পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশের শহর-গ্রাম-মফস্বলে যেসব স্বল্পমূল্যের প্লাস্টিকের খেলনা বিক্রি হয় কয়েক বছর আগেও তার প্রায় পুরোটাই ছিল আমদানিনির্ভর। কিন্তু গত দুই থেকে তিন বছরে সেই অবস্থার অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে এখন এসব খেলনার একটা বড় অংশ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশেই। মূলত: ক্ষুদ্র আকারে এই শিল্প গড়ে উঠেছে পুরনো ঢাকা এবং আশেপাশের কিছু এলাকাকে কেন্দ্র করে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ততম খেলনার বাজার পুরনো ঢাকার চকবাজারে। ঐতিহাসিকভাবেই চকবাজার রকমারি পণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত, তবে এখন পুরো চকবাজারজুড়ে গড়ে উঠেছে খেলনার কয়েক’শ পাইকারি দোকান। বিক্রেতারা বলছিলেন, কয়েক বছর আগেও প্লাস্টিকের খেলনার প্রায় পুরোটাই আসতো চীন-তাইওয়ান থেকে। কিন্তু এখন সেই বাজারে ভালো একটি জায়গা দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশে তৈরি খেলনা।
শুরুতে খুব ছোট কিছু খেলনা দিয়ে শুরু হলেও এখন বড় আকারের প্লাস্টিকের খেলনাও তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। এসব খেলনা বিক্রির সবচেয়ে বড় মৌসুম বৈশাখ মাসে।
দেশজুড়ে বিভিন্ন মেলায় বিক্রি হয় এসব খেলনা। এরপরই রয়েছে দুই ঈদ। চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা একজন ক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, দেশী খেলনার দাম কম হওয়ায় মেলায় বিক্রিও হয় ভালো।
বাংলাদেশ টয় মার্চেন্ট, ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহজাহান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে কয়েক দশক আগে অযান্ত্রিকভাবে কিছু খেলনা উৎপাদন হতো এবং দেশজুড়ে সেসব খেলনারই চাহিদা বেশি ছিল। কিন্তু ৯০এর দশকের শুরুতে খেলনা আমদানি শুরু হয় এবং একসময় এটি প্রায় পুরোপুরি আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ে। সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে গত কয়েক বছরে। তিনি বলেন, “মোট চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ খেলনা এখন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে”।
খেলনা প্রস্তুতকারী সমিতির হিসেবে এখন পুরনো ঢাকা এবং তার আশেপাশে প্রায় তিন’শ কারখানায় খেলনা উৎপাদন করা হয়। এসব কারখানাগুলোর অধিকাংশই অবস্থিত ইসলামবাগ, লালবাগ এবং কামরাঙ্গিরচরে। খেলনা তৈরির অধিকাংশ কারখানাই খুব ছোট আকারে তৈরি হলেও কিছু উদ্যোক্তা বড় বা মাঝারি আকারে এখন খেলনা উৎপাদন শুরু করেছেন। কামরাঙ্গির চরে মাঝারি আকারে খেলনার কারখানা তৈরি করেছেন সাবির আলী।
জনাব আলী বলছেন, বড় এবং মাঝারি আকারের খেলনা কারখানার মালিকেরা এখন খেলনা বিদেশে রপ্তানির আশা করছেন, কিন্তু কোন শিল্প এলাকায় কারখানা করতে না পারায় তারা সেটি করতে পারছেন না। জনাব আলীর কারখানা থেকে খেলনার বিভিন্ন অংশ তৈরি হয়ে যায় চুড়িহাট্টায়, বিভিন্ন অংশগুলো জোড়া লাগানোর জন্য। চুড়িহাট্টার কাজকর্ম দেখাশোনা করছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন পরিচালক মোহাম্মদ আফতাব। তিনি বলেন, বাজারে একেক বছর একেক ধরণের খেলনার চাহিদা তৈরি হয়, সে অনুযায়ী তারা খেলনা তৈরি করেন।
চকবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশী পণ্যে লাভ বেশি হওয়ায় তারাও দেশীয় খেলনা বিক্রিতে আগ্রহী। তবে কোন কোন ব্যবসায়ী বলছেন, দেশীয় খেলনা মানের দিক থেকে এখনো আমদানিকৃত খেলনার পর্যায়ে পৌছুতে না পারায় তাদের কাছে বিদেশী খেলনার চাহিদা এখনো বেশি থাকে।
খেলনা প্রস্তুতকারকরা বলছেন, দেশীয় খেলনার মান আগের চেয়ে বেড়েছে এবং অনেকে এখন বড় পুঁজি নিয়েও এই ব্যবসায় আসছেন।
প্রস্তুতকারী সমিতির সভাপতি শাহজাহান মজুমদার বলছিলেন, খেলনার যন্ত্রাংশ আমদানিতে কর কমানো হয়েছে, কিন্তু সেই মানের খেলনা উৎপাদনের শিল্প-কারখানা গড়ে না ওঠায় সেই সুবিধা নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে একসময় ব্যবসা ছিল বছরে ২ থেকে ৩ মাস। কিন্তু এখন সারাবছরই কম-বেশি খেলনা বিক্রি হয়। আর এই সুযোগ ব্যবহার করে অনেক ছোট উদ্যোক্তা এগিয়ে আসছেন এই শিল্পে। - ওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।