পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া বৈদেশিক অনুদান সম্পর্কিত আইনের ধারা সংশোধনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এরা কাউকে ছাড়বে না। গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের (বিএনপি) মারছে, ধরছে, জেলে নিচ্ছে। এখন এনজিও যারা কিছুদিন আগেও বিভিন্ন রকম কথা বলেছে- আইনের শাসনের কথা, সৎ মানুষ খোঁজা, সৎ নেতৃত্ব খোঁজা, যোগ্য নেতৃত্ব খোঁজা, এখন তাদের ওপরেও এরা (আওয়ামী লীগ সরকার) চড়াও হয়েছে যে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলতে পারবা না। সুতরাং জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি না করলে, সবাই রুখে দাঁড়াতে না পারলে কেউই রেহাই পাবে না।
গত বুধবার সংসদে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন-২০১৬ পাস হয়েছে। এই আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক ও অশ্লীল মন্তব্য করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই কারণে এনজিও ব্যুরো সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।
গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল, বাংলাদেশ ও আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ ১৮টি স্বেচ্ছাসেবী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ সংসদে পাস হওয়া আইন সংশোধনে বাক-স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার খর্বের শামিল বলে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শহীদ নাজিরউদ্দিন জেহাদের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৯০ সালের এই দিনে রাজধানীতে দৈনিক বাংলা মোড়ের কাছে পুলিশের গুলিতে জেহাদ নিহত হন।
সকালে দৈনিক বাংলার মোড়ে ডাকসুর ভিপি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ জেহাদ স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও সরকারের অপশাসনের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাসে বহু নিদর্শন আছে, নিজেদের ব্যর্থতার কারণে একটা জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, মানচিত্র থেকে সরে গেছে। আজকে কিন্তু আমাদের এই অবস্থা তৈরি হয়েছে, আমরা যদি নিজেরাই সংগঠিত হতে না পারি, আমাদের যদি নিজেদের সমস্যাগুলো বুঝতে না পারি, কী করতে হবে, তা যদি বুঝতে না পারি তাহলে মানচিত্র থেকে সরে যাওয়া আমাদের জন্য কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হবে না। এই বিষয়গুলো আমাদের মাথার ভেতরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে এক হাজারের উপরে আমাদের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছে। আমাদের কাছে তালিকা আছে। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, পারভেজসহ ৫শ’ নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়ে গেছে। দেশটা একটা হত্যাপুরীতে পরিণত হয়েছে। এখানে মানুষকে মেরে ফেললে জবাবদিহিতা করতে হয় না। অবলীলায় হত্যা করে কোনো জবাবদিহিতা নেই। এখানে তুলে নিয়ে গিয়ে আমার ছাত্র নেতাকে থানার মধ্যে বসিয়ে পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে, কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না। বাবা-মাকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের বিজ্জতি করা হচ্ছে, কোনো জবাবহদিহি নেই। অপরাধ একটাই ও তোমার ছেলে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র বিভেদ ভুলে গিয়ে সঠিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগে নিজেদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে এরপর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তাহলে আমরা এই দানবকে পরাজিত করতে পারবো।
নেতাকর্মীদের সারাদেশে জনমত সৃষ্টির জন্য কাজ করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের একমাত্র শক্তি জনগণ, সেই শক্তিকে নিয়ে এগুতে হবে। অন্য কেউ কোনো কিছু করে দেবে না। আমাদের সকলকে ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের মধ্যে বোধ তৈরি করতে হবে, মানুষের মধ্যে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে- এটাই হবে আমাদের কাজ। শুধুমাত্র কমিটি করে দিলাম, কমিটি হয়ে গেলো, কমিটি নিয়ে বসে থাকলাম, তারপরে সব ভুলে গেলাম- এটা করলে কিন্তু চলবে না।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মতো দলের নতুন প্রজন্মকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, এদেশটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একার দেশ নয়, এদেশটা শেখ হাসিনা একার দেশ নয়, এদেশটা হোসেইন মো. এরশাদের একার দেশ নয়, এটা আমাদের ১৬ কোটি মানুষের দেশ। আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি। এই দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। কেউ তার ইচ্ছা মতো এদেশকে ধ্বংস করবে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে, মানুষের অধিকারগুলোকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে, আমাদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে যাবে। আর আমরা বসে বসে সেটা দেখবো, সেটা হতে পারে না। জেল-জুলুম কখনো কোনোদিন বাংলাদেশকে আটকিয়ে রাখতে পারেনি। আসুন সব কিছু ভুলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ন্যায়ের সংগ্রাম, সত্যের সংগ্রামের জন্য লড়াই করি।
সংগঠনের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্র নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিমউদ্দিন আলম, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খোন্দকার লুৎফর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, আসাদুর রহমান খান, এবিএম মোশাররফ হোসেন, ছাত্র দলের ইশতিয়াক আহমেদ নাসিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।