পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের গতকাল মহাসপ্তমী সম্পন্ন হয়েছে। ভোরে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশের মধ্যদিয়ে শুরু হয় সপ্তমী পুজো। নবপত্রিকাকে দেবীর ডানদিকে সিদ্ধিদাতা গণেশের পাশে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে। আজ বুধবার অষ্টমী তিথিতে নির্জলা উপবাস থেকে মন্দিরে মন্দিরে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হবে। এই দিনই হবে সন্ধীপূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে ‘কুমারী পূজা’।
নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ ৯টি পাতা। রম্ভা (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মান ও ধান এই ৯টি উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হয় এই নবপত্রিকা। মূলত এই ৯টি উদ্ভিদ দেবী দুর্গার ৯টি শক্তির প্রতীক। নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। এই শস্যবধূকেই দেবীর প্রতীক রূপে গ্রহণ করে প্রথমে পুজো করতে হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। এই দিনই চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবীর মৃন্ময়ীতে। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে (১৬ উপাদানে) দুর্গা দেবীর পূজা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য ও চন্দন দিয়ে পূজা করা হয়। পূজা শেষে দেবী দুর্গার চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন ভক্তরা। ঢাকের তালে, মন্ত্র ও চন্ডীপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মন্দিরে মন্দিরে উৎসবে মেতে উঠে পুরো সনাতনী গোষ্ঠী।
শাস্ত্রমতে, এদিন পূজিত কুমারী কন্যার নামকরণ করা হয় ‘উমা’। ভক্তদের মতে, এটি একাধারে ঈশ্বরের উপাসনা, মানববন্দনা আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। মূলত নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর ঈশ্বর আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নবমীতে মন্ডপে মন্ডপে দেবীর মহা প্রসাদ বিতরণ করা হবে। ১৫ অক্টোবর দশমীতে তিথিতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দোলায় চড়ে আবারো ফিরবেন কৌলাশে।
সরজমিন রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই দেবী দর্শনে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। সারি সারি বাঁশ বেঁধে নির্ধারণ করা হয়েছে নারী-পুরুষের পৃথক প্রবেশ দ্বার। চলমান করোনা পরিস্থিতির দিকেও রাখা হয়েছে বিশেষ নজর। পুরো মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ-আনসারসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মন্দিরে আগত সাহা বলেন, আমরা পুরো একটা বছর অপেক্ষায় থাকি এই দিনগুলোর জন্য। একে অপরের আনন্দ ভাগাভাগি করার মধ্যদিয়ে পূজার দিনগুলো কখন কেটে যায় টেরই পাই না। সব থেকে বেশি মজা হয় আজ অষ্টমীর দিন সকালে অঞ্জলি দেয়া ও দশমীতে সিঁদুর খেলা। আর পূজাকে ঘিরে নিজের ও আপনজনদের জন্য নতুন পোশাক কেনা-কাটাও কম আনন্দের না।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, নির্বিঘেœ দুর্গাপূজা পালনে সারা দেশের পূজামন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দুর্গোৎসবের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি পূজা আয়োজকদের স্বেচ্ছাসেবকরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।