পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একে এম ফজলুর রহমান মুনশী : যুহায়ের বিন কাইয়্যাস ছিলেন ইমাম হুসাইন (রা:)-এর একজন ভক্ত ও অনুরক্ত, প্রখ্যাত বীর ও সুনিপুণ যোদ্ধা। আহলে বাইতের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ দেহের শেষ রক্ত বিন্দুটুকু দিতেও প্রস্তুত ছিলেন। আর এরই জন্য তিনি স্বেচ্ছায় ইমাম হুসাইন (রা:)-এর সঙ্গী হয়েছিলেন। তিনি এগিয়ে এসে আরজ করলেন, ‘হযরত, আমার মনে হয় বর্তমানে আপনার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করে মূল অবস্থার চিত্রটি আপনার সামনে পেশ করা নেহায়েত দরকার। কেননা ‘তোরমাদের’ পরামর্শ ও সাহায্যের কথা আপনি প্রত্যাখ্যান করেছেন সত্য, কিন্তু আপনার মনে রাখা দরকার যে, আমরা শত্রুপক্ষের পাতা জালে ক্রমশঃ আটকা পড়ে যাচ্ছি এবং একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যে পথটুকু আমরা পেছনে ফেলে এসেছি, সে পথে আমরা কি কখনো ফিরে যেতে পারবো? সুদূর মক্কা হতে ‘মিনাওয়া’ পর্যন্ত আমরা যেদিকে চলেছি, তা কি আমাদের সংকটকে দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে না? প্রতিদিন আমরা নতুন বিপদের সম্মুখীন হচ্ছি। এমতাবস্থায় আমাদের এখনি যুদ্ধ আরম্ভ করা উচিত। কেননা, শত্রুপক্ষ এখনো বহু দুর্বল। কিন্তু যদি তাদের শক্তি বৃদ্ধি হয়ে যায়, তাহলে আর পেরে উঠা যাবে না। তাই আপনি যুদ্ধের নির্দেশ দিন। এই নরাধম একাই শত্রুকুল নির্মূল করার জন্য যথেষ্ট। ইমাম হুসাইন (রা:) বললেন, ‘বীর যুহায়ের! তোমার যুক্তি খুবই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু যুদ্ধ আমাদের তরফ হতে প্রথমে শুরু হোক, তা আমি চাই না।’ একথা শুনে যুহায়ের বললেন, ‘হযরত! যুদ্ধ আমাদের শুরু করতে হবে না। বরং তারাই যুদ্ধ শুরু করতে বাধ্য করবে। আপনি ফোরাত নদীর তীরবর্তী কোন আবাসের দিকে এগিয়ে চলুন। তাহলে তারা অবশ্যই বাধা দেবে। তখন বাধা অতিক্রম করার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করবো। এতে উভয়দিকই রক্ষা হবে। একেতো শত্রু নিপাত হবে, দ্বিতীয়ত যুদ্ধের সূচনা হবে তাদের দ্বারাই।’ ইমাম হুসাইন (রা:) বললেন, ‘ভাই যুহায়ের! যে আবাসের দিকে তুমি যেতে বলেছো, তার নাম কী?’ সাথী সঙ্গীদের মধ্যে একজন বললেন, এর নাম ‘আঁকড়’। আঁকড় শব্দের অর্থ ধ্বংস বিরান ও কণ্টকাকীর্ণ। শুনে ইমাম হুসাইন (রা:) বললেন, ‘আল্লাহ পাক আমাদের পানাহ দান করুন। আমি এই ‘আঁকড়’ থেকে নিস্তার চাই।’ যুহায়ের নীরব হয়ে গেলেন। বেশি কিছু বলার সাহস আর তার হলো না। এরপর ইমাম হুসাইন (রা:)-এর কাফেলা ফোরাত নদীর নিকটস্থ কারবালা প্রান্তরে শত্রু পরিবেষ্টিত অবস্থায় এসে উপস্থিত হলো। কারবালা! কারবালা! ফোরাত কূলের আজন্ম সহচর কারবালা! যা অনুশোচনা এবং ‘কারব’ অর্থাৎ বেদনা, অনুতাপ ও অনুশোচনা এবং ‘বালা’ অর্থাৎ মসিবত, দুঃখ, বিয়োগ-বেদনা সমাহার হয়ে এতকাল যাবত আপন রূপ সুপ্ত রেখেছিল, আজ সে রুদ্ররূপ ধারণ করে আত্মপ্রকাশে তৎপর হয়ে উঠলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।