পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি অর্থবছরেও বরাবরের মতো জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভিন্ন ধরনের হিসাব দিয়েছে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি সরকারের কাছাকাছি থাকলেও বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের হিসাবে খানিকটা পার্থক্য রয়েছে। সরকারের দাবি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চেয়ে, সরকারীভাবে যে হিসাব করা হয় সেটিই বেশি নির্ভরযোগ্য। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন দুই ধরনের হিসাবেই কিছু না কিছু প্রভাব থাকে। প্রতিবছরই জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের পূর্বাভাসের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। এ নিয়ে থাকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত।
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে বিশ্ব অর্থনীতির গতি নেতিবাচক দিকে যাবে বলেই বলা হয়েছে। সে প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। যেখানে বিশ্বব্যাংক বলছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির পূর্বাভাস সাত দশমিক এক শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেটে অর্থমন্ত্রীর পূর্বাভাস দিয়েছেন প্রবৃদ্ধি হবে সাত দশমিক দুই শতাংশ।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশে হতদরিদ্রের হার কমে হবে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। যা ২০১১ সালে ছিল ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৫ সালে এ হার ছিল ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৪ সালে ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে সামনে বেশ কয়েকটা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাই বিশ্বব্যাংক গত অর্থবছরে অর্জিত ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে ভিত্তি ধরে অতিদারিদ্র্যের হার হিসাব করেছে।
জাহিদ হোসেন বলেন, জীবনযাত্রার মানদ-ের বিচারে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং অতিদারিদ্র্যসীমা নির্ধারণে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনায় বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে ভালো করেছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) হিসাব অনুযায়ী, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৮ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। অথবা ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখে এসডিজি অর্জন সম্ভব যদি প্রবৃদ্ধিকে অধিক অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যায়।
প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, দরিদ্র মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় জোরদার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ এবং এই জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্য বিপণন ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধিকে অধিক অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যেতে পারে। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলে ২০৩০ সালের আগেই বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে আসবে।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশের নিচে নেমে এলে তাকে শূন্য দারিদ্র্য বলে হিসাব করা হয়েছে।
সিনিয়র সচিব এবং সদস্য জিইডি পরিকল্পনা কমিশন ড. শামসুল ইসলাম বলেন, সরকারি হিসাবের ভিত্তি ব্যাপক তথ্যভিত্তিক। সরকার সারাদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। অন্যসব প্রতিষ্ঠান নিজেরে দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রক্ষেপণ করে। সব সময়ই এদেরটার সাথে সরকারের পার্থক্য হয়। তিনি জানান, গত সাত বছর আমি দেখেছি সরকার যেটা করে সেটাই ঠিক ঠিক থাকে। কিন্তু দেখা যায়, ওই সব প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে স্থির থাকে না। এক সময়ে এসে তারা সরকারের সাথে সমন্বিত হয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চেয়ে সরকারিভাবে যে হিসাব করা হয় সেটিই বেশি নির্ভরযোগ্য বলে দাবি সরকারি পক্ষের। বিশ্লেষকরা মনে করছেন জিডিপি প্রবৃদ্ধি হিসাবের সময় রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে বিশ্ব বাজারের এক ধরনের প্রভাব থাকায় হিসাবে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাধারণত সরকারের যে প্রাক্কলন করা হয় সেখানে বিভিন্ন মাধ্যমে আসলেও সাধারণত রাজনৈতিক ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজার প্রেক্ষাপটে কি ঘটছে সেগুলোর একটা প্রভাব বাংলাদেশ নিয়ে আসে। তিনি বলেন, সরকার ও সংস্থাগুলোর প্রাক্কলনে কিছুটা বায়াস আছে। একদিকে নিচের দিকে রাখার প্রবণতা অন্যদিকে উপরের দিকে। তবে এটা থাকতে পারে। এটা পরস্পর বিরোধিতা মনে করি না। তবে বিশ্বে বড় ধরনের কিছু না হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কোন প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।