-দামি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েকজন ভিকটিমকে চাকরি প্রদানের ভুয়া নিয়োগপত্রও দিয়েছে। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত বাকিরা মাঠ পর্যায়ে টার্গেট সংগ্রহ, প্রার্থীর পাসপোর্টের ব্যবস্থা, কথিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, টাকা সংগ্রহ, প্রাথমিক মেডিক্যাল সম্পূর্ণ করাসহ অন্যান্য কাজে সহায়তা করতো। সাইফুল ও তৈয়বের নির্দেশে এই চক্র মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করতো। তাদের কয়েকটি টিম দেশজুড়ে কাজ করে।
বৈধতা না থাকার পরও কীভাবে মানবপাচার করেছিল সাইফুল-তৈয়ব চক্র? জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, তাদের ৩টি ওভারসিজ প্রতিষ্ঠানের বৈধতা না থাকায় বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষকে পাচার করেছে। এছাড়া শতাধিক মানুষকে বিদেশে পাঠানো কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত ২৫ জনের মতো ভুক্তভোগী র্যাবে যোগাযোগ করেছেন। প্রতারিত ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।