পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ৫ অক্টোবর প্রথম ধাপে অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল। এর ৫দিন পর গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের জন্যই উন্মুক্ত করে দেয়া হয় আবাসিক হলগুলো। এদিন সকাল ৮ থেকে দ্বিতীয় ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার কার্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখানো শর্তে হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের ফিরে পেয়ে হল প্রভোস্টরা তাদের রজনীগন্ধা ফুল ও চকলেট দিয়ে বরণ করে নেন। ফলে শিক্ষার্থী শূণ্যতায় থাকা হল ও ক্যাম্পাসে আবারও ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য, শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে হল, ক্যান্টিন, ক্লাসরুম, কলাভবন, কার্জন হল, হাকিম চত্ত¡র, টিএসসি এলাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি প্রফেসর আবদুল বাছির বলেন, প্রথম ধাপের মতোই দ্বিতীয় ধাপের জন্য আমরা সব ব্যবস্থা নিয়েছি। হলের প্রবেশদ্বারেই রয়েছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। ভেতরে ঢোকার আগে সবার তাপমাত্রা মেপে দেখা হচ্ছে।
আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগেই আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হলো। মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‹গণরুম› বন্ধের আশ্বাস দিলেও সিটে ওঠা নিয়ে সংশয়ে আছেন প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা, যারা আগে গণরুমে থাকতেন। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি আবাসিক হল ও চারটি হোস্টেলে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থীকে থাকতে হয় ।
আবাসন সঙ্কটের কারণে বেশিরভাগ হলেই সৃষ্টি হয়েছে গণরুমের, যেখানে বড় হলরুমে মেঝেতে টানা বিছানা পেতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হত। কারা এসব কক্ষে থাকবে তার নিয়ন্ত্রণ থাকত ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হাতে। কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি আর কিছু উদ্যোগের পরও এ সমস্যার সমাধান এতদিন হয়নি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ অক্টোবর হল খোলার পর হল প্রশাসন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু ছাত্রত্ব শেষ- এমন কেউ কেউ আবার ফিরে এসেছেন। যেসব শিক্ষার্থী হল প্রশাসন থেকে সিট বরাদ্দ পেয়েও উঠতে পারছেন না, তারা নাম প্রকাশ করে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছেন।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রশাসন আমাকে একটি রুমে সিট বরাদ্দ দিয়েছে, কিন্তু ওই সিটে আমি উঠতে পারছি না। ওই সিটে গেলে সিনিয়র ভাইয়েরা বলছেন তারা এই মুহূর্তে হল ছাড়তে পারবেন না। চাকরির পরীক্ষাসহ নানা অজুহাতে তারা জুনিয়রদের সিট ছাড়ছে না।
স্যার এ এফ রহমান হলের দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রশাসন সিট বরাদ্দ দিলেও ছাত্রলীগ নেতাদের প্রভাবে ওই সিটে ওঠা যাচ্ছে না। ছাত্রলীগ নেতারা এলাকাভিত্তিক বা গ্রুপভিত্তিক সিটে উঠতে দেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বৈধতা বা ছাত্রত্ব যাচাই বাছাই করেই হলে উঠতে দিচ্ছে। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে যারা হলে উঠছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে ওঠার পর নিয়মিত চেক দেওয়া হবে, যাতে অছাত্ররা রুম দখল করে থাকতে না পারে। হল প্রশাসন ইতোমধ্যে যেসব আসন ফাঁকা হয়েছে, সেগুলোর তালিকা করেছে এবং ফাঁকা আসনে গণরুমের শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দিচ্ছে। আশা করি, ছাত্র সংগঠনগুলোও আমাদের সহযোগিতা করবে।
এদিকে দ্বিতীয় ধাপে সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামানের সকাল ১০টার দিকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল এবং রোকেয়া হল পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, সকল শিক্ষার্থীকে হলে ওঠানোর ক্ষেত্রে আমাদেরকে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়েছে। একটি হলো করোনা সংক্রমণের হার এবং শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের অগ্রগতি। দুটিই এখন আশাব্যঞ্জক। একদিকে যেমন সংক্রমণের হার কমে আসছে, অপরদিকে আমাদের শিক্ষার্থীরাও অধিকাংশই ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছে। যারা এখনও নেয়নি, তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. শহীদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে অস্থায়ী টিকা কেন্দ্র করা হয়েছে। এনআইডি কার্ডের জন্য যারা টিকা নিতে পারছে না, তাদের জন্য টিএসসিতে বুথ স্থাপন করে এনআইডি নিবন্ধনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৭ অক্টোবরে সশরীরে ক্লাস শুরুর আগেই শিক্ষার্থীরা সবাই যাতে অন্তত এক ডোজ টিকা নিতে পারেন, সেজন্য সব ব্যবস্থা করার কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আখতারুজ্জামান।
এদিকে মহামারীকালে হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে থাকবে, রিডিং রুম, মসজিদ ও ক্যান্টিন কীভাবে ব্যবহার করবে, সেসব বিষয়ে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিউর) তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি। হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের এই এসওপি মেনে চলতে নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। করোনা সংক্রমণ এড়াতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেসব নিয়ম ও নির্দেশনা মেনে চলতে বলেছে শিক্ষার্থীদেরকে সেসব নির্দেশনা পালন করতে বলেছেন হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।