পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ২৮০ মেগাওয়াট পিক সক্ষমতার তিস্তা পাওয়ার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিদেশী সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড। সোলার মডিউল, সোলার ইপিসি মেইন প্লান্ট এবং সুইচইয়ার্ড ও সাবস্টেশন নির্মাণের জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।
স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়া তথ্যানুসারে, চুক্তি অনুসারে বিদেশী সরবররাহকারীদের ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বেক্সিমকো লিমিটেড দেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদকদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। গাইবান্ধার তিস্তা পাওয়ার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা ২৮০ মেগাওয়াট পিক। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের করতোয়া পাওয়ার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা ৪৫ মেগাওয়াট পিক। সব মিলিয়ে এ দুই কেন্দ্রের মোট সক্ষমতা ৩২৫ মেগওয়াট পিক। অবশ্য এ কেন্দ্র দুটি থেকে সরকারের কাছে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে তিস্তা পাওয়ার ২০০ মেগাওয়াট ও করতোয়া পাওয়ার ৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। মূলত ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৩২৫ মেগাওয়াট পিক সক্ষমতা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি তিস্তা পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে আসবে।
সোলার মডিউল সরবরাহের জন্য লঞ্জি সোলার টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। ইপিসি মেইন প্লান্ট সরবরাহের জন্য রেজ পাওয়ার ইনফ্রা প্রাইভেট লিমিটেড ও জেটওয়ার্ক ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস প্রাইভেট লিমিটেডের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। সুইচইয়ার্ড ও সাবস্টেশন নির্মাণের জন্য সরবরাহকারী হিসেবে এবিবির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। আর ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণের জন্য চুক্তি করা হয়েছে কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর গ্রিড সাবস্টেশন পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
তিস্তা সোলার লিমিটেড গাইবান্ধায় ২০০ মেগাওয়াট ও করতোয়া সোলার লিমিটেড পঞ্চগড়ে ৩০ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্দেশ্যে এরই মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ) করেছে। তিস্তা সোলার ও করতোয়া সোলারের ৮০ শতাংশের মালিকানা রয়েছে বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের (বেক্সপাওয়ার) কাছে। বেক্স পাওয়ারের ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের হাতে। সোলার কোম্পানি দুটির বাকি ২০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে চীনা কারিগরি অংশীদারের কাছে।
সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির নির্মাণ ব্যয় মেটাতে ৩ হাজার কোটি টাকার বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আত ইসতিসনা নামে একটি শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ইস্যুর প্রক্রিয়া চলছে। বন্ডের মাধ্যমে মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বেক্সিমকো লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডের নির্মাণকাজে ব্যয় করা হবে। এছাড়া বেক্সিমকোর বস্ত্র খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা এবং পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতেও এ অর্থ ব্যবহার করা হবে। এরই মধ্যে সুকুকের পাবলিক অফারের জন্য নির্ধারিত ৭৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৪২২ কোটি টাকার সাবস্ক্রিপশন সম্পন্ন হয়েছে। পাবলিক সাবস্ক্রিপশন শেষে বর্তমানে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ২ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) বেক্সিমকো লিমিটেডের আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৭২ দশমিক ৫০ শতাংশ। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৭৬ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ৫৮ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ছয় গুণ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৬ পয়সা।
১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো লিমিটেডের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৮৭৬ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৫ হাজার ২৪৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪১ দশমিক ৮৯ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৪০ টাকা ৮০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৮ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১৫১ টাকা ২০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।