পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার বাংলাদেশের আদালতে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে ফ্রি ফায়ার গেমস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের ‘গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড’। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের রিটে পক্ষভুক্ত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ জন্য গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে তারা আবেদনও করে। আবেদনে বলা হয়, ফ্রি-ফায়ার গেমের অসংখ্য প্লেয়ার বাংলাদেশে রয়েছে।
আদালতের আদেশে ফ্রি ফায়ার গেমসের লিংক ব্লক করে দেয়ার কারণে গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড ব্যবসায়িকভাবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই রিট মামলায় ‘গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড’ পক্ষভুক্ত হতে চায়। তাদের এই আবেদনের ওপর ইতোমধ্যে তিন দিন শুনানি হয়েছে। গতকাল রোববার শুনানি সম্পন্ন হয়। আবেদনের বিষয়ে আদেশ ২৬ অক্টোবর। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ আদেশের তারিখ ধার্য করেন।
গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার তানভীর কাদের। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব।
ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী সম্প্রতি পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের রিটে পক্ষভুক্ত হতে আমরা আবেদন করেছি। আদালত এই আবেদনের আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন রেখেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত যদি আমাদের পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন এরপর ফ্রি-ফায়ার গেম চালু করতে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গত ১৬ আগস্ট সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অবিলম্বে পাবজি, ফ্রি-ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তিন মাসের জন্য এসব গেম অনলাইনে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভসহ ক্ষতিকর অ্যাপ এবং পাবজি ও ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- এই মর্মে রুল জারি করা হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
গত ২৪ জুন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভসহ ক্ষতিকর অ্যাপ এবং পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বলা হয়, টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ারের মতো অ্যাপ ও গেমে দেশের যুবসমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। এসব গেমস যেন যুব সমাজের জন্য সহিংসতা প্রশিক্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, টিকটক ও লাইকির মতো অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর ও যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। দেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারীরা বিভিন্ন গোপনীয় জায়গায় পুল পার্টির নামে অনৈতিক বিনোদনসহ যৌন কার্যক্রমে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়াও সম্প্রতি নারী পাচার ও দেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনাও ঘটছে। যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক ও দেশের জনস্বার্থ, শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের পরিপন্থি। এছাড়াও দেশের শিশুরা বিভিন্ন অনলাইন গেমগুলোতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।
রিটে আরও বলা হয়, বিষয়টি মনিটর করার জন্য ও সময়ে সময়ে শিশুদের জন্য উপযোগী এবং যথাযথ অনলাইন গেমগুলোকে সুপারভাইজ করার জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা অত্যন্ত জরুরি। তাই সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস ও টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো ক্ষতিকারক অ্যাপসগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ করাসহ সব লিংক বন্ধের অনুরোধ করা হয়। রিটে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।