পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একের পর এক মামলায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের মো. আবদুল হাইয়ের (৬৫) জীবন। খুন থেকে ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ যেন কোনো মামলা নেই, যাতে তাকে আসামি করা হয়নি। এ যেন ঢাকার শান্তিবাগের বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের মতোই। সন্ত্রাসীচক্র নিজেরা অপরাধ করে একের পর এক দায় চাপিয়ে যাচ্ছে উদোরপিণ্ডিবুধোর ঘাড়ে।
আব্দুল হাই একা নন- পরিবারের সব সদস্যের বিরুদ্ধেই একের পর এক দায়ের হচ্ছে মামলা। এসব মামলায় তিনিসহ কেউ ঘরে থাকতে পারছেন না। জামিন পেলেও কারাভোগ করতে হয়েছে ছিনতাইয়ের মিথ্যা মামলায়। এসব মামলায় লড়তে গিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। উকিলের ফি যোগাড় করতে গিয়ে জমি-জিরাত সব বিক্রি করতে হয়েছে। ধারাবাহিক মামলার হয়রানি থেকে বাঁচতে বিভিন্ন মামলার রেকর্ডপত্র নিয়ে তিনি ধর্না দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দুয়ারে। তিনি চান ৬ খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হোক। আইনের আওতায় আনা হোক সন্ত্রাসীদের। তার পরিবারের সদস্যদের আর কোনো মামলায় যাতে আসামি হতে না হয়।
মো. আব্দুল হাই জানান, তার বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার উত্তর মালিভিটা গ্রামে। পিতা-মরহুম আব্দুল লতিফ। তার দাবি, স্থানীয় সন্ত্রাসী মো. জজ মিয়া, সাহাবুদ্দিন, দেলোয়ার, আনোয়ার, রিপন, মরহুম মোহর আলীর স্ত্রী মাফিয়া, আমেলা, ছালাউদ্দিন, জসু, রফিক মিয়া, শামীম, মোমিন, স্বপন, আমিনা, নাছির, চামেলি এবং মিলন একের পর এক মামলা দায়ের করছে। এর মধ্যে রয়েছে খুন, হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজির মামলাও।
আবদুল হাই বলেন, ঘটনার সূত্রপাত ২৮ বছর আগে। আমি তখন কুয়েত। সেখান থেকেই জানতে পারেন তার পরিবারের একজন নারী সদস্য (নাম প্রকাশে আপত্তি রয়েছে) অপহৃত হয়েছেন। দেশে অবস্থানরত তাই ভাই আব্দুল হালিম অপহরণকারী চক্রের হোতা জজ মিয়াসহ সংঘবদ্ধ চক্রের ১২ সদস্যের বিরদ্ধে একটি ‘অপহরণ মামলা’ করেন। মামলার বিচারে আসামিরা বিভিন্ন মেয়াদ দণ্ডিত হয়। কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের প্রতি চক্রটি প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে।
এরপর জজ মিয়া আমাকে জড়ায় ধানমন্ডির বিএনপি নেতা নাদু হত্যা মামলায়। এ মামলায় ৫ বছর আদালতের বারান্দায় কাটে তার। ব্যয় হয় বিপুল অর্থ। এটিতে ব্যর্থ হয়ে জজ মিয়া নিজেই বাদী হয়ে আমার সহোদর ডা: আব্দুস সামাদসহ পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা দেয়। সেটিতে জামিন লাভের পর জজমিয়া চক্রের সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন মুন্সিগঞ্জ সিরাজদিখান থানায়। দিদার হত্যা মামলায় জড়ানো হয় আমাকে (আব্দুল হাই)।
মামলাটির কার্যক্রমের ওপর বর্তমানে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। ২ মাস না যেতেই তাকে জড়ানো হয় পিতৃহীন মাদরাসা ছাত্রী শারমিন (১৩) হত্যা মামলায়। যদিও শারমিনের মা মাফিয়া হলফনামায় এই মর্মে উল্লেখ করেন যে, জজ মিয়ার পুত্র রিপন শারমিনের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। মামলাটিতে আব্দুল হাই ছাড়াও পরিবারের অন্তত ২৫ জনকে আসামি করা হয়। শারমিন হত্যার ২৫ দিনের মাথায় দেলোয়ারের পিতা অহিদুলের আকস্মিক মৃত্যু হয়। এটিকেও ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ হিসেবে চালানোর চেষ্টা চলে। আসামি হিসেবে জড়ানোর চেষ্টা করা হয় আব্দুল হাইকে।
২০১৩ সালে তার বাড়ির উঠানে এনে তানিয়া নামের প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে হত্যা করে এর দায় আব্দুল হাইয়ের ওপর চাপানোর চেষ্টা চলে। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে ক’দিন পর জজ মিয়া গং নিজেরাই মেয়েটিকে আগুনে পুড়িয়ে মারে। এই মামলায়ও আব্দুল হাইকে আসামি করা হয়। কিন্তু এ ধরনের আশঙ্কা ব্যক্ত করে আগে থেকেই জিডি থাকায় এ থেকে রেহাই পান আব্দুল হাই। কিছুদিন পর আব্দুল হাইয়ের ভাতিজা শাহীনকে হত্যা করে জজ মিয়া গং। এই ডামাঢোলে ধামাচাপা দেয়া হয় তানিয়া হত্যা মামলা।
আব্দুল হাই আরও জানান, জজ মিয়ার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসীবাহিনীর অন্যতম সদস্য রিপন এবং দেলোয়ার পুলিশের গাড়ি পোড়ানো মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ২০০৯ সালে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদ করায় আব্দুল হাইকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে রিপন ও মমিন। লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় ওইদিন তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তিনি বলেন, জজ মিয়ার বাড়িতে তানিয়াসহ অন্তত: ৬ জন নিরীহ মানুষ খুন হয়েছে। রিপন ও দেলোয়ার সিরিয়াল কিলার। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিষয়ে নির্বিকার।
জজ মিয়াসহ খুনিচক্রের সদস্যদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না গেলে আব্দুল হাইসহ আরও অনেককেই তাদের হাতে লাশ হতে বলে আশঙ্কা তার। এ কারণে ধারাবাহিক ৬ খুনের প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন এবং দোষীদের শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে আকুল আবেদন জানিয়েছেন আব্দুল হাই। একই সঙ্গে নিজ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিও আকুল মিনতি প্রকাশ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।